বিক্ষোভের মুখে জুলাই সনদের পঞ্চম দফা সংশোধন করল জাতীয় ঐকমত্য কমিশন

ক্ষোভ ও বিক্ষোভের মুখে জুলাই জাতীয় সনদের অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফা সংশোধন করেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। আজ শুক্রবার বেলা ২টার দিকে কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়।
আগের দফায় বলা হয়েছিল, ফ্যাসিবাদবিরোধী সংগ্রাম ও ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানকালে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার এবং শহীদ ও আহতদের সহায়তা নিশ্চিত করা হবে। তবে সংশোধিত দফায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে—ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কতিপয় সদস্যদের দ্বারা সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের বিচার করা হবে।
নতুন দফায় আরও বলা হয়েছে, শহীদ পরিবারকে রাষ্ট্রীয় মর্যাদা দেওয়া হবে। আহতদের ‘রাষ্ট্রীয় বীর’ হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। তাঁদের মাসিক ভাতা, সুচিকিৎসা, পুনর্বাসন, আইনগত দায়মুক্তি ও মৌলিক অধিকার সুরক্ষার নিশ্চয়তাও থাকবে।
দফাটি নিয়ে আপত্তি তুলেছিলেন নিজেদের ‘জুলাই শহীদ পরিবার ও আহত যোদ্ধা’ পরিচয় দেওয়া একটি গোষ্ঠী। বৃহস্পতিবার রাতে তাঁরা জাতীয় সংসদ ভবনের সামনের মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে বিক্ষোভ করেন। আজ সকালে তাঁরা সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ‘জুলাই সনদ ২০২৫’-এর স্বাক্ষর অনুষ্ঠানস্থলে অবস্থান নেন।
পরে পুলিশ তাঁদের সরিয়ে দেয়। এসময় লাঠিচার্জ, সংঘর্ষ, ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর হয় এবং আগুন জ্বলতে দেখা যায়। বিক্ষোভকারীদের কয়েকজন আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
বিক্ষোভের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ আজ সকাল ১১টা ৮ মিনিটে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দেন। সেখানে তিনি দফাটি সংশোধনের পক্ষে মত দেন।
তিনি লিখেন, ২০২৪ সালের ছাত্র গণ–অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ ফ্যাসিস্ট বাহিনী ও তাদের অনুগত আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা নিরীহ আন্দোলনকারীদের ওপর গণহত্যা চালায়। তবে প্রতিরোধের মুখে কিছু ‘গাদ্দার’ প্রাণ হারায়, যাদের বিচার ইতোমধ্যেই জনতার আদালতে সম্পন্ন হয়েছে।
সালাহউদ্দিনের প্রস্তাবিত মতের সঙ্গে মিল রেখেই জাতীয় ঐকমত্য কমিশন দফাটি সংশোধন করেছে বলে কমিশনের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়। এতে বলা হয়, “জুলাই বীর যোদ্ধাদের দাবির প্রতিফলন ঘটিয়ে অঙ্গীকারনামার পঞ্চম দফা সংশোধন করা হয়েছে।”
মন্তব্য করুন