logo
  • বুধবার, ০২ জুলাই ২০২৫, ১৮ আষাঢ় ১৪৩২

শিরোনাম

  •     ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত কারও কষ্টের জন্য বিনা শর্তে ক্ষমাপ্রার্থী” — টকশোতে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
  •     আমীর খসরু নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি
  •     ছলছুতোয় রাজধানীর সড়ক অবরোধ করলেই অ্যাকশন
  •     ‘যুদ্ধের ইতি আমরাই টানব’ - ট্রাম্পকে কড়া হুশিয়ারি ইরানের
  •     ইসরায়েলকে হামলা বন্ধ করতে বলবেন না ট্রাম্প
পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন ব্যবস্থা কতটা উপযোগী, ভাবার অনুরোধ তারেক রহমানের
আন্দোলনের একপর্যায়ে ‘ডু অর ডাই’ পরিস্থিতিতে চলে যাই
“সকালে (১৭ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে দেখি, হঠাৎ করেই বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। অনেক হলের শিক্ষার্থী হল ছাড়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে—কেউ কেউ ইতোমধ্যে হল ছেড়েও গেছে।” এভাবেই ১৭ জুলাইয়ের উত্তপ্ত পরিস্থিতির স্মৃতিচারণ করেন একজন শিক্ষার্থী। তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের অনেকে তখন ভীতসন্ত্রস্ত অবস্থায় ছিলেন। পরিস্থিতি বুঝে আন্দোলনকারীরা হলগুলোতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের থাকতে অনুরোধ করেন এবং সাহস জোগানোর চেষ্টা করেন। তিনি বলেন, “১৭ তারিখের কর্মসূচির জন্য আমাদের প্রস্তুতিতে কিছু ঘাটতি ছিল। এর একটি কারণ ছিল ১৬ জুলাই রাজু ভাস্কর্যে যাওয়া না যাওয়া নিয়ে তৈরি হওয়া বিভ্রান্তি। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল ১৭ জুলাই আশুরা—ফলে অনেকেই ব্যক্তিগত কারণে ব্যস্ত ছিলেন বা দ্বিধাগ্রস্ত ছিলেন। সব মিলিয়ে সেদিন আমরা একটু এলোমেলো হয়ে পড়েছিলাম।” এই প্রস্তুতির ঘাটতির সুযোগ নেয় প্রশাসন—এমনটাই অভিযোগ করেন তিনি। “বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও সরকার আমাদের প্রস্তুতির দুর্বলতা কাজে লাগায়। তারা ক্যাম্পাসজুড়ে মোতায়েন করে পুলিশ, র‌্যাব, বিজিবি—প্রায় সব ধরনের বাহিনী। এমন কোনো বাহিনী ছিল না যাদের সেদিন মোতায়েন করা হয়নি,” বলেন তিনি। এই ঘটনার পরদিন থেকে পরিস্থিতি আরও উত্তপ্ত হয়ে ওঠে, যা পরে এক ভয়াবহ দমন-প্রতিরোধের অধ্যায়ে রূপ নেয় বলে দাবি শিক্ষার্থীদের।
শহীদ আবু সাঈদের মায়ের দোয়া নিয়ে এনসিপির জুলাই পদযাত্রা শুরু
আওয়ামী লীগ জাতির সঙ্গে আবারও মশকরা করেছে
স্বৈরাচার পতনে যাতে ১৬ বছর অপেক্ষা করতে না হয় সেই কাজ করছি
‘দুঃখিত, এবার আর তা হবে না’
মাসব্যাপী গণসংযোগ ও ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাও কর্মসূচি জাগপার
জুলাই শহীদ এবং আহতদের স্বরণে দোয়া মাহফিল, দেশব্যাপী জুলাই মাসে গণসংযোগ, ৫ আগস্ট বাংলাদেশের নাজাত দিবসে শুকরান নামাজ এবং ৬ আগস্ট ভারতীয় দূতাবাস ঘেরাওয়ের কর্মসূচির ডাক দিয়েছে জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা)।  আজ সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে জাগপা আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কর্মসূচি ঘোষণা করে জাগপা সহ-সভাপতি ও দলীয় মুখপাত্র রাশেদ প্রধান।  রাশেদ প্রধান বলেন, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনাকে আশ্রয় প্রদান, সীমান্তে হত্যা, ভূমি দখল, অবৈধ পুশ-ইন, পানির ন্যায্য হিস্যা না দেওয়া, দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় ও নির্বাচনে হস্তক্ষেপসহ সব বিষয়ে ভারতীয় আগ্রাসন রুখে দিতে হবে। জুলাই, পিলখানা, শাপলা, মোদী বিরোধী আন্দোলন এবং লগি-বৈঠা গণহত্যার দায়ে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার করতে হবে। গুম, খুন, হামলা, মামলা, লুটেরা, অর্থপাচারকারী ও অপরাজনীতির অশুভ শক্তি সন্ত্রাসী সংগঠন আওয়ামী লীগ-এর বিচার করতে হবে। জাগপা মুখপাত্র বলেন, আমরা নির্বাচন এবং সংস্কার চাই কিন্তু নির্বাচন এবং সংস্কারকে সামনে রেখে ভারতীয় আধিপত্যবাদ, গণহত্যাকারী শেখ হাসিনা ও তার দোসরদের বিচার, অপরাজনীতির অশুভ শক্তি আওয়ামী লীগের বিচারের কথা ভুলে গেলে চলবে না।  সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন জাগপা সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ইকবাল হোসেন প্রধান, প্রেসিডিয়াম সদস্য আসাদুর রহমান খান, সৈয়দ শফিকুল ইসলাম, নিজামুদ্দিন অমিত, ভিপি মুজিবুর রহমান, মো: হাসমত উল্লাহ, যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মহিদুর রহমান বাবলা, আরিফ হোসেন ফিরোজ, সাংঠনিক সম্পাদক মো: হেলাল উদ্দিন, প্রকাশনা বিষয়ক সম্পাদক জিয়াউল আনোয়ার, ঢাকা মহানগর আহ্বায়ক শ্যামল চন্দ্র সরকার, সদস্য সচিব আশরাফুল ইসলাম হাসু, শ্রমিক জাগপা সভাপতি আসাদুজ্জামান বাবুল, সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন, যুব জাগপা সভাপতি নজরুল ইসলাম বাবলু, সাংঠনিক সম্পাদক ওলিউল আনোয়ার, জাগপা ছাত্রলীগ সভাপতি আব্দুর রহমান ফারুকী, দফতর সম্পাদক আরিয়ান শরীফ প্রমুখ।
নতুন বাংলাদেশ দিবস’ বাতিল,
আট আগস্ট ঘোষিত ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ বাতিল করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। রোববার (২৯ জুন) উপদেষ্টা পরিষদের এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের প্রেসসচিব শফিকুল আলম তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে নিশ্চিত করেছেন। শফিকুল আলম জানান, উপদেষ্টা পরিষদ বৈঠকে ৮ আগস্টের পরিবর্তে ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ দিবস’ এবং ৫ আগস্টকে ‘গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এর আগে, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মাধ্যমে সরকার পতনের পর অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের দিন ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা করেছিল সরকার। ওই সময় একটি সরকারি পরিপত্রে দিনটিকে ‘খ’ শ্রেণিভুক্ত দিবস হিসেবে চিহ্নিত করে সকল মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাকে যথাযথ মর্যাদায় পালনের অনুরোধ জানানো হয়। তবে সিদ্ধান্ত কার্যকরের কয়েকদিনের মধ্যেই বিতর্ক ও মতবিরোধ তৈরি হওয়ায় সরকার দিবসটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। সরকারের নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, ১৬ জুলাই শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল, আলোচনাসভা এবং ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থান দিবসে দেশের বিভিন্নস্থানে কর্মসূচি পালন করা হবে। এসব দিবসের মধ্য দিয়ে নতুন বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিবর্তন ও মূল্যবোধকে জনগণের মাঝে প্রতিষ্ঠা করার লক্ষ্য নিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার।
মাসুদ কামাল / আগামী নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হবে আওয়ামী লীগ
সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক মাসুদ কামাল বলেছেন, আগামী জাতীয় নির্বাচনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হবে আওয়ামী লীগ—even যদি দলটি নির্বাচন করতে না পারে বা নিষিদ্ধই থাকে। তিনি মনে করেন, আওয়ামী লীগকে নিষ্ক্রিয় করার রাজনৈতিক উদ্যোগই প্রমাণ করে যে দলটি এখনো রাজনীতির কেন্দ্রে অবস্থান করছে। রবিবার (২৯ জুন) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক আলোচনায় মাসুদ কামাল বলেন, “অনেকে বলবেন, আওয়ামী লীগ তো নেই, তারা তো নির্বাচন করতে পারবে না। কিন্তু এখন পর্যন্ত যা দেখছি, যদি আওয়ামী লীগকে মিছিল-মিটিং এমনকি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড থেকেও নিষিদ্ধ করা হয়, তাহলেও তারা রাজনীতির মূল আলোচনার বিষয় হয়ে থাকছে। সেটাই হলো সবচেয়ে মজার কথা।” তিনি আরও বলেন, “এই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার—যদি তাকে আইন অনুযায়ী ‘নিরপেক্ষ’ বলতে হয়, তাহলে বলতে হয়—এই সরকার যেভাবে আওয়ামী লীগকে দৃশ্যপট থেকে সরিয়ে দিতে চাইছে, তা নজিরবিহীন। তারা যা যা করা দরকার সবই করছে।” তবে তিনি এটাও স্বীকার করেন যে, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে গেলে কত আসন পেত—তা এখন বলা কঠিন। “হয়তো তারা তীব্র জনঘৃণার মুখে পড়তে পারতো,” মন্তব্য করেন মাসুদ কামাল। “তবুও, সে দলটিই এখন দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে।” মাসুদ কামালের বক্তব্য থেকে স্পষ্ট, বর্তমানে বাংলাদেশে রাজনৈতিক বাস্তবতা যেভাবে বদলাচ্ছে, সেখানে নিষিদ্ধ বা নিষ্ক্রিয় কোনো দলও কেন্দ্রীয় রাজনৈতিক চরিত্র হয়ে উঠতে পারে—এবং সেটা যদি হয় ক্ষমতাসীন দলের দীর্ঘদিনের প্রতিপক্ষ, তবে তা নির্বাচনের ভবিষ্যৎ গতি নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবে।
নাহিদ ইসলাম / সরকার ব্যর্থ, জুলাই ঘোষণাপত্র দেবে এনসিপি
সরকার প্রতিশ্রুত ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ দিতে ব্যর্থ হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম। তিনি জানিয়েছেন, এখন সরকার না দিলেও আগামী ৩ আগস্ট এনসিপি নিজস্বভাবে ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ ও রাজনৈতিক ইশতেহার প্রকাশ করবে। রবিবার (২৯ জুন) সকালে রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কার্যালয়ে জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন তিনি। নাহিদ ইসলাম বলেন, “সরকার জুলাই ঘোষণাপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো। কিন্তু প্রতিশ্রুতির সময়সীমা শেষ হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো দৃশ্যমান উদ্যোগ নেই। সেই ব্যর্থতার কারণেই এনসিপি ৩ আগস্ট শহীদ মিনার থেকে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে নিজস্ব ঘোষণাপত্র পাঠ করবে।” এসময় তিনি জানান, জুলাই অভ্যুত্থানের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ১ থেকে ৩০ জুলাই পর্যন্ত সারা দেশে ‘দেশ গড়তে জুলাই পদযাত্রা’ কর্মসূচি পালন করবে এনসিপি। পরে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্টে নাহিদ ইসলাম আরও জানান, ১৬ জুলাই ‘বৈষম্যবিরোধী শহীদ দিবস’ উপলক্ষে দোয়া মাহফিল ও স্মরণসভা করা হবে। ৩ আগস্ট শহীদ মিনারে ছাত্র-জনতার পক্ষ থেকে “জুলাই ঘোষণাপত্র” ও রাজনৈতিক ইশতেহার পাঠ করা হবে। ৫ আগস্ট পালিত হবে ‘ছাত্র-জনতার মুক্তি দিবস’। তিনি বলেন, “বিচার, সংস্কার ও নতুন সংবিধানের দাবিতে এনসিপি এবার জনতার দুয়ারে যাবে। বাংলাদেশ পুনর্গঠনের আকাঙ্ক্ষায় আমরা শহর থেকে গ্রাম, ৬৪ জেলা ঘুরে শেষপর্যন্ত শহীদ মিনারে পৌঁছাবো। সেখানে শহীদদের কবরের কাছেই ঘোষণা দেওয়া হবে আগামী দিনের রূপরেখা।” নাহিদ ইসলামের এই বক্তব্য ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পরিষ্কার যে, এনসিপি আগামী রাজনীতিকে সাংগঠনিকভাবে গণমুখী ও সংস্কারভিত্তিক ধারায় এগিয়ে নিতে চায়। সরকার যে প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয়েছে, তা নিয়েই তারা গড়ে তুলছে নতুন রাজনৈতিক বার্তা।
গোলাম মাওলা রনি / ‘বর্তমানে ডাস্টবিন শব্দটি রাজনীতির সঙ্গে ম্যাচ করেছে’
সাবেক সংসদ সদস্য, রাজনীতিবিদ ও কলাম লেখক গোলাম মাওলা রনি বলেছেন, বর্তমান সময়ের রাজনীতি এক নতুন মানসিক ভাষায় রূপ নিচ্ছে, যার প্রতীকি রূপ হয়ে উঠেছে শব্দ যেমন—‘ডাস্টবিন’, ‘সান্ডা’, ‘নিমডা’। তিনি মনে করেন, এসব শব্দের মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণের ওপরই আগামী দিনের রাজনীতির গতি ও প্রকৃতি নির্ভর করবে। সম্প্রতি নিজের ইউটিউব চ্যানেলে প্রকাশিত এক ভিডিওতে রনি বলেন, “বর্তমানে ‘ডাস্টবিন’ শব্দটি রাজনীতির সঙ্গে ভীষণভাবে মিলে গেছে। কোনো রাজনীতিবিদকে অপছন্দ হলে তার নামের সঙ্গে ‘ডাস্টবিন’ যুক্ত করে নানা ব্যঙ্গাত্মক স্লোগান তোলা হচ্ছে। শুধু দেশের ভিতরেই নয়, প্রবাসী বাঙালিরাও এই ভাষা ব্যবহার করছেন।” তিনি আরও বলেন, "ডাস্টবিনের পরে এখন আরেকটি প্রচলিত শব্দ হচ্ছে 'সান্ডা'। মরু অঞ্চলে বসবাসকারী, দেখতে অরুচিকর এই প্রাণীটিকে অনেকে ব্যঙ্গ করে ব্যবহার করছেন। কেউ অপছন্দ হলে বলা হচ্ছে—সে একটা সান্ডা। যেন মানুষটিকে এই প্রাণীর চেয়েও নিচে নামিয়ে ফেলা হচ্ছে।" রনি আরও তুলে ধরেন ‘নিমডা’ শব্দটির রাজনৈতিক ব্যবহার। বাহুবলী সিনেমার একটি ডায়লগ থেকে নেওয়া এই শব্দটির অর্থ—‘তোমাকে শেষ করে দেবো’। বর্তমানে এটি রাজনৈতিক ব্যঙ্গের নতুন অস্ত্র হয়ে উঠেছে। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, “ঢাকার দক্ষিণ সিটির মেয়র প্রার্থী ইশরাক হোসেন যখন বলেন, ‘সরকার আমাকে শপথ না পড়ালে আমি নিজেই পড়বো’, তখন একদল যুবক তাকে লক্ষ্য করে ‘নিমডা’ শব্দটি ছুঁড়ে দিচ্ছে। এটা এখন এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, ইশরাককে দেখলেই প্রতিপক্ষের কেউ না কেউ ‘নিমডা’ বলে উঠছে।” তিনি আরও জানান, ‘টেলমি’, ‘মইনুস সুকুর’—এই ধরনের কথাও এখন রাজনীতিতে প্রবেশ করছে, যেগুলোর ভিত্তি মূলত সামাজিক মিডিয়া সংস্কৃতি ও তরুণদের স্যাটায়ার প্রবণতা। রনি বলেন, “রাজনীতির ভাষা এখন আর কেবল বক্তৃতা-স্লোগানে সীমাবদ্ধ নেই। এটা একটা মানসিক খেলায় পরিণত হয়েছে। আগামী পাঁচ বা দশ বছর পর রাজনীতির কী রূপ হবে, তা এখনকার এই ‘ভাষা প্রবাহ’ বিশ্লেষণ করলেই অনুমান করা সম্ভব।” এই ব্যতিক্রমী বিশ্লেষণে রনি রাজনীতির প্রচলিত ধারা থেকে সরে এসে এক নতুন বাস্তবতার দিকে ইঙ্গিত করেছেন—যেখানে ভাষা, ব্যঙ্গ, স্যাটায়ার ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমই হয়ে উঠছে মূল হাতিয়ার।
ইসলামী আন্দোলনের ১৬ দফা দাবি
রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত মহাসমাবেশ থেকে ১৬ দফা দাবি উত্থাপন করেছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। শনিবার (২৮ জুন) দুপুরে দলের মুখপাত্র মাওলানা গাজী আতাউর রহমান মহাসমাবেশের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন। ঘোষণায় মহাসমাবেশকে ‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানের বর্ধিত অংশ’ এবং ‘আগামী বাংলাদেশের বিনির্মাণে গৌরবময় মাইলফলক’ হিসেবে উল্লেখ করা হয়। নেতারা বলেন, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব ও জনগণের মৌলিক অধিকার প্রতিষ্ঠায় এই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন সময়ের দাবি। ঘোষণাপত্রে উত্থাপিত ১৬ দফা দাবিসমূহ হলো ১. সংবিধানে আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাস রাষ্ট্র পরিচালনার মূল নীতিরূপে পুনঃস্থাপন। ২. সংসদের উভয় কক্ষে সংখ্যানুপাতিক পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন। ৩. জুলাই সনদের ঘোষণা ও শোষণমুক্ত রাষ্ট্র বিনির্মাণে জাতীয় ঐকমত্য। ৪. ভবিষ্যৎ স্বৈরাচার ও দলীয় কর্তৃত্ববাদ রোধে মৌলিক রাষ্ট্র সংস্কার। ৫. সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসনে ফ্যাসিবাদী প্রভাবমুক্ত লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করা। ৬. পতিত ফ্যাসিবাদের বিচার ও পালাতক অপরাধীদের ফিরিয়ে আনার কূটনৈতিক পদক্ষেপ। ৭. পাচার করা অর্থ উদ্ধার ও দৃশ্যমান উদ্যোগ গ্রহণ। ৮. সন্ত্রাস, চাঁদাবাজ ও খুনখারাবি রোধে প্রশাসনের সক্রিয় ভূমিকা। ৯. ভারতের সঙ্গে করা সব চুক্তি প্রকাশ ও দেশবিরোধী চুক্তির বাতিল। ১০. জাতীয় নির্বাচনের আগে সব পর্যায়ে স্থানীয় নির্বাচন ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিধান প্রণয়ন। ১১. দুর্নীতিবাজ, ঋণখেলাপি ও সন্ত্রাসীদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা। ১২. নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার আগে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করা। ১৩. ঘুষ-দুর্নীতি ও রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা বন্ধ এবং মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার। ১৪. ইসলাম ও দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ববিরোধী কর্মকাণ্ডে দ্রুত আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ। ১৫. জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলে দুর্নীতিবাজ ও চাঁদাবাজদের প্রতিহত করা। ১৬. রাষ্ট্রের সর্বস্তরে ইসলামের আলোকিত আদর্শ বাস্তবায়নের আহ্বান। নেতারা আরও বলেন, সরকার ও প্রশাসন যদি সময়মতো জনগণের দাবির প্রতি সাড়া না দেয়, তাহলে আন্দোলনের পরিসর আরও বাড়ানো হবে। ঘোষণাপত্রে ‘জুলাই সনদ’ বাস্তবায়নের জন্য জাতীয় ঐকমত্য গঠনের আহ্বান জানানো হয় এবং দেশের রাজনৈতিক কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তনের দাবিও জোরালোভাবে তোলা হয়। জাগতিক/জাহিদ
‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ পুনর্বিবেচনা করছে সরকার : আসিফ মাহমুদ
আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের দিন ৫ আগস্টকে ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’, ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ এবং ১৬ জুলাইকে ‘শহীদ আবু সাঈদ দিবস’ হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার সিদ্ধান্তকে ঘিরে রাজনৈতিক অঙ্গনে তৈরি হয়েছে বিতর্ক ও অসন্তোষ। এ বিষয়ে ব্যাপক আপত্তির পরিপ্রেক্ষিতে সরকার এখন দিবসগুলোর বিষয় পুনর্বিবেচনার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে জানিয়েছেন অন্তর্বর্তী সরকারের যুব ও ক্রীড়া এবং শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া। শুক্রবার (২৭ জুন) রাতে গণমাধ্যমকে দেওয়া এক প্রতিক্রিয়ায় তিনি বলেন, “নানান মহলের আপত্তির বিষয়টি সরকার গুরুত্ব দিয়ে দেখছে। দিবসসংক্রান্ত সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনার প্রক্রিয়ায় রয়েছে।” এনসিপির কড়া প্রতিক্রিয়া মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে গত বুধবার জারি করা পরিপত্রে ৫ আগস্ট, ৮ আগস্ট এবং ১৬ জুলাই—এই তিনটি দিনকে জাতীয় দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয় এবং সেগুলো প্রতি বছর যথাযথভাবে উদ্‌যাপনের জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে ৮ আগস্টকে ‘নতুন বাংলাদেশ দিবস’ হিসেবে চিহ্নিত করার সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)-র শীর্ষ নেতারা। এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আবদুল্লাহ ফেসবুকে লেখেন, > “নতুন বাংলাদেশের জন্ম হয়েছে ৫ আগস্ট, ৮ আগস্ট নয়। সাধারণ ছাত্র–জনতার এই অর্জনকে সরকারের কুক্ষিগত করার চেষ্টা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া হবে না।”   এনসিপির উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম লিখেছেন, > “৮ আগস্ট দ্বিতীয় স্বাধীনতা শুরু হয়নি, বরং ওই দিন থেকেই দ্বিতীয় স্বাধীনতা নষ্টের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে।” তার মতে, ৫ আগস্টকেই ‘জুলাই গণ-অভ্যুত্থান দিবস’ এবং ‘দ্বিতীয় স্বাধীনতা দিবস’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত।   এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন বলেন, > “নতুন বাংলাদেশ দিবস সেদিনই হবে, যেদিন ‘জুলাই ঘোষণাপত্র’ প্রকাশিত হবে এবং মৌলিক সংস্কারের ভিত্তিতে ‘জুলাই সনদ’ গৃহীত হবে।”   সরকারি সূত্রে জানা গেছে, বর্তমানে উদ্‌যাপনযোগ্য দিবসগুলো পুনর্মূল্যায়ন করে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সংশ্লিষ্ট মহল থেকে বলা হচ্ছে, দিবসের স্বীকৃতির ক্ষেত্রে ইতিহাস, আন্দোলনের তাৎপর্য ও সর্বসম্মত জাতীয় ঐকমতের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। বিশ্লেষকদের মতে, এনসিপির মতো একটি প্রভাবশালী রাজনৈতিক প্ল্যাটফর্মের এমন অবস্থান দিবস নির্ধারণের রাজনৈতিক প্রক্রিয়া ও গ্রহণযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। আর সরকারের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীবের ‘পুনর্বিবেচনার’ বক্তব্য সেই বিতর্কেরই একটি গুরুত্বপূর্ন প্রতিক্রিয়া। সরকার ঘোষিত নতুন তিনটি দিবসের মধ্যে ৮ আগস্টকে ঘিরে সবচেয়ে বেশি আপত্তি উঠেছে। এনসিপি’র দাবি—নতুন বাংলাদেশের প্রকৃত সূচনা ৫ আগস্টেই। আপত্তি ও জনমতকে গুরুত্ব দিয়ে সরকার সিদ্ধান্তগুলো পুনর্বিবেচনা করছে বলে নিশ্চিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা। এখন দেখার বিষয়, ঘোষিত দিবসগুলো চূড়ান্তভাবে কীভাবে পুনর্গঠন বা সংশোধিত হয়।
2Error!: SQLSTATE[23000]: Integrity constraint violation: 1062 Duplicate entry '0' for key 'news_id'