আলোচনায় ‘রেফারি’ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টাকে চায় জামায়াত
জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে মতভেদ দূর করতে আলোচনার প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে জামায়াতে ইসলামী। তবে আলোচনায় ‘রেফারি’ হিসেবে প্রধান উপদেষ্টার ভূমিকা থাকা জরুরি বলে মনে করছেন দলটির নায়েবে আমির সৈয়দ আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের।
সোমবার (৩ নভেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনে খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। সেখানে জামায়াতসহ সমমনা আটটি দলের শীর্ষ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।
আবদুল্লাহ মুহাম্মদ তাহের বলেন, “উপদেষ্টা পরিষদের সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই। তবে যদি উপদেষ্টারা মনে করেন তাদের দায়িত্ব এখানেই শেষ, তাহলে আলোচনায় রেফারির অভাব দেখা দেবে। তাই আমরা আশা করি, প্রধান উপদেষ্টা আগের মতোই রেফারির ভূমিকা পালন করবেন।”
এর আগে অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা পরিষদের সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সরকার এখন আর কোনো আলোচনার উদ্যোগ নেবে না। রাজনৈতিক দলগুলো নিজেদের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছাক—এই আহ্বান জানানো হয়।
জুলাই সনদ বাস্তবায়ন নিয়ে বিএনপি ও জামায়াতের অবস্থান আলাদা। গণভোটের সময় ও পদ্ধতি নিয়ে দুটি দলের মধ্যে স্পষ্ট মতবিরোধ রয়েছে। আবার অভ্যুত্থান-পরবর্তী নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টির সঙ্গেও কিছু বিষয়ে মতপার্থক্য আছে।
এই প্রেক্ষাপটে আবদুল্লাহ তাহের বলেন, “মূল রাজনৈতিক দলগুলো যদি আলোচনার আহ্বানে সাড়া দেয়, তাহলে আমরা বসতে প্রস্তুত। বসলেই সমাধানের পথ বেরিয়ে আসবে, ইনশা আল্লাহ।”
বিএনপি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “একটি দল হঠাৎ করে ঐকমত্য থেকে সরে এসেছে। তাদের ভেতরেও সংস্কার ও গণভোট বিষয়ে ভিন্নমত রয়েছে। তারা যদি আলোচনায় আসে, তাহলে জটিলতা অনেকটাই কমে যাবে।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই সনদ বাস্তবায়ন ছাড়া গণভোটের কোনো অর্থ নেই। নির্বাচনের আগে বা পরে গণভোট করে লাভ হবে না। সনদের জন্য আলাদা গণভোট অপরিহার্য।”
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব ইউনুছ আহমাদ, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব ইউসুফ সাদিক হক্কানী, নেজামে ইসলাম পার্টির মহাসচিব মাওলানা মুসা বিন ইযহার, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ, জাগপার মুখপাত্র রাশেদ প্রধানসহ বিভিন্ন ইসলামী ও জাতীয়তাবাদী দলের নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির সৈয়দ মুহাম্মদ রেজাউল করীম (চরমোনাই পীর) বিএনপিসহ জুলাই অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া রাজনৈতিক দলগুলোকে আলোচনায় বসার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মামুনুল হক বলেন, “আমরা আন্তরিকভাবে চাই, রাজনৈতিক দলগুলো আলোচনার মাধ্যমে ঐকমত্যে পৌঁছাক। আমরা সেই স্পেস রেখে এগিয়ে যাচ্ছি।”
বৈঠকে অংশ নেওয়া আটটি দল হলো—জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ নেজামে ইসলাম পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) এবং বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট পার্টি।
মন্তব্য করুন





