হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসেবে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ভারতীয় অ্যাপ ‘আরাত্তাই’

ভারতে জনপ্রিয় মেসেজিং অ্যাপ হোয়াটসঅ্যাপের বিকল্প হিসেবে দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে দেশীয় অ্যাপ ‘আরাত্তাই’। দেশটির প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান জোহো করপোরেশন তৈরি করেছে এই বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপটি, যা সম্প্রতি ব্যাপকভাবে আলোচনায় এসেছে।
মার্কেট গবেষণা সংস্থা সেন্সর টাওয়ার জানিয়েছে, মাত্র এক সপ্তাহে ৭ মিলিয়ন বার ডাউনলোড হয়েছে ‘আরাত্তাই’-এর। অথচ আগস্ট মাসে এর ডাউনলোড সংখ্যা ছিল মাত্র ১০ হাজারের মতো।
‘আরাত্তাই’ শব্দটি তামিল ভাষার, যার অর্থ ‘আলাপ-আলোচনা’। ২০২১ সালে সীমিত পরিসরে চালু হলেও তেমন সাড়া মেলেনি। কিন্তু সরকারের ‘আত্মনির্ভর ভারত’ (স্বনির্ভর ভারত) প্রচারণা ও দেশীয় প্রযুক্তি ব্যবহারের উৎসাহে অ্যাপটির জনপ্রিয়তা হঠাৎ বেড়ে গেছে।
জোহোর সিইও মণি ভেম্বু জানিয়েছেন, সরকারি সমর্থনের কারণে অ্যাপটির ব্যবহার বেড়েছে অবিশ্বাস্যভাবে। তাঁর ভাষায়, “মাত্র তিন দিনে দৈনিক সাইনআপ ৩ হাজার থেকে বেড়ে ৩ লাখ ৫০ হাজারে পৌঁছেছে।”
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, হোয়াটসঅ্যাপের ৫০ কোটি মাসিক সক্রিয় ব্যবহারকারীর সঙ্গে প্রতিযোগিতা করা সহজ নয়। ভারতে শুধু ব্যক্তিগত নয়, ব্যবসা ও সরকারি যোগাযোগেও হোয়াটসঅ্যাপ ব্যবহৃত হয়—যা নতুন কোনো অ্যাপের জন্য বিশাল চ্যালেঞ্জ।
‘আরাত্তাই’-তে হোয়াটসঅ্যাপের মতো চ্যাট, ভয়েস ও ভিডিও কল, ব্যবসায়িক টুলস ব্যবহারের সুবিধা আছে। প্রতিষ্ঠানটির দাবি, কম দামের ফোন ও দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগেও অ্যাপটি ভালোভাবে কাজ করে।
তবে তথ্য-গোপনীয়তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা। যদিও ভয়েস ও ভিডিও কলে ‘এন্ড-টু-এন্ড এনক্রিপশন’ চালু রয়েছে, বার্তাগুলোর ক্ষেত্রে তা এখনো কার্যকর হয়নি।
জোহো জানিয়েছে, খুব শিগগিরই বার্তাগুলোর এনক্রিপশন চালু করা হবে এবং ব্যবহারকারীর তথ্যের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ থাকবে ব্যবহারকারীর হাতেই।
তবে প্রযুক্তি বিশ্লেষকদের মতে, হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুকের মতো প্রতিষ্ঠিত অ্যাপের বাজারে একটি দেশীয় অ্যাপের টিকে থাকা এখনো বড় চ্যালেঞ্জ।
‘আরাত্তাই’ এই বাধা পেরিয়ে ভারতের ডিজিটাল দুনিয়ায় নিজের স্বতন্ত্র জায়গা তৈরি করতে পারে কি না—এখন সেটিই দেখার বিষয়।
মন্তব্য করুন