logo
  • মঙ্গলবার, ১৭ জুন ২০২৫, ৩ আষাঢ় ১৪৩২
ডোনাল্ড ট্রাম্পের হুঁশিয়ার / জরুরি ভিত্তিতে তেহরান খালি করুন
ইরান-ইসরায়েল সংঘাতে বাড়ছে উত্তেজনা, চীনা নাগরিকদের দ্রুত ইসরায়েল ছাড়ার নির্দেশ
মধ্যপ্রাচ্যে ইরান ও দখলদার ইসরায়েলের মধ্যকার চলমান সংঘাত ক্রমেই জটিল থেকে জটিলতর রূপ নিচ্ছে। পাল্টাপাল্টি হামলায় বেসামরিক এলাকাগুলোতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও বেড়ে চলেছে। এমন পরিস্থিতিতে ইসরায়েলে অবস্থানরত চীনা নাগরিকদের দ্রুত দেশটি ছাড়ার নির্দেশ দিয়েছে ইসরায়েলে অবস্থিত চীনা দূতাবাস। মঙ্গলবার বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়। তেল আবিবে অবস্থিত চীনা দূতাবাস জানায়, ইসরায়েল-ইরান সংঘাতের ফলে নিরাপত্তা পরিস্থিতি আরও উদ্বেগজনক হয়ে উঠেছে। দুই পক্ষের সংঘর্ষে বেসামরিক অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, পাশাপাশি সাধারণ নাগরিকদের হতাহতের সংখ্যাও বাড়ছে। চীনা দূতাবাস জানায়, ইসরায়েলের আকাশসীমা বন্ধ থাকায় এখন বাণিজ্যিক ফ্লাইটে দেশ ত্যাগ করা সম্ভব নয়। তাই চীনা নাগরিকদের জর্ডান সীমান্ত দিয়ে স্থলপথে ইসরায়েল ত্যাগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। এ সতর্কবার্তা চীনের ইউচ্যাট চ্যানেলের মাধ্যমেও প্রচার করা হয়েছে, যাতে ইসরায়েলে অবস্থানরত চীনা নাগরিকরা দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে পারেন। চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ইসরায়েলে অবস্থানরত নাগরিকদের প্রতি বিশেষ সতর্কতা জারি করেছে এবং নিরাপদে দেশত্যাগের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে অনুরোধ জানিয়েছে। বিশ্লেষকরা বলছেন, সংঘাত যদি এভাবে আরও তীব্র হয়, তাহলে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বড় ধরনের মানবিক সংকট তৈরি হতে পারে।
ইরান-ইসরায়েল যুদ্ধ বন্ধে ট্রাম্পের প্রস্তাব, সমর্থন জানালেন ম্যাক্রোঁ
ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৫৬
হজের খুতবায় মুসলিম উম্মাহর ঐক্যের আহ্বান শায়খ সালেহ বিন হুমাইদের
ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীতে বড় রদবদল, সম্মুখ সারির নেতৃত্বে ফিরলেন মেজর জেনারেল দ্রাপাতি
ইরানকে পরমাণু চুক্তির প্রস্তাব দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, নিশ্চিত করল হোয়াইট হাউজ
যুক্তরাষ্ট্র ইরানের সঙ্গে একটি নতুন পরমাণু চুক্তির জন্য প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে হোয়াইট হাউজ। দেশটির প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলাইন লিয়াভিট শনিবার এক বিবৃতিতে জানান, যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে একটি 'বিস্তারিত ও গ্রহণযোগ্য' চুক্তির খসড়া পাঠানো হয়েছে। ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাঘচি জানান, ওমানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদর আলবুসাইদি সম্প্রতি তেহরান সফরে গিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের চুক্তি-সংক্রান্ত কিছু বিষয় তার কাছে উপস্থাপন করেছেন। এর আগে আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা (IAEA) জানিয়েছে, ইরান উচ্চমাত্রায় সমৃদ্ধ ইউরেনিয়ামের মজুত বাড়িয়েছে, যা পরমাণু অস্ত্র তৈরির জন্য ব্যবহৃত হতে পারে। এই পরিস্থিতিতে নতুন চুক্তির প্রস্তাব আলোচনার নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি লিয়াভিট বলেন, “চুক্তিটি গ্রহণ করে নেয়াই ইরানের জন্য সর্বোত্তম সিদ্ধান্ত হবে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এটা পরিষ্কার করে দিয়েছেন, ইরান কখনোই পরমাণু বোমার অধিকারী হতে পারবে না।” তিনি আরও জানান, প্রেসিডেন্টের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফের মাধ্যমে প্রস্তাবটি ইরানকে পাঠানো হয়েছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দীর্ঘদিন পর যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে সরাসরি আলোচনার সম্ভাবনা সৃষ্টি হলো, যা মধ্যপ্রাচ্যের কূটনৈতিক পরিবেশে গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলতে পারে।
গাজায় মার্কিন ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি বিতর্কিত গোষ্ঠীর নতুন ত্রাণ বিতরণ
গাজায় মার্কিন ও ইসরায়েল সমর্থিত একটি বিতর্কিত গোষ্ঠীর নতুন ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রে হাজার হাজার ফিলিস্তিনি ভিড় জমিয়েছেন। কেন্দ্রটি কাজ শুরু করার একদিনের মাথায় এমন ঘটনা ঘটেছে। ভিডিওতে দেখা গেছে, রাফাহ শহরের গাজা হিউম্যানিটারিয়ান ফাউন্ডেশন বা জিএইচএফ কম্পাউন্ডে লোকজন কাঁটাতারের বেড়া ও মাটির বাঁধ ডিঙিয়ে ভেতরে ঢুকে পড়ছে। জিএইচএফ জানিয়েছে, এক পর্যায়ে ত্রাণ প্রত্যাশীদের তুলনায় বিতরণ কর্মীদের অনেক কম হওয়ায় তাদের দলকে পিছু হটতে হয়। ইসরায়েলি নিরাপত্তা বাহিনী জানিয়েছে, এই ভিড় সামলাতে তাদেরকে ফাঁকা গুলি ছুঁড়তেও হয়েছে। জাতিসংঘকে পাশ কাটিয়ে জিএইচএফ নামক এই ত্রাণ বিতরণ সংস্থাটি সশস্ত্র মার্কিন নিরাপত্তা কর্মী (ঠিকাদার) ব্যবহার করে গাজায় ত্রাণ সরবরাহের চেষ্টা করছে। ১১ সপ্তাহ ধরে ইসরায়েলি অবরোধের কারণে গাঁজায় দুর্ভিক্ষের আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও বর্তমানে সেই অবরোধ কিছুটা শিথিল হয়েছে। গাজায় ওই ত্রাণ বিতরণের ভিডিওগুলোকে হৃদয় বিদারক বলে মন্তব্য করে জাতিসংঘ বলছে, তারা ইতোমধ্যে ২১ লাখ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত ত্রাণ সরবরাহের একটি পরিকল্পনাও তৈরি করে রেখেছে। জাতিসংঘসহ অন্যান্য খাদ্য সংস্থা জিএইচএফ’র এই কার্যক্রমে সহযোগিতা করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে। তারা বলছে, এই উদ্যোগ মানবিক নীতিমালা লঙ্ঘন করে এবং ত্রাণকে রাজনৈতিক ও সামরিক লক্ষ্য অর্জনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহারের ঝুঁকি তৈরি করে। তারা সতর্ক করে বলেছে, এই ত্রাণ কার্যক্রম শারীরিকভাবে দুর্বলদের পিছে ঠেলে দেবে এবং সাথে মানুষকে বাস্তুচ্যুত করবে, বিপদের মুখে ফেলবে এবং বৈশ্বিকভাবে ত্রাণ বিতরণের জন্য একটি খারাপ নজির তৈরি করবে। ইসরায়েল অবশ্য বলছে, হামাস যাতে ত্রাণ চুরি না করতে পারে, সেটি নিশ্চিত করতেই বিদ্যমান ব্যবস্থার পরিবর্তন প্রয়োজন। যদিও ইসরায়েলের এই চুরির অভিযোগ অস্বীকার করেছে হামাস। এর আগে সোমবার জিএইচএফ ঘোষণা দেয় যে, তারা গাজায় কার্যক্রম শুরু করেছে এবং বিতরণ কেন্দ্রগুলো থেকে ফিলিস্তিনিদের ত্রাণ দিচ্ছে তারা। মঙ্গলবার বিকেলে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানায়, রাফাহর তাল আল-সুলতান এলাকায় এবং মোরাগ করিডোরে দুইটি বিতরণ কেন্দ্র থেকে খাদ্য বিতরণ শুরু হয়েছে। প্রায় একই সময়ে, ইসরায়েলি ও ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমে তাল আল-সুলতান কেন্দ্রে ফিলিস্তিনিদের দীর্ঘ সারির শেয়ার করে। কিন্তু এর এক ঘণ্টা পরই দেখা যায়, হাজার হাজার নারী-পুরুষ ও শিশুরা কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়েছে। এক ভিডিওতে লোকজনকে দৌড়াতে ও নিচু হয়ে পড়তে দেখা যায়, পেছনে গুলির শব্দ শোনা যায়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, লোকজন বিতরণ এলাকা থেকে খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ লুটপাট করে নিচ্ছিল। তাদের ভাষ্যমতে, আশপাশে অবস্থান নেওয়া ইসরায়েলি সেনারাও গুলি ছুড়েছে। বিবিসি আরবিকে সেখানকার এক ব্যক্তি বলেন, ‌‘অবস্থা খুবই কঠিন ছিল। প্রতি দফায় মাত্র ৫০ জনকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছিল। শেষে বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। তখন মানুষ গেট টপকে ভেতরে ঢুকে পড়ে, অন্যদের মারধর করে এবং সব ত্রাণ নিয়ে যায়।’ জিএইচএফ জানিয়েছে, তারা স্থানীয় এনজিওর সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত আট হাজার খাদ্যের প্যাকেট বিতরণ করেছে। যা দিয়ে প্রায় ৪ লাখ ৬২ হাজার মানুষ খেতে পারবে। তবে জিএইচএফ তাদের এই কার্যক্রমে বাধা দেয়ার অভিযোগ করেছে হামাসের বিরুদ্ধে। যদিও তারা এই দাবির পক্ষে কোন প্রমাণ দেখাতে পারেনি। জিএইচএফ এক বিবৃতিতে বলেছে যে, শেষ বিকেলের দিকে এক সময় ত্রাণ প্রত্যাশীর সংখ্যা বাড়লে তাদের দলটি কিছুটা পিছু হটে যাতে সবাই নিরাপদে ত্রাণ নিতে পারে এবং হতাহত এড়ানো যায়। কিছুক্ষণ পরে স্বাভাবিক কার্যক্রম আবার শুরু হয় বলেও জানানো হয় বিবৃতিতে। ইসরায়েলি সেনাবাহিনী জানিয়েছে যে, তারা কমাউন্ডের বাইরে সতর্কতামূলক ফাঁকা গুলি ছুঁড়েছে। গাজায় হামাস পরিচালিত মিডিয়া অফিস জানিয়েছে, ইসরায়েলের ত্রাণ বিতরণ উদ্যোগ ‘ব্যর্থ হয়েছে’। নিউইয়র্কে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতিসংঘের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক বলেন, ‘আমরা গাজা হিউম্যানিটেরিয়ান ফাউন্ডেশন কর্তৃক স্থাপিত একটি বিতরণ কেন্দ্রের আশেপাশে গাজা থেকে বেরিয়ে আসা ভিডিওটি দেখছি। সত্যি বলতে, এই ভিডিওগুলি, এই ছবিগুলি হৃদয়বিদারক।’ মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্র জাতিসংঘের সমালোচনাকে ‘চরম ভণ্ডামি’ বলে আখ্যা দিয়েছে। তবে তিনি এটিও বলেছেন, আমার মনে হয়, অধিকাংশ মানুষ একমত হবেন যে এটা ইতিবাচক খবর। মূল কথা হচ্ছে গাজায় ত্রাণ যাচ্ছে। জিএইচএফ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ ও মধ্য গাজায় চারটি বিতরণ কেন্দ্র খুলবে তারা। যেখানে ফিলিস্তিনিরা খাদ্য ও অন্যান্য ত্রাণ সংগ্রহ করতে পারবে। তারা জানিয়েছে, এই সপ্তাহের শেষ নাগাদ তারা ১০ লাখ মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিতে চায়। মার্কিন নিরাপত্তা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের এই ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রমে চারপাশে পাহারা দেবে ইসরায়েলি সেনারা। ফিলিস্তিনিদের সেখানে প্রবেশের আগে পরিচয় যাচাই ও হামাস সম্পৃক্ততা যাচাই করা হবে। তবে জাতিসংঘ ও অন্যান্য ত্রাণ সংস্থাগুলো বলেছে, তারা এমন কোনো পরিকল্পনায় অংশ নেবে না- যা মানবতা, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতার মৌলিক নীতিগুলোকে লঙ্ঘন করে। ইসরায়েল গত দোসরা মার্চ গাজায় মানবিক সাহায্য প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা দেয়। দুই সপ্তাহ পর সামরিক অভিযান শুরু করে দুই মাসের যুদ্ধবিরতি ভেঙে। তাদের লক্ষ্য ছিল গাজায় জিম্মি থাকা ৫৮ জনকে মুক্ত করা।
টেসলার তৈরি গাড়ির বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে
চীনা বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতাদের শেয়ার বৃদ্ধি পাওয়ায় গেল এপ্রিল মাসে ইলন মাস্কের টেসলার তৈরি গাড়ির বিক্রি অর্ধেকেরও বেশি কমে গেছে। মঙ্গলবার এ তথ্য জানিয়েছে ইউরোপীয় অটোমোবাইল ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন (এসিইএ)। ইউরোপীয় ইউনিয়নের ২৭টি দেশে সামগ্রিকভাবে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি বৃদ্ধি পেলেও, ইলন মাস্কের টেসলার শেয়ার নাটকীয়ভাবে হ্রাস পেয়েছে। এসিইএ জানিয়েছে, এপ্রিল মাসে টেসলার বিক্রি কমে ৫ হাজার ৪৭৫টি গাড়িতে দাঁড়িয়েছে, যা গত বছরের একই মাসের তুলনায় ৫২.৬ শতাংশ কম। ২০২৫ সালের প্রথম চার মাসে, টেসলার বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় ৪৬.১ শতাংশ কমে ৪১ হাজার ৬৭৭টি গাড়িতে দাঁড়িয়েছে। জেটো ডায়নামিক্সের পরামর্শদাতাদের মতে, একসময় বৈদ্যুতিক গাড়ি বিক্রিতে শীর্ষস্থানীয় প্রতিষ্ঠান টেসলাকে এপ্রিল মাসে ভক্সওয়াগন, বিএমডব্লিউ, রেনল্ট এবং চীনা নির্মাতা বিওয়াইডিসহ ১০টি প্রতিদ্বন্দ্বী টেসলাকে ছাড়িয়ে গেছে। টেসলা এপ্রিল মাসে ঘোষণা করেছিল, প্রথম প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী তাদের বিক্রয় ১৩ শতাংশ কমেছে, যা মাস্কের ওপর চাপ বাড়িয়েছে, যদিও কোম্পানিটি আংশিকভাবে মডেল ওয়াই স্ট্যান্ডার্ড-বেয়ারার আপগ্রেডের কারণে উৎপাদন হ্রাসের জন্য দায়ী করেছে। মাস্ক তখন থেকেই ঘোষণা করেছেন, তিনি ট্রাম্পকে মার্কিন সরকারের ব্যয় কমাতে সাহায্য করার জন্য তার কাজ কমিয়ে দেবেন এবং গত সপ্তাহে বলেছিলেন টেসলার বিক্রয় ‘ভালো’ হচ্ছে। এসিইএ তথ্য অনুসারে, এপ্রিল মাসে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি গত বছরের তুলনায় সামগ্রিকভাবে ২৬.৪ শতাংশ বেড়ে বাজারের ১৫.৩ শতাংশ অংশ দখল করেছে। ইউরোপ জুড়ে এই বৃদ্ধি অসম কারণ বিভিন্ন সরকার এবং নির্মাতারা বৈদ্যুতিক গাড়ি কেনার জন্য বিভিন্ন প্রণোদনা দেয়। জার্মানি, বেলজিয়াম, ইতালি এবং স্পেনে উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি দেখা গেছে। তবে ফ্রান্সে বৈদ্যুতিক গাড়ির বিক্রি কমেছে। এসিইএ-এর মহাপরিচালক সিগ্রিড ডি ভ্রিস বলেন, ব্যাটারি-বৈদ্যুতিক যানবাহনের চাহিদা ধীরে ধীরে গতি পাচ্ছে, কিন্তু ইইউ দেশগুলোতে প্রবৃদ্ধি ক্রমবর্ধমান এবং অসম রয়ে গেছে’। তিনি বলেন, ‘ব্যাটারি-ইলেকট্রিক যানবাহনকে মূলধারার পছন্দে পরিণত করার জন্য, সরকারগুলোর জন্য প্রয়োজনীয় সক্ষমতা বৃদ্ধির শর্তাবলী, যেমন ক্রয় এবং আর্থিক প্রণোদনা, রিচার্জিং অবকাঠামো এবং বিদ্যুতের দাম বাস্তবায়ন অব্যাহত রাখা অপরিহার্য।’  ইউরোপীয় বাজারে এখনও ছোট বৈদ্যুতিক ব্যাটারি সহ হাইব্রিড গাড়ির বিক্রি প্রাধান্য পেয়েছে। চলতি বছরের শুরু থেকে ২০.৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। যেখানে একই সময়ে কেবল পেট্রোল-চালিত গাড়ি ২০.৬ শতাংশ কমেছে। বিওয়াইডি, এমজি, এক্সপেং এবং লিপমোটর ব্র্যান্ডগুলোর বৈদ্যুতিক এবং হাইব্রিড বিক্রয় বছরে ৫৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে।  এসিইএ বিশেষজ্ঞ ফেলিপ মুনোজ বলেছেন, ইউরোপীয় ইউনিয়ন বৈদ্যুতিক যানবাহনের মতো চীনা হাইব্রিড গাড়ির ওপর শুল্ক আরোপ করে কিনা তা এখনও দেখার বিষয়।
নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আল-আকসায় ঢুকে ইসরায়েলিদের হামলা
ইসরায়েলি বসতি স্থাপনকারীরা নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে আবারও জেরুজালেমের আল-আকসা মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রবেশ করেছে। সোমবার (২৬ মে) ‘জেরুজালেম দিবস’ উপলক্ষে আয়োজিত মিছিলের সময় এই ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে আল-জাজিরা। এ সময় তারা মুসলিম কোয়ার্টারে উত্তেজনাকর স্লোগান দেয় এবং স্থানীয় ফিলিস্তিনিদের ওপর হামলা চালায়। প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, প্রায় দুই হাজার ইসরায়েলি ওই এলাকায় প্রবেশ করে। তাদের সঙ্গে ছিলেন জাতীয় নিরাপত্তামন্ত্রী ও কট্টরপন্থী নেতা ইতামার বেন-গভির। তিনি সামাজিক মাধ্যমে একটি ভিডিও পোস্ট করেন, যেখানে তাকে মসজিদ এলাকায় প্রার্থনা করতে দেখা যায়। ভিডিওতে আরও দেখা যায় ইসরায়েলি পার্লামেন্ট সদস্য ইৎজাক ক্রুজার ও মন্ত্রী ইৎজাক ভাসেরলফকে। বেন-গভির জানান, তিনি গাজা যুদ্ধ জয়ের প্রার্থনা করেছেন এবং হামাসের হাতে আটকদের মুক্তির কামনা করেছেন। ইসরায়েলি মিছিলকারীরা মুসলিম কোয়ার্টার অতিক্রমকালে ‘আরব নিপাত যাক’ ও ‘তোদের বসতি জ্বলুক’— এ ধরণের উস্কানিমূলক স্লোগান দেয়। অংশগ্রহণকারীদের বেশিরভাগই দখলীকৃত জেরুজালেম ও পশ্চিম তীরের অবৈধ বসতি স্থাপনকারী। উল্লেখ্য, ১৯৬৭ সালের যুদ্ধের পর পূর্ব জেরুজালেম দখল করলেও ইসরায়েল আন্তর্জাতিক চাপে মুসলিম ধর্মীয় স্থানগুলোর প্রশাসন মুসলিম কর্তৃপক্ষের অধীনে রাখার প্রতিশ্রুতি দেয়। এই চুক্তি অনুযায়ী, আল-আকসা চত্বরে মুসলিমদের প্রার্থনা অনুমোদিত, অন্য ধর্মাবলম্বীদের প্রবেশ সীমিত এবং প্রার্থনা নিষিদ্ধ। আন্তর্জাতিক আইনে জর্ডানের ইসলামিক ওয়াকফ কাউন্সিল এই চত্বরের প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইসরায়েলি সুপ্রিম কোর্টও সেখানে ইহুদি প্রার্থনা নিষিদ্ধ করেছে। জাতিসংঘসহ অধিকাংশ আন্তর্জাতিক সংস্থা পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড হিসেবে চিহ্নিত করে। গতকাল সোমবার মিছিল থেকে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা UNRWA-র সদর দপ্তরে হামলার অভিযোগও উঠেছে। UNRWA-র এক কর্মকর্তা জানান, ইসরায়েলি বিক্ষোভকারীরা পুলিশি উপস্থিতির মাঝেই কম্পাউন্ডে ঢুকে পড়ে। তাদের মধ্যে ছিলেন পার্লামেন্ট সদস্য ইউলিয়া মালিনভস্কি, যিনি UNRWA নিষিদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা রাখছেন। সামাজিক মাধ্যমে ছড়ানো ভিডিওতে দেখা যায়, কিছু ইসরায়েলি কিশোর পতাকা হাতে ফিলিস্তিনি দোকানিদের হয়রানি করছে। ঘটনার পর দুজনকে আটক করেছে পুলিশ। যদিও কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঠেকাতে বিপুল সংখ্যক সশস্ত্র পুলিশ মোতায়েন ছিল। এই ঘটনা আবারও আল-আকসা চত্বরের পবিত্রতা এবং ফিলিস্তিনি অধিকার নিয়ে আন্তর্জাতিক উদ্বেগ বাড়িয়েছে।
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে দক্ষিণ ইউরোপের দ্বীপ দেশ মাল্টা
ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছে ভূমধ্যসাগরে অবস্থিত দক্ষিণ ইউরোপের দ্বীপ দেশ মাল্টা। দেশটির প্রধানমন্ত্রী রবার্ট অ্যাবেলা এ ঘোষণা দিয়েছেন। রবিবার (২৫ মে) রাতে এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমা আনাদোলু এজেন্সি (এএ) তাদের এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। খবরে বলা হয়, রবিবার এক রাজনৈতিক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী রবার্ট অ্যাবেলা ঘোষণা দেন, আগামী মাসেই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেবে তার দেশ।  অনুষ্ঠানে তিনি স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে কথা বলেন, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন গাজায় চলমান মানবিক সংকটের ওপর। মাল্টা টুডে পত্রিকার বরাতে জানা যায়, গাজায় ইসরায়েলের লাগাতার বোমাবর্ষণের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অ্যাবেলা বলেন, “এই মানবিক ট্র্যাজেডির দিকে আমরা চোখ বন্ধ রাখতে পারি না, যা প্রতিদিন আরও ভয়াবহ হয়ে উঠছে।” তিনি বলেন, ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেওয়া মাল্টার নৈতিক দায়িত্ব এবং আগামী ২০ জুন এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনের পর এই স্বীকৃতি কার্যকর হবে। প্রধানমন্ত্রী অ্যাবেলা আরও বলেন, তিনি বিশেষভাবে মর্মাহত হয়েছেন সেই ভয়াবহ ঘটনায়, যেখানে গাজার দক্ষিণের খান ইউনূস শহরে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় ফিলিস্তিনের শিশু চিকিৎসক ডা. আলা আল-নাজ্জারের ৯ সন্তান নিহত হয়েছেন। হামলায় ডাক্তারের স্বামীও গুরুতর আহত হন এবং এখন একমাত্র জীবিত সন্তান মা-বাবা, ভাইবোন হারিয়ে শোক বয়ে বেড়াচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী অ্যাবেলা জানান, মাল্টা সরকার ডা. আলা আল-নাজ্জার ও তার পরিবারকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত। উল্লেখ্য, মাল্টা ইতোমধ্যে একটি ফিলিস্তিনি দূতাবাসকে স্বাগতম জানিয়েছে এবং গত বছরের এপ্রিল মাসে জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদে ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদকে সমর্থন জানিয়েছে। তবে এখনো দেশটি আনুষ্ঠানিকভাবে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দেয়নি।
ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে পাকিস্তান
ভারতকে নিজেদের অস্তিত্বের জন্য হুমকি মনে করে পাকিস্তান। এজন্য ক্রমবর্ধমান উত্তেজনার মধ্যে পরমাণু অস্ত্রসহ সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নে জোর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে দেশটি। যুক্তরাষ্ট্রের এক গোয়েন্দা প্রতিবেদনে এমনটাই বলা হয়েছে। মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ‘পিটিআই’ এই খবর জানিয়েছে। সম্প্রতি ভারত শাসিত কাশ্মীরের পেহেলগাঁওয়ে এক সন্ত্রাসী হামলা ও এর প্রেক্ষিতে পাকিস্তান এবং ভারতের মধ্যে হামলা-পাল্টা হামলার পর পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে ঠেকেছে। যুদ্ধবিরতি চললেও একে অপরের বিরুদ্ধে হুমকি-পাল্টা হুমকি অব্যাহত রেখেছে উভয় পক্ষ। এমন বাস্তবতায় রবিবার (২৫ মে) মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি (ডিআইএ) ‘অ্যানুয়াল থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট’ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।  প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পরমাণু শক্তিধর ভারতকে পাকিস্তান তার অস্তিত্বের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে এবং এই হুমকি মোকাবিলায় দেশটি ‘তার সামরিক শক্তি আধুনিকীকরণ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থা তাদের সর্বশেষ প্রতিবেদনে লিখেছে, ‘পাকিস্তান তার পরমাণু অস্ত্রাগার আধুনিকীকরণ করছে। সেই সঙ্গে দেশটি তার পরমাণু উপকরণ ও পরমাণু অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখছে। পাশাপাশি পাকিস্তান প্রায় নিশ্চিতভাবেই বিদেশি সরবরাহকারী ও মধ্যস্থতাকারীদের কাছ থেকে ‘ওয়েপন অব মাস ডেস্ট্রাকশন বা ব্যাপক বিধ্বংসী অস্ত্রের জন্য প্রয়োজনীয় উপাদান সংগ্রহ করছে।’ প্রতিবেদনে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে, আগামী বছরগুলোতে আঞ্চলিক প্রতিবেশীদের সাথে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সীমান্তে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটবে। পাশাপাশি পরমাণু আধুনিকীকরণ তাদের শীর্ষ অগ্রাধিকারের বিষয় থাকবে। মার্কিন প্রতিরক্ষা গোয়েন্দা সংস্থার এই প্রতিবেদনকে ‘ওয়ার্ল্ডওয়াইড থ্রেট অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্ট’ও বলা হয়ে থাকে। এতে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাকিস্তান ও চীনের মধ্যে ক্রমবর্ধমান সম্পর্কও তুলে ধরা হয়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পাকিস্তান মূলত চীনের অর্থনৈতিক ও সামরিক অনুদান নিয়ে থাকে এবং দুই দেশের বাহিনী প্রতি বছর একাধিক সম্মিলিত সামরিক মহড়া পরিচালনা করে। তবে চীন-পাকিস্তান ইকোনমিক করিডোর প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট চীনা শ্রমিকদের লক্ষ্য করে সন্ত্রাসী হামলা দেশ দু’টির মধ্যে সম্পর্কে কূটনৈতিক টানাপোড়েন সৃষ্টি করেছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। চীনের ব্যাপারে সতর্ক করে মার্কিন এই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘পূর্ব এশিয়ায় প্রধান শক্তিধর দেশ হওয়ার কৌশলগত লক্ষ্য বজায় রেখেছে চীন। তাইওয়ানকে মূল ভূখণ্ড চীনের সঙ্গে একীভূত করা, চীনের অর্থনীতির উন্নয়ন ও স্থিতিস্থাপকতাকে এগিয়ে নেয়া এবং মধ্য শতাব্দীর মধ্যে প্রযুক্তিগতভাবে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার লক্ষ্য নিয়ে দেশটি বিশ্ব নেতৃত্বের জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে চ্যালেঞ্জও জানাচ্ছে।’ যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দেয়ার জন্য চীন কোনো কোনো অঞ্চলে সামরিক উপস্থিতির কার্যক্রম শুরু করেছে এবং কোন দেশগুলোতে কার্যক্রম শুরু করার পরিকল্পনা করছে, সেটাও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। প্রতিবেদনের চীন অংশের ‘গ্লোবাল মিলিটারি অপারেশনস’ শীর্ষক অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘চীনে থেকেই টানা লম্বা সময় কার্যক্রম চালানোর জন্য পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ব্যবস্থাপনা আরো উন্নত করছে দেশটি। এছাড়া চীন শক্তিশালী বিদেশি সরবরাহ ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা করছে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ‘দেশটি সেনাদের আরো বেশি দূরত্বে মোতায়েন বজায় রাখার জন্য অবকাঠামো তৈরি করছে। এই প্রচেষ্টা মার্কিন বৈশ্বিক কার্যক্রম কিংবা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘চীন সম্ভবত মিয়ানমার, থাইল্যান্ড, ইন্দোনেশিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কিউবা, কেনিয়া, গিনি, সেশেলস, তানজানিয়া, অ্যাঙ্গোলা, নাইজেরিয়া, নামিবিয়া, মোজাম্বিক, গ্যাবন, পাপুয়া নিউগিনি, সলোমন দ্বীপপুঞ্জ ও তাজিকিস্তানে পিএলএ-এর সামরিক উপস্থিতির কথাও বিবেচনা করছে।
2Error!: SQLSTATE[23000]: Integrity constraint violation: 1062 Duplicate entry '0' for key 'news_id'