logo
  • সোমবার, ২০ অক্টোবর ২০২৫, ৫ কার্তিক ১৪৩২

মিরপুরের ‘কালো উইকেট’ এখন বাংলাদেশের নতুন আশার আলো

অনলাইন ডেস্ক
  ২০ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:৪৩
ছবি: সংগৃহীত

মিরপুরের শের-ই-বাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামের উইকেট মানেই যেন বিতর্কের আরেক নাম। সময়ের সঙ্গে তাল মিলিয়ে এ নিয়ে চলছে অবিরাম আলোচনা ও সমালোচনা। ব্যাটারদের জন্য এটি চ্যালেঞ্জ, আবার বোলারদের জন্য আশীর্বাদ—এই দুইয়ের মাঝে ভারসাম্য খুঁজে পাওয়া যেন সবসময়ই কঠিন। চলমান ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজেও দেখা যাচ্ছে সেই পুরোনো চিত্র।

আগের কিউরেটর গামিনি ডি সিলভাকে যেসব অভিযোগে সরানো হয়েছিল, সেই একই সমালোচনার মুখে এবার বিসিবির নতুন টার্ফ ম্যানেজমেন্ট প্রধান, অস্ট্রেলিয়ান কিউরেটর টনি হেমিং। তার তত্ত্বাবধানে তৈরি উইকেটেও ব্যাটাররা মারাত্মকভাবে হিমশিম খাচ্ছেন। তবুও দেশের দুই সাবেক অধিনায়ক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু ও মোহাম্মদ আশরাফুল এই ‘কালো উইকেট’-এ দেখছেন নতুন সম্ভাবনার আলো।

তাদের মতে, ২০২৭ সালের বিশ্বকাপে সরাসরি জায়গা পেতে হলে আইসিসি র‍্যাংকিংয়ে উন্নতি করতেই হবে বাংলাদেশকে। বর্তমানে ১০ নম্বরে থাকা দলটি যদি ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে জেতে, তাহলে তারা এক ধাপ উপরে উঠে ৯ নম্বরে পৌঁছাবে। নান্নু ও আশরাফুলের যুক্তি—এই পরিস্থিতিতে ঘরের মাঠের সুবিধা কাজে লাগানো দোষের নয়, বরং সেটাই বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ।

নান্নু গতকাল বলেন, “মিরপুরের প্রায় সব উইকেটই একই ধরনের। চাইলে ফ্ল্যাট উইকেট বানানো সম্ভব, কিন্তু এখন দলের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন ফলাফল। তাই দলের শক্তি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নিতে হবে।” তার মতে, মিরপুরের উইকেটে বল টার্ন করে ও বাউন্স করে, ফলে ব্যাটারদের টিকে থাকা কঠিন। “এখানে ব্যাটারদের কাজ সীমিত। প্রথম ওয়ানডেতে আমাদের ব্যাটাররা ধৈর্য ধরে রান করেছে, সেটিই প্রশংসনীয়,” যোগ করেন তিনি।

অন্যদিকে আশরাফুল মনে করেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে মিরপুরের এই কালো উইকেটই বাংলাদেশের ভরসা। তিনি বলেন, “আমরা এখন টেবিলের ১০ নম্বরে, ৯ নম্বরে উঠতেই হবে বিশ্বকাপে সরাসরি খেলতে। এই তিন ম্যাচ খুব গুরুত্বপূর্ণ। এই উইকেটে আমরা ফেভারিট, ফ্ল্যাট উইকেট হলে খেলা অন্যরকম হতো।”

তার মতে, উইকেট নিয়ে নেতিবাচক আলোচনার পরিবর্তে এটিকে সুযোগ হিসেবে দেখা উচিত। “দলের আত্মবিশ্বাস ফেরাতে এমন উইকেট দরকার ছিল। ওয়েস্ট ইন্ডিজ ভারতে ফ্ল্যাট উইকেটে ভালো খেলেছে, কিন্তু এখানে তাদের পরীক্ষা নেওয়া দরকার। এখন মনোযোগ দিতে হবে দলের মনোবল ফেরানোর দিকে,” বলেন তিনি।

আশরাফুল আরও বলেন, “বিশ্বকাপের আগে বড় টুর্নামেন্টের প্রস্তুতিতে যথাযথ কন্ডিশনের প্র্যাকটিস হবে। এখন দরকার আত্মবিশ্বাস। মিরপুরে এমন উইকেট সবসময়ই থাকে, এবারেরটা শুধু একটু বেশি কালো, কারণ ঘাস দেওয়া হয়নি। তবে খেলোয়াড়রা এতে অভ্যস্ত, তারা জানে কীভাবে খেলতে হয়।”

এই কালো উইকেটের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বাংলাদেশের নতুন আশা—রিশাদ হোসেন। বহু বছর ধরে একজন মানসম্পন্ন লেগ স্পিনারের খোঁজে ছিল বাংলাদেশ। জুবায়ের হোসেন লিখন, তানবীর হায়দার কিংবা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব—সবাই এসেছিলেন উজ্জ্বল শুরু নিয়ে, তারপর হারিয়ে গেছেন। কিন্তু রিশাদ ভিন্নধর্মী। ধীরে ধীরে নিজের জায়গা পোক্ত করেছেন, আর প্রথম ওয়ানডেতেই ৬ উইকেট নিয়ে রেকর্ড গড়ে জানিয়েছেন, বাংলাদেশের ঘূর্ণি আক্রমণে উঠেছে নতুন সূর্য।

সব মিলিয়ে, যে উইকেট নিয়ে এত সমালোচনা, সেটিই এখন বাংলাদেশের শক্তির প্রতীক হয়ে উঠছে। ব্যাটারদের জন্য কঠিন হলেও, এই বোলিংবান্ধব উইকেট হয়তো ২০২৭ বিশ্বকাপের পথে বাংলাদেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তাই মিরপুরের কালো উইকেটই এখন বাংলাদেশের আশার আলো’।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
স্পিনের প্রস্তুতিতে ছোট ব্যাটে অনুশীলন বাংলাদেশ দলের
যুদ্ধবিরতির মধ্যেও ইসরায়েলের হামলায় নিহত অন্তত ৯৭ ফিলিস্তিনি
১৭৬.৫ কিলোমিটার গতিতে বোলিং করেছেন স্টার্ক!
পাকিস্তানি হামলায় তিন ক্রিকেটার নিহত, ত্রিদেশীয় সিরিজ থেকে সরে দাঁড়াল আফগানিস্তান
12