ভারতের উত্তর প্রদেশে
মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে ১৫ জনের মৃত্যু, আহত বহু

ভারতের উত্তর প্রদেশের এলাহাবাদে মহাকুম্ভ মেলায় পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৫ জনে দাঁড়িয়েছে। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। বুধবার (২৯ জানুয়ারি) ভোরে এ ঘটনা ঘটে বলে নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় কর্মকর্তারা।
প্রতি বছর লাখ লাখ হিন্দু ভক্ত পবিত্র স্নান করতে কুম্ভমেলায় আসেন। এ বছরও বিশাল জনসমাগম হয়েছিল। ড্রোন ফুটেজে দেখা গেছে, লাখো মানুষ ভোরের অন্ধকারে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পবিত্র স্নানে অংশ নিতে আসছেন।
পদদলনের পরের দৃশ্যে দেখা গেছে, নিহতদের স্ট্রেচারে তুলে নেওয়া হচ্ছে, অনেকে আতঙ্কে কাঁদছেন এবং তীব্র ভিড় থেকে পালানোর চেষ্টা করছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, অনেক শিশু ও নারী হারিয়ে গিয়েছিলেন এবং সাহায্যের জন্য চিৎকার করছিলেন।
রয়টার্সের এক প্রত্যক্ষদর্শী বলেন, "আমি বেশ কয়েকটি লাশ দেখেছি, এবং নদীর তীরের দিকে দ্রুত ছুটে যাচ্ছিল অ্যাম্বুলেন্স।"
কর্তৃপক্ষ দ্রুত র্যাপিড অ্যাকশন ফোর্স মোতায়েন করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উদ্ধার কাজ এখনো চলমান রয়েছে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং দ্রুত সহায়তার ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে নির্দেশ দিয়েছেন।
মহাকুম্ভ মেলা বিশ্বের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় সমাবেশ। গত দুই সপ্তাহে ১৪৮ মিলিয়ন মানুষ এই উৎসবে অংশ নিয়েছেন। এবারের মেলা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ছিল, কারণ ১৪৪ বছর পর বিরল গ্রহসংযোগের কারণে এই দিনটিকে অত্যন্ত শুভ বলে মনে করা হয়।
হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বিশ্বাস, গঙ্গা, যমুনা ও সরস্বতী নদীর সংযোগস্থলে স্নান করলে পাপমুক্তি ঘটে এবং পুনর্জন্মের চক্র থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
সাধু রবিশঙ্কর পুরী বলেন, "আমরা স্নানের প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। কিন্তু এই মর্মান্তিক ঘটনা শুনে সিদ্ধান্ত নিয়েছি স্নান বাতিল করব।"
এই বিশাল জনসমাগম সামাল দিতে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা, চিকিৎসাকর্মী, বিশেষ ট্রেন ও বাস ব্যবস্থা রাখা হয়েছিল। এমনকি কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (AI) সফটওয়্যার ব্যবহার করে জনসমাগম পরিচালনার চেষ্টা করা হয়েছিল। তবে এত প্রস্তুতির পরও এ ধরনের মর্মান্তিক দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হয়নি।
মন্তব্য করুন