logo
  • বুধবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ৩১ আশ্বিন ১৪৩২

জেন-জিদের প্রিয়: নতুন দক্ষিণি তারকা প্রদীপ রঙ্গনাথন

অনলাইন ডেস্ক
  ১৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৪৫

মাত্র দুটি সিনেমা দিয়েই দক্ষিণ ভারতের তরুণ প্রজন্মের হৃদয়ে জায়গা করে নিয়েছেন প্রদীপ রঙ্গনাথন। সম্প্রতি ভাইরাল হওয়া এক সাক্ষাৎকারে তাঁকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, “আপনি তো প্রচলিত নায়কদের মতো দেখতে নন। তবুও মাত্র দুই ছবিতেই এত জনপ্রিয়তা—এটা পরিশ্রম, না ভাগ্য?” প্রশ্নটার মধ্যেই লুকিয়ে আছে তাঁর সাফল্যের সূত্র। সত্যিই তো—দুটি ছবায় কীভাবে এত বড় তারকাদের কাতারে উঠে এলেন প্রদীপ?

আজকের সময়ে যখন বড় বড় তারকাদের ছবিও দর্শক টানতে পারছে না, নতুন সিনেমার সংখ্যা কমে গেছে, নির্মাণ থেকে মুক্তি পর্যন্ত সময় লেগে যাচ্ছে বছর—সেখানে প্রদীপের উত্থান কেবল পরিশ্রম বা ভাগ্যের ফল নয়; এর পেছনে আছে বুদ্ধিমত্তা ও সঠিক কৌশল।

প্রদীপের সাফল্যের মূল রহস্য হলো তরুণ প্রজন্মের গল্প বলা। চলচ্চিত্রের ইতিহাসে দেখা গেছে—যেসব অভিনেতা প্রথমে তরুণদের মন জয় করেছেন, পরে তাঁরা পরিবারের সব বয়সের দর্শকের কাছেও গ্রহণযোগ্য হয়েছেন। যেমন—সুরিয়া ‘ভারানাম আয়িরাম’ ও ‘সিল্লুনু ওরু কাধাল’-এ, বিজয় ‘খুশি’ ও ‘সাচিয়েন’-এ, পবন কল্যাণ ‘বাদরি’ ও ‘মুরারি’-তে, কিংবা বিজয় দেবরকোন্ডা ‘পেলি ছুপুলু’ ও ‘অর্জুন রেড্ডি’-তে। সেই ধারাতেই প্রদীপ ‘লাভ টুডে’ দিয়ে তরুণদের মনে জায়গা করে নিয়েছেন।

‘লাভ টুডে’-এর গল্পে প্রেম, আস্থা, গোপনীয়তা আর ডিজিটাল যুগের সম্পর্কের ভয় একসঙ্গে উঠে এসেছে। এক যুগল একদিন একে অপরের ফোন ব্যবহার করে—এই ঘটনাকে ঘিরেই নির্মিত হয়েছে সিনেমাটি। গোপনীয়তা আর সততার এই টানাপোড়েন জেন-জিদের বাস্তব অভিজ্ঞতার সঙ্গে মিলে গেছে নিখুঁতভাবে। ফলে ছবিটি তরুণদের মাঝে ভাইরাল হয়, পরে পরিবারের অন্য সদস্যেরাও বলেন—“বাহ, সচেতনতার গল্পটা খারাপ না!”

প্রদীপ শুধু অভিনয় করেন না, তিনি মুহূর্ত সৃষ্টি করেন। ‘লাভ টুডে’-এ রোমান্সের পাশাপাশি আছে তারুণ্যের উদ্দীপনা, জীবনের বাস্তবতা, ও আত্মসমালোচনার সুর। তাঁর প্রতিটি গানই কেবল সুরেলা নয়, বরং তরুণদের জীবনধারা ও আবেগের প্রতিফলন।

‘ড্রাগন’ সিনেমায় তিনি পরিচালক নন, তবু তাঁর চরিত্র রাঘবনের মধ্য দিয়ে দেখা যায় আধুনিক তরুণদের দ্বন্দ্ব, ভুল আর লালসার বাস্তব প্রতিচ্ছবি।

প্রদীপ দর্শকদের জ্ঞান দিতে চান না, বরং বাস্তবতা দেখাতে চান। নিজেকে ‘নায়ক’ নয়, সাধারণ মানুষ হিসেবেই উপস্থাপন করেন। এই সরলতা ও বাস্তবধর্মী উপস্থাপনই তাঁর বড় শক্তি।

আজকের সিনেমা কেবল গল্প নয়—এটা একধরনের প্যাকেজিংও। প্রদীপ প্রচলিত নায়কসুলভ চেহারার নন; তাঁকে দেখলেই মনে হয়, “পাশের বাড়ির ছেলে।” তাঁর সিনেমায় থাকে পারিবারিক আবেগ, প্রেম, হাস্যরস আর সামাজিক বার্তার মিশেল—যা সব বয়সের দর্শকের কাছে গ্রহণযোগ্য করে তুলেছে তাঁকে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও প্রদীপ একইভাবে সরল ও মজার। নিজের আলাদা ব্র্যান্ড তৈরি করেছেন তিনি। তাঁর সিনেমার প্রচারণার ভিডিওগুলো যেমন সৃজনশীল, তেমনি আন্তরিকও।

যেখানে সবাই এখন ‘প্যান-ইন্ডিয়া’ স্বপ্ন দেখে, প্রদীপ সেখানে নিজের দক্ষিণি দর্শকদের নিয়েই কাজ করতে পছন্দ করেন। তাঁর সিনেমার বাজেট ছোট, কিন্তু দর্শক-সংযোগ গভীর। তিনি জানেন, দক্ষিণের মানুষ ছবিটি পছন্দ করলেই বিনিয়োগের কয়েকগুণ ফিরে আসবে।

প্রদীপের সবচেয়ে বড় শক্তি—পর্দা ও বাস্তবের মধ্যে সেতুবন্ধ তৈরি করা। তিনি নিজেই বলেছেন, “মানুষ আমার মধ্যে নিজেদের দেখে। তারা প্রেম করছে, লড়ছে, হাসছে—তখন আমি তাদের নায়ক হয়ে যাই।”

অভিনেতা নাগার্জুনও মন্তব্য করেছেন, “রজনীকান্ত যেমন এক সময় সিনেমা বদলে দিয়েছিলেন, পরে ধনুশ—এখন প্রদীপের মধ্যে সেই জ্বালা দেখছি। ওকে দেখে মনে হয়, আমাদেরই একজন।”

তবে সিনেমার দুনিয়া কঠিন। এক ভুল সিদ্ধান্তই ক্যারিয়ার বদলে দিতে পারে—এটা প্রদীপ ভালোভাবেই জানেন। তাঁর নিজের কথায়, “আমার আসল শক্তি সততার সঙ্গে গল্প বলা। সামনেও সেটাই ধরে রাখতে চাই।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
‘ইত্যাদি’ এবার কুড়িগ্রামের উলিপুরে
ছেলেদের সমান ভাতা ও ট্যুর ফি পাবেন বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটাররা
অরিজিৎকে ভুল বুঝেছিলেন সালমান খান: অবশেষে মুখ খুললেন বলিউড সুপারস্টার
‘ডিভোর্স’ বলেছিলেন মাহি, হঠাৎ স্বামীর সঙ্গে ছবি পোস্ট নিয়ে রহস্য
12