বিমান মাইলস্টোনে না পড়ে সচিবালয়ে পড়া উচিত ছিল : হাসনাত আব্দুল্লাহ
জনপ্রশাসনের অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) দক্ষিণাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক হাসনাত আব্দুল্লাহ। তিনি বলেন, “বিমান মাইলস্টোন স্কুলে না পড়ে সচিবালয়ে পড়া উচিত ছিল।”
রোববার (২৬ অক্টোবর) বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনে (পিএসসি) বিসিএস পরীক্ষার অগ্রগতি বিষয়ক আলোচনায় অংশ নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, “সচিবালয় এখন সবচেয়ে বড় স্বৈরতন্ত্র ও গুণ্ডামির আস্তানা হয়ে উঠেছে। সেখানে সাধারণ মানুষ হিসেবে আমাদের গণ্যই করা হয় না। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অনিয়ম ও দৌরাত্ম্য বন্ধ না হলে চাকরিপ্রার্থীরা লাল ফিতার শৃঙ্খল থেকে মুক্তি পাবে না। এটি আমাদের জন্য সত্যিই দুর্ভাগ্য।”
তিনি আরও বলেন, “জুলাই গণ–অভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল বিসিএসের বৈষম্য রোধের দাবিতে, কিন্তু আজও পিএসসির কার্যক্রমে সমন্বয়হীনতা রয়ে গেছে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এখনো ভাগ-বাটোয়ারা ও পোস্টিং নিয়েই ব্যস্ত।”
সাম্প্রতিক বিমান দুর্ঘটনার প্রসঙ্গ টেনে এনসিপি নেতা বলেন, “বিমানটি যদি মাইলস্টোনে না পড়ে সচিবালয়ে পড়ত, তাহলে হয়তো দুর্নীতির মূল জায়গাটাতেই আঘাত হতো।”
এই মন্তব্যের মাধ্যমে তিনি সরকারি প্রশাসনের অকার্যকারিতা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
হাসনাত বলেন, “জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়কে এখনই সংস্কার করা জরুরি। তাদের অগ্রাধিকার তালিকায় চাকরিপ্রার্থীরা নেই। যারা দায়িত্বে আছেন, তারা সময়ের সঙ্গে তাল মেলাতে পারছেন না। এই অদক্ষতা ও উদাসীনতার কারণেই নতুন প্রজন্মের মধ্যে ক্ষোভ সৃষ্টি হচ্ছে।”
তিনি অভিযোগ করেন, “অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বেশি সুবিধা নিয়েছে আমলারা। তারা নিজেদের পদোন্নতি নিশ্চিত করেছে, কিন্তু সাধারণ চাকরিপ্রার্থীদের দুর্ভোগ কমেনি।”
বিসিএস সংস্কার প্রসঙ্গে হাসনাত বলেন, “পিএসসি আন্তরিকভাবে সংস্কারের চেষ্টা করছে। বিসিএস এক বছরের মধ্যে শেষ করার সুপারিশও করা হয়েছে। তবে চাকরি বিধি সংশোধনের এখতিয়ার জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের হাতে। তারা যদি অনিয়ম বন্ধ করতে না পারে, তাহলে লাল ফিতার দৌরাত্ম্য থেকেই যাবে।”
তিনি রাজনৈতিক প্রভাবিত ভাইভা নিয়েও সমালোচনা করেন। বলেন, “যোগ্যতার ভিত্তিতে মূল্যায়ন না হলে বিসিএস কখনোই স্বচ্ছ ও ন্যায়সংগত হতে পারে না।”
হাসনাত আব্দুল্লাহর এই বক্তব্যে প্রশাসনিক সংস্কার, দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ ও স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়া নিয়ে নতুন করে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
মন্তব্য করুন





