বলিউডের প্রখ্যাত বর্ষীয়ান অভিনেতা আসরানি আর নেই।

সোমবার (২০ অক্টোবর) সন্ধ্যায় মুম্বাইয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন বলিউডের প্রখ্যাত অভিনেতা গোবর্ধন আসরানি। তার শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়েছে সান্তাক্রুজ শ্মশানে। এই তথ্য নিশ্চিত করেছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
১৯৪১ সালের ১ জানুয়ারি রাজস্থানের জয়পুরে জন্মগ্রহণ করেন আসরানি। শৈশব থেকেই নাটক ও অভিনয়ের প্রতি ছিল গভীর আগ্রহ। পড়াশোনা শেষ করে অল ইন্ডিয়া রেডিওতে ভয়েস আর্টিস্ট হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেন। পরে অভিনয়ের দীক্ষা নেন সাহিত্য শিক্ষক কলাভাই ঠাক্কারের কাছে। ১৯৬২ সালে স্বপ্নপূরণের আশায় পাড়ি জমান মুম্বাইয়ে।
সেখানেই তার জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দেন খ্যাতিমান পরিচালক হৃষিকেশ মুখার্জি। তার পরামর্শে আসরানি ভর্তি হন পুণের ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া (FTII)-তে, যেখান থেকে তিনি ১৯৬৬ সালে স্নাতক হন। শুরুতে কয়েকটি ছবিতে ছোটখাটো চরিত্রে অভিনয় করলেও তেমন পরিচিতি পাননি। সেই সময় জীবিকা নির্বাহের জন্য FTII-তেই শিক্ষকতা শুরু করেন—এটাই হয়ে ওঠে তার ক্যারিয়ারের টার্নিং পয়েন্ট।
পরিচালক গুলজারের সুপারিশে হৃষিকেশ মুখার্জি তাকে সুযোগ দেন গুড্ডি (১৯৭১) ছবিতে, যেখানে জয়া ভাদুরির চরিত্র চূড়ান্ত করতেও আসরানির ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। গুড্ডি-তে অভিনয়ের মাধ্যমেই দর্শকমনে ছাপ ফেলেন তিনি। এরপর আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি।
বাবার্চি, নমক হারাম, চুপকে চুপকে, অভিমান, চলা মুরারি হিরো বননে, পতি পত্নী ঔর ওহ, খুন পসিনা, এবং আমদাবাদ নো রিকশাওয়ালো সহ অসংখ্য ছবিতে অভিনয় করে মানুষের মনে হাসির ছাপ রেখে গেছেন। তবে তার ক্যারিয়ারের সবচেয়ে আইকনিক চরিত্র নিঃসন্দেহে শোলে ছবির সেই হাস্যরসপূর্ণ ‘জেলার’ চরিত্র। তার সংলাপ, মুখভঙ্গি ও কমিক টাইমিং আজও দর্শকের মনে অমলিন।
অভিনয়ের পাশাপাশি ছয়টি চলচ্চিত্র পরিচালনা করেছেন তিনি। ২০০৩ সালে মুক্তি পাওয়া কমেডি ছবি নন স্টপ ধামাল-এ তাকে শেষবার পর্দায় দেখা যায়।
তার জীবনের এই সাফল্যের পেছনে ছিলেন তার স্ত্রী, অভিনেত্রী মঞ্জু আসরানি।
গোবর্ধন আসরানির প্রয়াণে বলিউড হারাল এক অনন্য প্রতিভাবান শিল্পীকে—এক যুগের হাসির নায়ককে, যিনি কোটি মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর জন্য চিরকাল স্মরণীয় থাকবেন।
মন্তব্য করুন