ঢাকার নদী রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় নতুন প্রকল্প চূড়ান্ত: রিজওয়ানা হাসান
ঢাকার চারপাশের নদী রক্ষায় বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় একটি বড় প্রকল্প চূড়ান্ত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, প্রকল্পটি আগামী ডিসেম্বরে অনুমোদন পাবে।
শনিবার (২৫ অক্টোবর) বিকেলে গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার শীতলক্ষ্যা নদীতে ‘ধাঁধার চর’ পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন তিনি।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “নদীগুলোকে বাঁচাতে আমাদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে হবে। দূষণকারীদের কেন্দ্রীয় ইটিপি (বর্জ্য শোধনাগার)–এর আওতায় আনতে হবে, প্রয়োজনে কিছু প্রতিষ্ঠান বন্ধও করতে হবে। পাশাপাশি শিল্পমালিকদেরও দায়িত্ব নিতে হবে।”
তিনি জানান, নতুন প্রকল্পে পরিবেশ অধিদপ্তরের জন্য আলাদা নজরদারি টিম, অতিরিক্ত জনবল ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
নদী দূষণ ও নজরদারি প্রসঙ্গে
পরিবেশ উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের দেশে শুধু শিল্প দূষণ নয়, পয়ঃবর্জ্য ও কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনাতেও বড় ঘাটতি রয়েছে। সব খাতের সমন্বিত উদ্যোগেই নদীগুলোকে রক্ষা করা সম্ভব।” তিনি জানান, বর্তমানে চারজন ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে যতটুকু সম্ভব, ততটুকু অভিযান চালানো হচ্ছে।
সেন্ট মার্টিন দখলকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে সরকার বলেও জানান রিজওয়ানা হাসান। তিনি বলেন, “পলিথিনের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। এর ফলে এখন সুপারমার্কেটগুলোতে পলিথিন পাওয়া যাচ্ছে না।”
‘ধাঁধার চর’ নিয়ে মন্তব্য
ধাঁধার চরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা বিষয়ে প্রশ্নের জবাবে রিজওয়ানা হাসান বলেন, “যদি এখানে বাণিজ্যিক পরিকল্পনা করা হয়, তবে এটি দখলদারদের হাতে চলে যাবে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য নষ্ট হবে।” তিনি প্রস্তাব করেন, চরটিকে একটি “ন্যাচারাল লার্নিং সেন্টার” হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে, তবে সেখানে স্থলপথে যাতায়াত না থাকা একটি সীমাবদ্ধতা।
নদীপথে যাত্রা ও সচেতনতার বার্তা
এর আগে সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জের কাঞ্চন ঘাট থেকে নদী ও পরিবেশকর্মীদের একটি জাহাজ শীতলক্ষ্যা ও পুরাতন ব্রহ্মপুত্রের মোহনায় জেগে ওঠা ধাঁধার চরের উদ্দেশে যাত্রা করে। যাত্রায় যোগ দেন পরিবেশ উপদেষ্টা রিজওয়ানা হাসানসহ দেশি-বিদেশি পরিবেশকর্মীরা।
দিনভর নদীর গল্প, আড্ডা, গান, ছবি আঁকা ও মুক্ত আলোচনা চলতে থাকে। অংশগ্রহণকারীরা নদী ও প্রকৃতি রক্ষায় সচেতনতা গড়ে তোলার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন সুইডেন দূতাবাসের জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ বিভাগের প্রধান নায়োকা মার্টিনেস বেক্সস্ট্রম, পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক সোলায়মান হায়দার, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপসচিব মোহাম্মদ মোবাশ্বেরুল ইসলাম, বিআইডব্লিউটিএর পরিচালক এ কে এম আরিফ উদ্দিন, বাপার সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবির ও বাংলাদেশ রিভার ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মনির হোসেন।
মন্তব্য করুন


