অতিরিক্ত ওজন থেকে হতে পারে যেসব রোগ

আধুনিক জীবনের ব্যস্ততা, অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং শারীরিক পরিশ্রমের অভাবের কারণে আজকাল অনেক মানুষই অল্প বয়সেই ওজন বাড়িয়ে ফেলছেন। এই অতিরিক্ত ওজন শরীরে নানা ধরনের জটিলতার সৃষ্টি করে। বিশেষজ্ঞদের মতে, স্বাভাবিক ওজনের চেয়ে বেশি হলে শরীরের প্রায় সব অঙ্গ-প্রত্যঙ্গে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
হৃদরোগ ও উচ্চ রক্তচাপ:
দেহে অতিরিক্ত চর্বি জমতে জমতে রক্তনালীর ভিতরে ব্লক তৈরি করে। এর ফলে হার্ট অ্যাটাক, হার্ট ফেইলিওর এবং হাই ব্লাড প্রেসারের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায়। বিশেষ করে যাদের পেটে বেশি মেদ জমে, তাদের ক্ষেত্রে এই ঝুঁকি তুলনামূলকভাবে বেশি।
টাইপ-২ ডায়াবেটিস:
স্থুলতা এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিসের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। শরীরে অতিরিক্ত মেদ ইনসুলিনের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়, ফলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, অধিকাংশ স্থুল ব্যক্তি একসময় টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হন।
স্ট্রোক:
ওজন বেড়ে গেলে রক্তচাপ এবং কোলেস্টেরলের মাত্রাও বেড়ে যায়। এতে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয়, যা স্ট্রোকের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয়।
শ্বাসকষ্ট ও স্লিপ অ্যাপনিয়া:
অনেক স্থুল ব্যক্তির ক্ষেত্রে রাতে ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হয়ে আসে, যাকে স্লিপ অ্যাপনিয়া বলা হয়। এটি ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় এবং হৃদরোগের ঝুঁকিও বাড়িয়ে তোলে।
হাড় ও জয়েন্টে ব্যথা:
বাড়তি ওজনের চাপ হাড় ও সন্ধিগুলোর (joint) উপর পড়ে, বিশেষ করে হাঁটু, কোমর এবং পিঠে। এর ফলে ব্যথা, অস্টিওআর্থ্রাইটিস এবং হাড় ক্ষয়ের মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে।
ক্যানসারের ঝুঁকি:
গবেষণা অনুযায়ী, অতিরিক্ত ওজন স্তন, কোলন, কিডনি এবং জরায়ুর ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে।
লিভারের সমস্যা:
দেহে অতিরিক্ত ফ্যাট জমে লিভারে ফ্যাটি লিভার তৈরি হয়। সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এটি সিরোসিস কিংবা লিভার ক্যানসারে পরিণত হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্য ও আত্মবিশ্বাস:
স্থুলতা অনেকের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব, হীনমন্যতা এবং ডিপ্রেশনের জন্ম দেয়, যা ব্যক্তির সামাজিক জীবনেও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
তথ্যসূত্র: বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO), সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (CDC), মায়ো ক্লিনিক।
মন্তব্য করুন