ইসরাইলের দূরনিয়ন্ত্রিত ‘বিস্ফোরক রোবট’ আতঙ্কে গাজাবাসী

ইসরাইল-হামাসের যুদ্ধবিরতির ধ্বংসস্তূপে ফিরছেন গাজার হাজার হাজার মানুষ। তবে ফিরার পরে দেখতে পাচ্ছেন ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনো পড়ে আছে ইসরাইলের ‘বিস্ফোরক রোবট’। যেগুলোর বেশিরভাগই অবিস্ফোরিত, রয়েছে নীরব ও মারাত্মক বিপজ্জনক অবস্থায়।
গাজার জাবালিয়া, শেখ রাদওয়ান, আবু ইস্কান্দারসহ বিভিন্ন এলাকায় ২০২৪ সালের মে মাসে ইসরাইল প্রথমবার জাবালিয়া শরণার্থী ক্যাম্পে এসব রোবট ব্যবহার করে। এরপর থেকে এগুলো উত্তর গাজায় আতঙ্কের প্রতীক হয়ে ওঠে। তবে যুদ্ধবিরতির আগ পর্যন্ত প্রতিদিন প্রায় ৩০০টি আবাসিক ভবন ধ্বংস করা হচ্ছিল বলে জানায় ইউরো-মেড হিউম্যান রাইটস মনিটর।
জানা যায়, এই রোবটগুলো বিস্ফোরক ভর্তি সাঁজোয়া যান, যেগুলোকে বুলডোজার দিয়ে নির্দিষ্ট এলাকায় টেনে নিয়ে দূরনিয়ন্ত্রণে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। গাজা সিটি সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল জানান, এসব রোবটের ধ্বংস পরিধি প্রায় ৫০০ মিটার পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। জাবালিয়ার শরিফ শাদি বলেন, ‘বিস্ফোরক রোবট ঢোকার কয়েক সেকেন্ডেই পুরো ব্লকটা ধ্বংস হয়ে যায়।’ তিনি এক সকালে দেখেন, একটি ডি১০ বুলডোজার একটি রোবট টেনে তাদের ব্লকের দিকে নিচ্ছে। তিনি দৌড় শুরু করেন, কিন্তু ১০০ মিটার দূর যেতে না যেতেই বিশাল বিস্ফোরণে ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়েন।
মানব অধিকার সংস্থা ইউরো-মেড মনিটর বলেছে, এসব রোবটের ধ্বংসলীলা ‘নিষিদ্ধ অস্ত্রের শ্রেণীতে’ পড়ে এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকায় এর ব্যবহার ‘যুদ্ধাপরাধ’ হিসেবে গণ্য হয়। তবে ইসরাইলি সেনাবাহিনী এসব অস্ত্র ব্যবহারের কথা স্বীকার করেনি। ফিলিস্তিনি মেডিক্যাল রিলিফ সোসাইটির পরিচালক ডা: মোহাম্মদ আবু আফাশ জানান, বিস্ফোরণের পর এসব রোবট থেকে বিষাক্ত গ্যাস ও ভারী ধাতব ধোঁয়া নির্গত হয়, যা তীব্র শ্বাসকষ্ট ও বিষক্রিয়ার কারণ। মানুষের বারবার শ্বাসরোধ, বুকে ব্যথা ও স্নায়বিক দুর্বলতার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন