জোটের ভাগাভাগি ও অভ্যন্তরীণ কোন্দলে ৬৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করেনি বিএনপি
আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে বিএনপি এখনো ৬৩টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। দলীয় সূত্র জানায়, এর মধ্যে ৩০টি আসন রাখা হয়েছে জোটের সহযোগী দলগুলোর জন্য, আর বাকি ৩৩টি আসনে অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব ও একাধিক শক্তিশালী প্রার্থীর কারণে সিদ্ধান্ত স্থগিত রয়েছে।
গত ৩ নভেম্বর বিএনপি ২৩৭টি আসনের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে। তবে বাকি আসনগুলো নিয়ে আলোচনা এখনো চলমান।
দলটির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য নাম প্রকাশ না করে জানান, “মিত্র দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। তাদের প্রার্থীর তালিকা পাওয়ার পর চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এক ফেসবুক পোস্টে দলীয় কর্মীদের কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের প্রতি আস্থা রাখার আহ্বান জানিয়ে বলেন, “যারা মনোনয়ন পাননি, তারাও যথাযথ দায়িত্ব ও সম্মান পাবেন।”
নীলফামারী-১, বগুড়া-২, পটুয়াখালী-৩, ঝিনাইদহ-২ ও ৪, পিরোজপুর-১, কিশোরগঞ্জ-৫, ঢাকা-১৩ ও ১৭, হবিগঞ্জ-১, সুনামগঞ্জ-২ ও ৪, সিলেট-৪ ও ৫, লক্ষ্মীপুর-১ ও ৪, ঢাকা-৭, ৯, ১০, ১৮ ও ২০, নারায়ণগঞ্জ-৪, চট্টগ্রাম-১৪ ও ১৫, নড়াইল-২, যশোর-৫ এবং ঝালকাঠি-১—এই আসনগুলো জোটের মিত্রদের জন্য ফাঁকা রাখা হয়েছে।
এর মধ্যে নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণঅধিকার পরিষদের নুরুল হক নুর ও রাশেদ খান, ১২ দলীয় জোটের মোস্তফা জামাল হায়দার ও সৈয়দ এইসানুল হুদা, এনডিএমের ববি হাজ্জাজ এবং বিএনপির সহযোগী দলগুলোর অন্যান্য নেতাদের জন্য আসন বরাদ্দ রাখার কথা রয়েছে।
অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বের কারণে বিএনপি আরও ৩০টি আসনে প্রার্থী ঘোষণা করতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে ঠাকুরগাঁও-২, দিনাজপুর-৫, নীলফামারী-৩, লালমনিরহাট-২, নওগাঁ-৫, নাটোর-৩, সিরাজগঞ্জ-১, পাবনা-১, ঝিনাইদহ-১, খুলনা-১, টাঙ্গাইল-৫, ময়মনসিংহ-১০, কিশোরগঞ্জ-১, মানিকগঞ্জ-১, মুন্সিগঞ্জ-৩, গাজীপুর-১ ও ৬, নরসিংদী-৩, রাজবাড়ী-২, মাদারীপুর-২, কুমিল্লা-২, ময়মনসিংহ-৪, বরিশাল-৩, চট্টগ্রাম-৩, ৬, ৯, ১১ এবং কক্সবাজার-২।
ঠাকুরগাঁও-২ আসনে মির্জা ফখরুল ইসলামের ভাই মির্জা ফয়সাল আমিন ও ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক মহাসচিব আব্দুস সালাম দুজনেই প্রার্থী হতে চান, যার কারণে সিদ্ধান্তে বিলম্ব হচ্ছে। একই অবস্থা আরও কয়েকটি আসনেও।
অন্যদিকে বগুড়ায় উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে যথাক্রমে বগুড়া-৭ ও বগুড়া-৬ আসনে প্রার্থী করায় নেতাকর্মীদের মধ্যে আনন্দের জোয়ার নেমেছে।
খালেদা জিয়ার মনোনয়ন ঘোষণার পর স্থানীয়রা মিছিল ও সমাবেশ করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করেন। গাবতলীর বাসিন্দা হেলাল উদ্দিন বলেন, “খালেদা জিয়া আবারও আমাদের এলাকা থেকে প্রার্থী হচ্ছেন, এটি আমাদের জন্য গর্বের।”
বগুড়া জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা বলেন, “তারেক রহমান তরুণদের আশা ও ভবিষ্যতের প্রতীক। জনগণ খালেদা জিয়া ও তারেক রহমান দুজনকেই বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে।”
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বাকি ৬৩ আসনের প্রার্থী তালিকা দ্রুতই প্রকাশ করা হবে, যাতে জোটের আসন বণ্টন ও অভ্যন্তরীণ ভারসাম্য একসঙ্গে নিশ্চিত করা যায়।
মন্তব্য করুন





