আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান ছয় মানবাধিকার সংস্থার

আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার আহবান জানিয়েছে ছয়টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। তারা জাতিসংঘের মানবাধিকার প্রতিবেদনের সুপারিশের কথা উল্লেখ করে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি এই আহবান জানায়।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো হলো—সিভিকাস, কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্টস (সিপিজে), ফর্টিফাই রাইটস, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডাব্লিউ), রবার্ট এফ. কেনেডি হিউম্যান রাইটস এবং টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
গত রবিবার অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের উদ্দেশে লেখা এক খোলা চিঠিতে সংস্থাগুলো এই আহবান জানায়। চিঠিটি প্রকাশ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচের ওয়েবসাইট।
চিঠিতে জুলাই বিপ্লবের পর মৌলিক স্বাধীনতা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, আইন সংস্কার এবং গুমসহ মানবাধিকার লঙ্ঘনের তদন্তের উদ্যোগের প্রশংসা করা হয়েছে। এতে মানবাধিকার বিষয়ে ১২টি সুপারিশ দেওয়া হয়েছে।
সংস্থাগুলো বলেছে, জুলাই অভ্যুত্থানকালে ও বিগত ১৫ বছরে গুম, বিচারবহির্ভূত হত্যা ও নির্যাতনের ঘটনায় জড়িতদের বিচারের আওতায় আনতে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালকে স্বাধীনভাবে কাজের সুযোগ দিতে হবে।
এ ছাড়া মৃত্যুদণ্ডের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়া, র্যাব বিলুপ্ত করা, গুমকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা এবং জাতীয় মানবাধিকার কমিশনকে আরও স্বাধীন করার আহবান জানানো হয়েছে।
আইনি সংস্কারের অংশ হিসেবে ২০২৫ সালের সাইবার সিকিউরিটি অধ্যাদেশ, সন্ত্রাসবিরোধী আইন, বিশেষ ক্ষমতা আইন ও মানহানির ধারা আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী সংশোধনের তাগিদ দেওয়া হয়েছে।
সংস্থাগুলো সংবাদপত্রের স্বাধীনতা নিশ্চিত করা, সাংবাদিকদের নির্বিচারে গ্রেপ্তার বন্ধ করা এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা বাতিলের আহবান জানিয়েছে।
তারা শান্তিপূর্ণ রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারেরও দাবি জানিয়েছে।
চিঠিতে বলা হয়, জাতিসংঘের প্রতিবেদনে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ না করার সুপারিশ দেওয়া হয়েছিল। রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা গণতন্ত্রে প্রত্যাবর্তনকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে এবং ভোটারদের অধিকার সীমিত করবে।
উল্লেখ্য, গত ১০ মে অন্তর্বর্তী উপদেষ্টা পরিষদ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম সন্ত্রাসবিরোধী আইনে নিষিদ্ধ করে। ১২ মে এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি হয়।
চিঠিতে আরও বলা হয়েছে, এনজিও বিষয়ক ব্যুরো সংস্কার, বিদেশি তহবিলের নিয়ন্ত্রণ শিথিল, রোহিঙ্গাদের জোরপূর্বক প্রত্যাবাসন বন্ধ এবং তাদের চলাচল ও শিক্ষার সুযোগ বাড়াতে হবে।
এ ছাড়া রোহিঙ্গা নিপীড়ন ইস্যুতে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালতকে (আইসিসি) পূর্ণ সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় ব্যক্তিদের হস্তান্তরের আহবান জানিয়েছে সংস্থা ছয়টি।
মন্তব্য করুন