‘গণরুম-গেস্টরুম সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে’ — অভিযোগ ইবি শিবির সভাপতির

ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে আবারও গণরুম ও গেস্টরুম সংস্কৃতি ফিরিয়ে আনার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ইবি ছাত্রশিবিরের সভাপতি মাহমুদুল হাসান। তিনি দাবি করেন, একটি নির্দিষ্ট মহল এই প্রচেষ্টা চালাচ্ছে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু প্রাধ্যক্ষও এতে সহযোগিতা করছেন।
শনিবার (১৮ অক্টোবর) সাজিদ হত্যার বিচারসহ পাঁচ দফা দাবিতে শিবির আয়োজিত বিক্ষোভ মিছিল ও ছাত্রসমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সভাপতি মাহমুদুল হাসান বলেন, “কোনো ভাবেই হলগুলোকে সন্ত্রাসীদের হাতে তুলে দিতে দেওয়া হবে না। যদি এমন চেষ্টা হয়, সাধারণ শিক্ষার্থীরাই তা প্রতিহত করবে।”
সাজিদ হত্যার ঘটনার ৯৩ দিন পার হয়ে গেলেও এখনো খুনিদের শনাক্ত বা গ্রেপ্তার করা হয়নি—এ বিষয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। তার অভিযোগ, এটি শুধু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নয়, ইন্টেরিম সরকারেরও ব্যর্থতা। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় অচল করে কঠোর কর্মসূচিতে যাবে।
ছাত্রসংসদ নির্বাচন নিয়েও সমালোচনা করেন শিবির সভাপতি। তাঁর দাবি, প্রশাসন আইনের অজুহাত দেখিয়ে নির্বাচন করছে না। অন্যদিকে জগন্নাথ ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় আইন পাসের মাধ্যমে ছাত্রসংসদ গঠনের দিকে এগোচ্ছে। ১৫ তারিখের মধ্যে নীতিমালা চূড়ান্তের আশ্বাস দেওয়া হলেও ১৮ তারিখেও কোনো ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন।
শিক্ষক সংকট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, কিছু বিভাগে ৫-৭টি ব্যাচ চললেও শিক্ষক রয়েছেন মাত্র দুজন। এতে শিক্ষার মান মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। দ্রুত মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগের দাবি জানান তিনি।
এছাড়া বহুল প্রতীক্ষিত হল নির্মাণকার্যের দীর্ঘসূত্রিতা নিয়েও ক্ষোভ প্রকাশ করেন শিবির সভাপতি। তার ভাষায়, “২০১৮ সালে টেন্ডার হওয়া হলগুলোর নির্মাণকাজ ২০২৫ সালেও শেষ হয়নি।” তিনি চলতি বছরের মধ্যেই হলগুলো চালু করে মেধার ভিত্তিতে সিট বণ্টনের আহ্বান জানান।
সমাবেশে সংগঠনটির পক্ষ থেকে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরা হয়—সাজিদ হত্যার দ্রুত বিচার, ইকসুর নীতিমালা ও রোডম্যাপ প্রদান, ডিজিটাল পেমেন্ট নিশ্চিতকরণ, চলতি বছরেই নির্মাণাধীন হল চালু এবং মেধা ও স্বচ্ছতার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ। সাত দিনের মধ্যে ডিজিটাল পেমেন্ট চালু না হলে প্রশাসন অচল করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়।
এর আগে বটতলা থেকে বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে একই স্থানে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে সভাপতির পাশাপাশি সংগঠনের সেক্রেটারি ইউসুব আলী, অফিস সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম রাফি, অর্থ সম্পাদক শেখ আল আমিন, প্রচার সম্পাদক আবসার নবী হামজা, দক্ষতা উন্নয়ন সম্পাদক হাসানুল বান্না ও প্রায় পাঁচ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন