logo
  • রোববার, ২৬ অক্টোবর ২০২৫, ১১ কার্তিক ১৪৩২

ড. ইউনূস বলেছেন, জাতিসংঘকে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে হবে।

অনলাইন ডেস্ক
  ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:৩০
ছবি :সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, শান্তি ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার যৌথ আকাঙ্ক্ষা পূরণের জন্য জাতিসংঘকে সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে ক্রমাগত বিকশিত হতে হবে।

তিনি বলেন, “যদি জাতিসংঘ আমাদের সবার শান্তি ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতার স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চায়, তবে তাকে অবশ্যই পরিবর্তিত বৈশ্বিক বাস্তবতার সঙ্গে অভিযোজিত হতে হবে। আমরা জাতিসংঘের সংস্কারের পক্ষে— যাতে এটি আরও গতিশীল, অন্তর্ভুক্তিমূলক ও পরিবর্তনশীল বিশ্বের চাহিদা অনুযায়ী সাড়া দিতে সক্ষম হয়।”

২৪ অক্টোবর জাতিসংঘ দিবস উপলক্ষে দেওয়া এক বার্তায় অধ্যাপক ইউনূস এ কথা জানান। এ বছর জাতিসংঘ প্রতিষ্ঠার ৮০ বছর পূর্তি উদ্‌যাপিত হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, “এই তাৎপর্যপূর্ণ দিনে আমরা অঙ্গীকার করছি যে জাতিসংঘ সনদে বর্ণিত শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বিশ্ব গঠনে বাংলাদেশ তার দায়িত্ব পালন অব্যাহত রাখবে।”

বাংলাদেশের জনগণের পক্ষ থেকে অধ্যাপক ইউনূস জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রসমূহ, অংশীদার এবং সংশ্লিষ্ট সকলকে ‘জাতিসংঘ দিবস’-এর শুভেচ্ছা জানান।

তিনি বলেন, “এই দিনটি হলো ভয় ও অভাবমুক্ত একটি পৃথিবী গড়ার অঙ্গীকার পুনর্নবীকরণের সুযোগ। একই সঙ্গে এটি বহুপাক্ষিক সহযোগিতা ও ঐকমত্যের যে চেতনা জাতিসংঘ ধারণ করে, তা পুনর্জাগরণেরও সময়।”

অধ্যাপক ইউনূস উল্লেখ করেন, গত আট দশকে জাতিসংঘ তার কার্যক্রমের ক্ষেত্র ব্যাপকভাবে বিস্তৃত করেছে এবং বিশ্বব্যাপী সম্পৃক্ততা আরও গভীর করেছে।

তার ভাষায়, “শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষা, মানবাধিকার সুরক্ষা এবং টেকসই উন্নয়ন ও মানবকল্যাণে জাতিসংঘ একটি অগ্রগণ্য ভূমিকা পালন করছে।”

তিনি আরও বলেন, ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘে যোগদানের পর থেকে বাংলাদেশ একটি সক্রিয়, দায়িত্বশীল এবং অবদানশীল সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে।

“শান্তির সংস্কৃতির পতাকা হাতে নিয়ে বাংলাদেশ জাতিসংঘের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ শান্তিরক্ষা মিশনগুলোতে অংশ নিয়েছে এবং শীর্ষ শান্তিরক্ষী অবদানকারী দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম অবস্থানে রয়েছে,” যোগ করেন তিনি।

অধ্যাপক ইউনূস স্মরণ করিয়ে দেন, “আমাদের অনেক সাহসী শান্তিরক্ষী বিশ্বে শান্তি প্রতিষ্ঠার প্রয়াসে সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ করেছেন।”

তিনি আরও বলেন, টেকসই উন্নয়ন, বাণিজ্য কিংবা জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা— যেকোনো ক্ষেত্রেই বাংলাদেশসহ বৈশ্বিক দক্ষিণের দেশগুলো নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে।

“তবে উদ্বেগের বিষয় হলো, একতরফা সিদ্ধান্ত ও বৈষম্যমূলক দ্বিপাক্ষিক আচরণের কারণে বিশ্বে উত্তেজনা ক্রমেই বাড়ছে,” তিনি উল্লেখ করেন।

সাম্প্রতিক সংঘাতসমূহ বিশ্বকে গভীর অনিশ্চয়তায় ফেলেছে জানিয়ে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, “আমাদের স্বীকার করতে হবে, বহুপাক্ষিক কূটনীতি এখন কঠিন পরীক্ষার মুখে। চরম জাতীয়তাবাদ ও মানবিক কষ্টের প্রতি উদাসীনতা মানবজাতির দীর্ঘদিনের অর্জনকে বিপন্ন করছে।”

তিনি বলেন, “আজ বিশ্বের মানুষ গাজার ভয়াবহ গণহত্যা সরাসরি প্রত্যক্ষ করছে।”

অধ্যাপক ইউনূস আরও বলেন, “আমাদের নিজস্ব অঞ্চলেও আমরা রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়ন ও অধিকারবঞ্চনার সাক্ষী। এটি সাংস্কৃতিক পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ফল, এবং এ বিষয়ে আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের নতুন মনোযোগ কামনা করছি।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
গাজায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না 
“খাদ্য আসলেও তা যথেষ্ট নয়, তাই দুর্ভিক্ষের প্রভাব অব্যাহত রয়েছে।”
জাতিসংঘে নতুন মহাসচিব নির্বাচনের দৌড় শুরু: আলোচনায় লাতিন আমেরিকার তিন প্রার্থী
২ বছর পর গাজার ৩ লাখ শিশুর পড়ালেখা শুরু
12