logo
  • বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

জ্বালানি সংকটে ২০ বিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ, আমদানিনির্ভরতায় বাড়ছে দেশের বিদ্যুৎ খাত

অনলাইন ডেস্ক
  ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ১৬:৫৮

জ্বালানির ঘাটতিতে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ব্যাহত হচ্ছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের অভাবে ১৩৫টি বিদ্যুৎকেন্দ্রের মধ্যে ১৫টির উৎপাদন পুরোপুরি বন্ধ। এছাড়া, কারিগরি ত্রুটিতে আরও পাঁচটি কেন্দ্র অচল হয়ে আছে।

ফলে বিদ্যুৎ উৎপাদনে বড় ধাক্কা লেগেছে। গ্যাসের অভাবে প্রায় সাড়ে চার হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন বন্ধ রয়েছে।

এদিকে তেল সংকটেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিদ্যুৎ খাত। ফার্নেস অয়েলভিত্তিক প্রায় ১০টি কেন্দ্র বন্ধ এবং ১৮টি কেন্দ্র কম সক্ষমতায় চলছে।

বর্তমানে দেশের দৈনিক গড় বিদ্যুৎ চাহিদা প্রায় ১৫ হাজার মেগাওয়াট। এর ১৬ শতাংশ আসছে আমদানি করা বিদ্যুৎ থেকে। বাংলাদেশ এখন ভারত ও নেপাল থেকে মোট ২,৬৯৬ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ আমদানি করছে— যার মধ্যে আদানি পাওয়ারের সরবরাহই ১,৪৯৬ মেগাওয়াট।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অতিরিক্ত আমদানিনির্ভরতা দেশের অর্থনীতির জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। ড. ইজাজ হোসেন বলেন, “আমরা সঠিকভাবে জ্বালানি সরবরাহ করতে পারলে নিজেরাই পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারতাম।”

জ্বালানি সচিব ফারজানা মমতাজ জানিয়েছেন, জ্বালানির ঘাটতি নিরসনে কাজ চলছে, তবে বিদ্যুৎ আমদানি বাড়ানোর কোনো পরিকল্পনা নেই।

জ্বালানি খাতের আন্তর্জাতিক বিশ্লেষক সংস্থা আইইইএফএ’র তথ্যে জানা যায়, ২০১৯-২০ অর্থবছরে মোট বিদ্যুৎ ব্যবহারে আমদানিকৃত বিদ্যুতের হার ছিল ৪০ শতাংশ। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ৬২ শতাংশে।

বিশেষজ্ঞদের মতে, এই প্রবণতা অব্যাহত থাকলে দেশের জ্বালানি নিরাপত্তা আরও হুমকির মুখে পড়বে। তারা নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দিয়েছেন।

বর্তমানে দেশে ১৩টি সৌরবিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে প্রায় ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে। তবে বায়ুশক্তিভিত্তিক কেন্দ্রগুলো কার্যত বন্ধ।

সরকারের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে নবায়নযোগ্য উৎস থেকে ২০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করা। তবে বাস্তবায়নের গতি এখনো খুব ধীর।

ড. ইজাজ হোসেন বলেন, “পরিকল্পনা থাকলেও বাস্তবায়নের ঘাটতি রয়েছে। সঠিক উদ্যোগ নিলে নবায়নযোগ্য খাত থেকেই এখন কয়েক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভব হতো।”

বিদ্যুৎ খাতের এই সংকট কাটাতে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা এবং কার্যকর বাস্তবায়নের ওপর জোর দিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12