উন্নয়নশীল দেশগুলোর আঞ্চলিক সহযোগিতাই টেকসই ভবিষ্যতের চাবিকাঠি: সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেছেন, বাইরের অর্থায়ন না থাকলেও উন্নয়নশীল দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে। তিনি আঞ্চলিক সহযোগিতা, কমিউনিটি ক্ষমতায়ন এবং মানুষকেন্দ্রিক নীতিকে টেকসই উন্নয়নের মূল ভিত্তি হিসেবে গুরুত্ব দেন।
মঙ্গলবার (৫ নভেম্বর) রাতে পাকিস্তানের ইসলামাবাদের মোভেনপিক, সেন্টোরাস-এ আয়োজিত ২৮তম সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট কনফারেন্সের সম্মানিত অতিথিদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান জানান।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, “মানুষ যদি জলবায়ু বিপর্যয়ে ভোগে এবং নিরাপদ পানি না পায়, তবে উন্নয়নের কোনো অর্থ থাকে না।” তাই ব্যয়বহুল মেগা প্রকল্পের পরিবর্তে সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠীর সুরক্ষায় মনোযোগ দেওয়ার প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, সরকার, সিভিল সোসাইটি ও বেসরকারি খাত একযোগে কাজ করলে জনগণের হতাশা ইতিবাচক পরিবর্তনের শক্তিতে রূপ নিতে পারে। তার মতে, প্রকৃত স্থিতিস্থাপকতা গড়ে তুলতে হবে নিচ থেকে—সহযোগিতা, আচরণগত পরিবর্তন ও জনআস্থা অর্জনের মাধ্যমে।
রাজনৈতিক বিভাজন ও স্বার্থপরতার কারণে জাতীয় ও আঞ্চলিক অগ্রাধিকার দুর্বল হয়ে পড়ছে বলে সতর্ক করেন উপদেষ্টা। তিনি বলেন, শ্রীলঙ্কা থেকে নেপাল পর্যন্ত সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিবর্তনগুলো হতে পারে শাসনব্যবস্থা পুনর্বিবেচনা, অর্থনৈতিক পথ নতুনভাবে নির্ধারণ এবং তরুণ নেতৃত্বকে এগিয়ে আনার সুযোগ।
বিশ্বব্যাপী তরুণদের আন্দোলনের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আজকের যুবসমাজ শুধু জলবায়ু ন্যায়বিচার নয়, গণতন্ত্র, স্বাধীনতা ও মর্যাদার দাবিও তুলছে। তিনি সতর্ক করেন, এখনই কাঠামোগত সংস্কার না আনলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে খাদ্য-পানির সংকট, চরম আবহাওয়া ও বাস্তুচ্যুতির ভয়াবহতার মুখোমুখি হতে হবে।
এসডিজি ও জলবায়ু অর্থায়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সুন্দর একটি ‘এসডিজি মেন্যু’ দেওয়া হলেও অর্ডার দেওয়ার মতো সম্পদ দেওয়া হয়নি। তিনি ‘লস অ্যান্ড ড্যামেজ ফান্ড’-এর কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন এবং জলবায়ু ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার বদলে ঋণ দেওয়ার নীতিকে সমালোচনা করেন।
অনুষ্ঠানে ২৩টি দেশের প্রতিনিধিদের স্বাগত জানান পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট সৈয়দ ইউসুফ রাজা গিলানি। এ সময় বক্তব্য দেন সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট পলিসি ইনস্টিটিউট (এসডিপিআই)-এর নির্বাহী পরিচালক ড. আবিদ কিউ. সুলেরি এবং পাথ-এর এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য ও ইউরোপ অঞ্চলের প্রধান নাবিল গোহীর।
মন্তব্য করুন





