logo
  • বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫, ৭ কার্তিক ১৪৩২

বিএনপি নাকি জামায়াত, কার সাথে জোট করবে এনসিপি

অনলাইন ডেস্ক
  ২২ অক্টোবর ২০২৫, ১৫:৪০

আগামী জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে রাজনৈতিক অঙ্গনে জোট ও আসন সমঝোতা নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। এর মধ্যে সবচেয়ে আলোচনায় রয়েছে গণঅভ্যুত্থানের নেতৃত্ব দেওয়া জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)—তারা কি বিএনপি না জামায়াতের সঙ্গে যাবে, নাকি এককভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে?

দলের ভেতর এবং বাইরে এখন এই প্রশ্নই সবচেয়ে বেশি আলোচিত।

বিএনপি ও জামায়াত—দুই দিকেই আলোচনা

বিবিসি বাংলার এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, এনসিপি বিএনপি ও জামায়াত—দুই দলের সঙ্গেই অনানুষ্ঠানিক আলোচনা চালাচ্ছে। দলের একটি অংশ মনে করছে, জামায়াতের সঙ্গে সরাসরি জোট না করে শুধু নির্বাচনী সমঝোতা করাই ভালো হবে।

অন্য অংশটি বিএনপির সঙ্গে জোট বা আসন ভাগাভাগির পক্ষে।

তবে দলটির একাংশ মনে করছে, কোনো বড় জোটে না গিয়ে এনসিপির নেতৃত্বে স্বতন্ত্র বা মধ্যপন্থী জোট গঠন করাই হবে সবচেয়ে কৌশলগত সিদ্ধান্ত।

বিএনপির সঙ্গে সম্পর্কের জটিলতা

বিএনপির সঙ্গে এনসিপির সম্পর্ক শুরু থেকেই টানাপোড়েনপূর্ণ।
সংস্কার ইস্যুতে দুই দলের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে। বিএনপি নেতারা প্রায়ই এনসিপির ছাত্র উপদেষ্টাদের নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য করেছেন, আবার এনসিপিও প্রকাশ্যে বিএনপির সমালোচনা করেছে।

এমনকি এনসিপির কিছু কর্মসূচিতে বিএনপি নেতাকর্মীদের হামলা ও বাধা দেওয়ার অভিযোগও রয়েছে।

তবুও, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু বলেছেন, “রাজনীতিতে শেষ কথা বলে কিছু নেই। মাঠের পরিস্থিতি দেখে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

এনসিপির মধ্যে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতার পক্ষ বলছে, যদি ৩০–৪০টি আসনে ছাড় দেওয়া হয়, তাহলে তারা বিএনপির জোটে যেতে রাজি।

তবে অন্য পক্ষের শঙ্কা—বিএনপির নেতারা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে দাঁড়ালে সেটি এনসিপির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে।

জামায়াত নিয়ে দ্বিধা ও সম্ভাবনা

এনসিপি ও জামায়াতের সম্পর্ক শুরুতে বন্ধুত্বপূর্ণ থাকলেও জুলাই সনদ ও পিআর পদ্ধতি নিয়ে সাম্প্রতিক টানাপোড়েন সম্পর্ককে জটিল করেছে।

এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম সম্প্রতি জামায়াতের পিআর আন্দোলনকে “রাজনৈতিক প্রতারণা” বলে মন্তব্য করেছেন, যার পাল্টা জবাব দিয়েছে জামায়াত নেতারা।

তবুও জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল এহসানুল মাহবুব জোবায়ের বলেছেন, “এনসিপির সঙ্গে সমঝোতা বা জোট গঠনের সুযোগ আছে। আমরা আলোচনা করছি।”

এনসিপির ‘মধ্যপন্থী জোট’ ভাবনা

দলটির একাংশ এখন আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব (পিআর) পদ্ধতিতে উচ্চকক্ষ গঠন নিয়ে সরকারের সিদ্ধান্তের অপেক্ষায় আছে।

যদি সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলো ঐকমত্যে পৌঁছায়, তাহলে এনসিপি বিএনপি–জামায়াত উভয়ের বাইরে থেকে একটি স্বতন্ত্র জোট গঠনের চিন্তা করছে।

একজন কেন্দ্রীয় নেতা জানিয়েছেন, “পিআর পদ্ধতি চালু হলে এনসিপি এককভাবে বা মধ্যপন্থী জোট করে ৩০০ আসনেই প্রার্থী দিতে পারে।”

তাদের পরিকল্পনায় রয়েছে, বিএনপি ও জামায়াতের বিদ্রোহী অংশকেও মনোনয়ন দেওয়া হতে পারে।

তবে সবশেষ তথ্য অনুযায়ী, এনসিপি এখনো কোনো জোট বা আসন সমঝোতার বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি।

বিএনপি ও জামায়াত উভয়ের সঙ্গে যোগাযোগ থাকলেও, মধ্যপন্থী ও স্বতন্ত্র জোটের দিকেই ঝুঁকছে দলটি।

আগামী নির্বাচনে এনসিপি কোন পথে হাঁটবে—তা এখন দেশের রাজনীতির অন্যতম আলোচিত প্রশ্ন।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12