logo
  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২

ইতালির উদিন শহরে ফিলিস্তিনপন্থিদের বিক্ষোভ: পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ

অনলাইন ডেস্ক
  ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৫০
রয়টার্স

ইতালির উত্তরাঞ্চলীয় শহর উদিনে মঙ্গলবার ফিলিস্তিনপন্থি হাজারো বিক্ষোভকারী ইসরায়েলের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাইপর্বের ফুটবল ম্যাচের আগে রাস্তায় নেমে আসে। প্রায় শান্তিপূর্ণভাবে অনুষ্ঠিত হলেও, মিছিলের শেষ দিকে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

প্রাথমিক পুলিশ হিসাব অনুযায়ী, বিক্ষোভে অংশ নেয় পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ। বিকেল থেকে শুরু হওয়া এই মিছিল শহরের কেন্দ্র ঘুরে যায় ফ্রিউলি স্টেডিয়ামের দিকে, যেখানে রাত ৮টা ৪৫ মিনিটে (১৮:৪৫ জিএমটি) ইতালি ৩-০ গোলে ইসরায়েলকে হারায়।

বিক্ষোভের আয়োজন করে ‘কমিটি ফর প্যালেস্টাইন-উদিন’ নামের সংগঠনটি। ইসরায়েলকে সব ধরনের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা থেকে নিষিদ্ধ করতে তারা বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা’র প্রতি আহ্বান জানান। সংগঠনের দাবি, ইসরায়েলি দল ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে দখলনীতি সমর্থন করে।

বিক্ষোভকারীরা ১৮ মিটার দীর্ঘ ফিলিস্তিনি পতাকা ও “শো ইসরায়েল দ্য রেড কার্ড” লেখা বড় লাল ব্যানার বহন করছিলো। ন্যায়বিচারের প্রতীক একটি ধাতব ভাস্কর্যও ছিল মিছিলে, যার এক হাতে দাঁড়িপাল্লা ও অন্য হাতে ছিল একটি লাল কার্ড।

একজন অংশগ্রহণকারী, ভ্যালেন্তিনা বিআঙ্কি, বলেন, “যুদ্ধবিরতি হয়েছে, কিন্তু শান্তি আসেনি। আমার প্ল্যাকার্ডে যেমন লিখেছি—ন্যায়বিচার ছাড়া শান্তি সম্ভব নয়।”

মিছিলের শেষে কিছু বিক্ষোভকারী পুলিশের দিকে আতশবাজি ও ব্যারিকেড ছোড়ে। জবাবে দাঙ্গা-নিয়ন্ত্রণ পুলিশ জলকামান ও টিয়ার গ্যাস ব্যবহার করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে।

ইতালির রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারমাধ্যম আরএআই (RAI) এক বিবৃতিতে জানায়, তাদের একজন সাংবাদিক পাথরের আঘাতে আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। এছাড়া আনসা (Ansa) সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, আরও একজন সাংবাদিক ও কয়েকজন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন।

উদিনের মেয়র আলবার্তো ফেলিচে দে টনি বলেন, “আজ রাতে যা ঘটেছে, তা একেবারেই অগ্রহণযোগ্য। আমাদের শহর এই সহিংসতাকে কঠোরভাবে নিন্দা জানায়।”

ইসরায়েল ও হামাসের মধ্যে যুদ্ধবিরতি চুক্তি হওয়ার পরও বিক্ষোভকারীরা পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচি পালন করেন। চুক্তির অংশ হিসেবে জীবিত ইসরায়েলি জিম্মিদের মুক্তি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের প্রত্যাবর্তন অন্তর্ভুক্ত ছিল।

ইতালির ফুটবল ফেডারেশনের তথ্য অনুযায়ী, ম্যাচের জন্য বিক্রি হয় ৯ হাজারের কিছু বেশি টিকিট, যা ১৬ হাজার আসনবিশিষ্ট স্টেডিয়ামের ধারণক্ষমতার তুলনায় অনেক কম।

সহিংসতার আশঙ্কায় কিছু দোকান সারাদিনই বন্ধ ছিল, আর অনেক দোকানের শাটার বিকেলেই নামিয়ে দেয়া হয়। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে ইতালিতে বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনা ঘটায় ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছিলো।

স্থানীয় কর্তৃপক্ষ কঠোর নিরাপত্তা নির্দেশনা জারি করে—রাস্তা বন্ধ, পার্কিং নিষেধাজ্ঞা এবং স্টেডিয়াম ঘিরে কংক্রিটের দেয়াল স্থাপন করা হয়। ম্যাচের দিনে গ্লাস, সিরামিক বা টিনের পাত্রে খাবার ও পানীয় পরিবেশন নিষিদ্ধ করা হয়। রেস্টুরেন্ট ও ক্যাফের বাইরে থেকে বসার আসবাবও সরিয়ে ফেলা হয়।

শান্ত শহর উদিনে এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কিছু বাসিন্দার কাছে অস্বস্তিকর মনে হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দা পাওলো লিজ্জি বলেন, “আমি মাথার উপর দিয়ে হেলিকপ্টার উড়তে দেখেছি। শুধু একটি ফুটবল ম্যাচের জন্য এমন নিরাপত্তা ব্যবস্থা কখনোই হওয়া উচিত নয়।”

তথ্যসূত্র- রয়টার্স

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
দখলকৃত পশ্চিম তীরে বাড়ছে “ইসরাইলি স্যাটেলারদের” হামলা: আট মাসেই সহিংসতা হাজার ছাড়িয়েছে
ফিফার ৩০ কোটি টাকার সহায়তা ফেরত যাবে না: ক্রীড়া উপদেষ্টা
ফ্রান্সের অপেক্ষা আরও দীর্ঘ, কষ্টার্জিত জয়ে শীর্ষে জার্মানি
ফিফার কমিটিতে জায়গা পেলেন বাফুফে সভাপতি তাবিথ আউয়াল
12