logo
  • বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

এক মাস আগে জোবায়েদ হত্যার পরিকল্পনা হয়; বাঁচার আকুতি জানালেও সাহায্য করেননি বর্ষা: পুলিশ

অনলাইন ডেস্ক
  ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১৮:২৫
ছবি : জাগতিক

পুলিশের তথ্যমতে, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র মো. জোবায়েদ হোসেনকে হত্যা করার পরিকল্পনা করেন মাহির রহমান (১৯) ও বার্জিস শাবনাম বর্ষা (১৮)। ঘটনার দিন গুরুতর আহত অবস্থায় জোবায়েদ বর্ষার বাসার দরজায় কড়া নাড়লেও তিনি দরজা খোলেননি, ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।

ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে মাহির, বর্ষা ও ফারদীন আহম্মেদ আয়লান (২০)-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান ঢাকা মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার (ক্রাইম অ্যান্ড অপারেশনস) এস. এন. মো. নজরুল ইসলাম।

তিনি বলেন, মাহির ও বর্ষার মধ্যে প্রায় দেড় বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু টিউশন পড়াতে গিয়ে বর্ষার সঙ্গে জোবায়েদের ঘনিষ্ঠতা তৈরি হয়, যা মাহিরের পক্ষে মেনে নেওয়া সম্ভব হয়নি। এ থেকেই শুরু হয় ত্রিভুজ প্রেমের দ্বন্দ্ব।

নজরুল ইসলাম আরও জানান, গত সেপ্টেম্বর মাসে বিষয়টি জানার পর মাহিরকে বর্ষা বলেন—‘জোবায়েদকে সরাতে না পারলে আমি তোমার হতে পারব না।’ এরপর ২৩ সেপ্টেম্বর তারা হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী, হত্যার দিন বিকেল ৪টার দিকে জোবায়েদ টিউশনে আসবেন—এ তথ্য মাহিরকে দেন বর্ষা। পরে মাহির তার বন্ধু আয়লানকে নিয়ে বর্ষার বাসার নিচে অবস্থান নেন। জোবায়েদ পৌঁছালে দুজনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে মাহির তাকে বর্ষাকে ছেড়ে দিতে বলেন, কিন্তু জোবায়েদ রাজি না হলে মাহির ছুরি দিয়ে তার গলায় আঘাত করেন। এতে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে জোবায়েদের মৃত্যু হয়।

লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি জানান, আঘাতপ্রাপ্ত জোবায়েদ সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠে একাধিক দরজায় কড়া নাড়েন, কিন্তু কেউ দরজা খোলেননি। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় তলায় বর্ষার কাছেও সাহায্য চান, কিন্তু তিনিও অস্বীকৃতি জানান।

মাহিরের মা স্বেচ্ছায় ছেলেকে থানায় দিয়েছেন কি না—এমন প্রশ্নে এস. এন. নজরুল ইসলাম বলেন, “পুলিশ কৌশলগতভাবে পরিবারের ওপর চাপ দিয়েছিল। তারা স্বেচ্ছায় নয়, পুলিশের কৌশলের অংশ হিসেবেই মাহিরকে হস্তান্তর করেছেন।”

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ডিএমপির গণমাধ্যম ও জনসংযোগ বিভাগের মুহাম্মদ তালেবুর রহমান, লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মল্লিক আহসান উদ্দিন সামি এবং অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. আমিনুল কবীর তরফদার।

উল্লেখ্য, গত ১৯ অক্টোবর বিকেলে রাজধানীর আরমানিটোলায় টিউশনিতে গিয়ে খুন হন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী ও জবি ছাত্রদল আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জোবায়েদ হোসেন। আরমানিটোলার একটি বাড়ির সিঁড়ি থেকে রক্তাক্ত অবস্থায় তার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় নিহতের বড় ভাই এনায়েত হোসেন সৈকত বংশাল থানায় তিনজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ হত্যার ঘটনায় তার ছাত্রী আটক
টিউশনি করাতে গিয়ে খুন হলেন জবি ছাত্রদল নেতা জুবায়েদ
হলগুলোতে এখন অপ্রকাশ্যে শিবিরের একটা কন্ট্রোল আছে: ইবিতে ছাত্রদল সহ-সভাপতি
রাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে শিবির সমর্থিত জাহিদের জয়, জিএস আম্মার
12