গাজায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা UNRWA কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না
গাজায় জাতিসংঘের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ (UNRWA) আর কোনো কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও। একই সঙ্গে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে গাজার শাসন ব্যবস্থায় হামাসের কোনো অংশগ্রহণও থাকবে না।
শুক্রবার ইসরায়েল সফরকালে এক সংবাদ সম্মেলনে রুবিও দাবি করেন, ইউএনআরডব্লিউএ “হামাসের সহযোগী সংস্থায়” পরিণত হয়েছে। তাঁর এই মন্তব্যের সমালোচনা করেছে জাতিসংঘ ও ইউএনআরডব্লিউএ, যারা জানান, “গাজায় মানবিক সহায়তা কার্যক্রমে ইউএনআরডব্লিউএর ভূমিকার বিকল্প নেই।”
জাতিসংঘ মহাসচিবের উপপ্রবক্তা ফারহান হক বলেন, “ইউএনআরডব্লিউএর সঙ্গে হামাসের কোনো সম্পর্ক নেই। গাজায় মানবিক সহায়তার মেরুদণ্ড হলো এই সংস্থা।”
এর আগে ইসরায়েল কিছু কর্মীর বিরুদ্ধে প্রমাণ ছাড়াই হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগ এনে ইউএনআরডব্লিউএর কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, রুবিওর মন্তব্য সংস্থাটির জন্য “বিধ্বংসী” এবং “অবাককর”।
ইউএনআরডব্লিউএকে আন্তর্জাতিক বিচার আদালত (ICJ) ও দুটি স্বাধীন তদন্ত কমিশন নির্দোষ ঘোষণা করেছে। সংস্থাটির হাজারো কর্মী এবং বিশাল ত্রাণ কাঠামো গাজায় সহায়তা কার্যক্রম পরিচালনা করছে।
মার্কিন মধ্যস্থতায় যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও ইসরায়েল গাজায় হামলা অব্যাহত রেখেছে। শুক্রবার দেইর আল-বালাহ এলাকায় গোলাবর্ষণে দুইজন নিহত হন। রাফাহ সীমান্তও এখনও বন্ধ থাকায় ত্রাণ প্রবেশ ব্যাহত হচ্ছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, যুদ্ধবিরতির শর্ত অনুযায়ী দৈনিক ৬০০ ট্রাক ত্রাণ প্রবেশের কথা থাকলেও তা হয়নি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) জানায়, সহায়তা প্রবেশের হার খুব কম, এবং ক্ষুধা পরিস্থিতির কোনো উন্নতি হয়নি।
রুবিও বলেন, গাজায় যুদ্ধবিরতি পর্যবেক্ষণে আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা বাহিনী গঠনের পরিকল্পনা চলছে। এতে অংশগ্রহণকারীদের বিষয়ে ইসরায়েলের সম্মতি প্রয়োজন হবে। তুরস্ক, ইন্দোনেশিয়া ও সংযুক্ত আরব আমিরাত ইতোমধ্যে এতে সহযোগিতার আগ্রহ জানিয়েছে।
এদিকে কায়রোতে বৈঠকে ফিলিস্তিনি বিভিন্ন গোষ্ঠী সিদ্ধান্ত নিয়েছে, গাজার প্রশাসন একটি স্বাধীন প্রযুক্তিনির্ভর অন্তর্বর্তী কমিটির হাতে দেওয়া হবে, যারা আরব ও আন্তর্জাতিক সংস্থার সহায়তায় বেসামরিক জীবনযাত্রা পরিচালনা করবে।
হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য হুসাম বাদরান বলেন, সব ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী “জনগণের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গি” গ্রহণ করেছে।
এখন পর্যন্ত ২.১ মিলিয়নের বেশি মানুষ বারবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, ঘরবাড়ি ধ্বংস, রাস্তা অবরুদ্ধ, এবং উদ্ধারকাজ চলছে সীমিত সম্পদে। গাজা সিটি থেকে আল জাজিরা জানায়, অনেকে ধ্বংসস্তূপে ফিরছেন “কিছুই না থাকা ঘরে”— যেখানে পানি, খাদ্য, কিংবা নিরাপদ আশ্রয়ের কোনো ব্যবস্থা নেই।
মন্তব্য করুন






