logo
  • বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

চীনের আমন্ত্রণে আগামী বছর বেইজিং সফরে যাচ্ছেন ট্রাম্প

অনলাইন ডেস্ক
  ২১ অক্টোবর ২০২৫, ১১:৪৫
জাগতিক

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি আগামী বছরের শুরুর দিকে চীন সফর করবেন। বেইজিং সরকারের আমন্ত্রণে এই সফরের পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে তিনি নিশ্চিত করেছেন।

ট্রাম্প বলেন, “আমাকে চীনে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে, আমি আগামী বছরের শুরুতেই সেখানে যাব। তারিখ প্রায় নির্ধারিত।”

তিনি আরও জানান, দক্ষিণ কোরিয়ায় চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে দেখা করে চলতি মাসেই একটি “ন্যায্য” বাণিজ্য চুক্তি সম্পন্ন করার আশা করছেন। যদিও সম্প্রতি দুই দেশের মধ্যে শুল্ক ও বাণিজ্য নিয়ে নতুন করে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

শুধু গত সপ্তাহেই চীন তার বিরল মাটির খনিজ রপ্তানিতে নতুন সীমাবদ্ধতা আরোপ করে, আর ট্রাম্প হুমকি দেন চীনা পণ্যের ওপর ১০০ শতাংশ শুল্ক বসানোর। এর পরিপ্রেক্ষিতে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে এবং মার্কিন অর্থমন্ত্রী স্কট বেসেন্ট অভিযোগ করেন, “চীন বিশ্বের সরবরাহ চেইন ও শিল্পভিত্তির দিকে বন্দুক তাক করে রেখেছে।”

তবে সোমবার ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র ও চীনকে একসঙ্গে উন্নতি করতে হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চীন আবারও যুক্তরাষ্ট্রের সয়াবিন কিনবে—যা বাণিজ্যযুদ্ধের কারণে বড় ক্ষতির মুখে পড়েছিল।

ট্রাম্পের মন্তব্যের পর শিকাগো বোর্ড অব ট্রেডে সয়াবিনের দাম এক মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে ওঠে।

অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজের সঙ্গে সাক্ষাতে ট্রাম্প বলেন, তার প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে সম্পর্ক “খুব ভালো”। তিনি পেন্টাগনের সাম্প্রতিক মূল্যায়নকে অস্বীকার করেন, সেখানে বলা হয়েছিল চীন ২০২৭ সালের মধ্যে তাইওয়ান দখলের পরিকল্পনা করছে।

ট্রাম্প বলেন, “চীন তা করতে চায় না। আমি মনে করি সব ঠিক থাকবে।” তবে তিনি স্বীকার করেন, তাইওয়ান প্রেসিডেন্ট শি-এর “চোখের মণি” হলেও যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক শক্তি তাদের নিরুৎসাহিত করবে।

“আমরা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী সামরিক শক্তি। কেউ সেটি নিয়ে খেলবে না,” বলেন ট্রাম্প।

তবে তিনি প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকার করেন যে, চীনের সঙ্গে চুক্তির অংশ হিসেবে তিনি কি তাইওয়ানের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন কমাবেন কিনা।

গত জুনে মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ সিঙ্গাপুরের শাংরি-লা সংলাপে চীনকে “অঞ্চলের জন্য হুমকি” হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন। জবাবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, “যুক্তরাষ্ট্র তাইওয়ান ইস্যুকে ব্যবহার করে চীনকে নিয়ন্ত্রণের স্বপ্ন দেখবে না। আগুন নিয়ে খেলা উচিত নয়।”

চীন দীর্ঘদিন ধরে স্ব-শাসিত তাইওয়ানকে নিজেদের ভূখণ্ড দাবি করে আসছে। ১৯৪৯ সালে গৃহযুদ্ধের পর দ্বীপটি মূল ভূখণ্ড থেকে আলাদা হয়ে যায়। বেইজিং তাইওয়ানকে শক্তি প্রয়োগের মাধ্যমেও নিজেদের নিয়ন্ত্রণে আনার কথা অস্বীকার করেনি।

চীনা সেনারা নিয়মিত তাইওয়ানের আকাশসীমা ও জলসীমার কাছে যুদ্ধবিমান ও যুদ্ধজাহাজ পাঠায় এবং সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বড় সামরিক মহড়াও পরিচালনা করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র, বিশ্বের বেশিরভাগ দেশের মতো, আনুষ্ঠানিকভাবে তাইওয়ানকে স্বীকৃতি না দিলেও দেশটির সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক সমর্থক ও অস্ত্র সরবরাহকারী। যুক্তরাষ্ট্রের আইনে তাইওয়ানকে আত্মরক্ষার জন্য প্রয়োজনীয় অস্ত্র সরবরাহের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র সরাসরি সামরিকভাবে তাইওয়ানকে রক্ষা করবে কি না, সে বিষয়ে সব সময় দ্ব্যর্থক অবস্থান রাখে।

ট্রাম্পের আগের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন একাধিকবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন, চীন যদি তাইওয়ানে আক্রমণ চালায়, যুক্তরাষ্ট্র সামরিকভাবে প্রতিক্রিয়া জানাবে।

এদিকে চলতি মাসের শুরুতে তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট উইলিয়াম লাই চিং-টে “বিরোধী হুমকি” মোকাবিলায় একটি গম্বুজাকৃতি আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ার ঘোষণা দেন এবং প্রতিরক্ষা ব্যয়ও বাড়ানোর প্রতিশ্রুতি দেন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
২ বছর পর গাজার ৩ লাখ শিশুর পড়ালেখা শুরু
রুশ তেল কেনা বন্ধ না করলে ভারতকে ‘বিপুল শুল্ক’ দিতে হবে: ট্রাম্প
‘নো কিংস’ আন্দোলন জনসমুদ্রে পরিণত: ট্রাম্পবিরোধী বিক্ষোভে উত্তাল যুক্তরাষ্ট্র
কি কারনে পাকিস্তান ধর্মীয় দল টিএলপির বিরুদ্ধে নতুন দমন অভিযান পরিচালনা করছে
12