logo
  • বুধবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৫, ২০ কার্তিক ১৪৩২

১ নভেম্বর থেকে উন্মুক্ত হচ্ছে সেন্ট মার্টিন, ইনানী থেকে জাহাজ চলবে না

অনলাইন ডেস্ক
  ২৮ অক্টোবর ২০২৫, ১৭:০৭
ছবি :সংগৃহীত

আগামী ১ নভেম্বর থেকে পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিন। কক্সবাজার শহরের নুনিয়ারছড়ার অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ঘাট থেকে পর্যটকবাহী জাহাজ দ্বীপে যাতায়াত করবে। তবে আইনগত কারণে উখিয়ার ইনানী থেকে সেন্ট মার্টিনগামী জাহাজ চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়নি।


পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় গত ২২ অক্টোবর দ্বীপে ভ্রমণের সময় পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় ১২টি নির্দেশনা উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করে। এর পরিপ্রেক্ষিতে সোমবার (২৭ অক্টোবর) মন্ত্রণালয় নৌপরিবহন অধিদপ্তর ও বিআইডব্লিউটিএকে নীতিগত সম্মতি দিয়ে পাঁচটি নির্দেশনা সম্বলিত একটি চিঠি পাঠায়।


চিঠিতে জানানো হয়, ১৯৯৯ সালের ১৯ এপ্রিল কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত সমুদ্র সৈকতকে প্রতিবেশ সংকটাপন্ন এলাকা (ইসিএ) ঘোষণা করা হয়েছে। এতে কক্সবাজার পৌর এলাকা, ইনানী মৌজা ও সেন্ট মার্টিন দ্বীপ অন্তর্ভুক্ত। বাংলাদেশ পরিবেশ সংরক্ষণ আইন অনুযায়ী, ইসিএ এলাকায় কোনো ক্ষতিকর কর্ম বা প্রক্রিয়া চালু রাখা বা শুরু করা যাবে না।


পরিবেশ অধিদফতর কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের পরিচালক মোহাম্মদ জমির উদ্দিন বলেন, “মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী আগের নিয়মেই কক্সবাজারের বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজে সেন্ট মার্টিনে যাওয়া যাবে। বিষয়টি সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের জানানো হয়েছে।”


সি ক্রুজ অপারেটর ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (স্কোয়াব) সাধারণ সম্পাদক হোসাইন ইসলাম বাহাদুর জানান, কক্সবাজার থেকে সেন্ট মার্টিন যেতে ছয় ঘণ্টা সময় লাগে। নভেম্বর মাসে রাত্রিযাপনের অনুমতি না থাকায় পর্যটকদের দ্বীপে থাকার সময় খুব সীমিত থাকবে। তিনি রাত্রিযাপনের বিধিনিষেধ পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানান।


পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের স্বীকৃত ওয়েব পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট ক্রয় করতে হবে। প্রতিটি টিকিটে কিউআর কোড সংযুক্ত থাকবে এবং অনুমোদনবিহীন কোনো নৌযান চলাচল করতে পারবে না। প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপে ভ্রমণ করতে পারবেন।


প্রজ্ঞাপন অনুযায়ী, নভেম্বর মাসে শুধুমাত্র দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে, রাত্রিযাপন নিষিদ্ধ থাকবে। ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি মিলবে, তবে ফেব্রুয়ারিতে পর্যটন কার্যক্রম সম্পূর্ণ বন্ধ থাকবে।


দ্বীপের প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় রাতে সৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বারবিকিউ পার্টি, কেয়াবনে প্রবেশ, সামুদ্রিক প্রাণী ও উদ্ভিদ সংগ্রহ বা ক্ষতি করা, এবং মোটরচালিত যানবাহন চলাচল নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এছাড়া পলিথিন ও একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক সামগ্রী বহন না করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


সেন্ট মার্টিন ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ফয়েজুল ইসলাম বলেন, “দ্বীপের মানুষ দীর্ঘদিন আয়বিহীন অবস্থায় কষ্টে আছে। পর্যটকরা তাদের জীবিকার আশীর্বাদ। রাত্রিযাপনের অনুমতি পেলে দ্বীপের মানুষের কিছুটা স্বস্তি ফিরবে।”


পরিবেশ রক্ষা ও পর্যটনের ভারসাম্য বজায় রেখে সেন্ট মার্টিনে ভ্রমণ আয়োজনের মধ্য দিয়েই দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও মানুষের জীবিকা রক্ষায় নতুন অধ্যায় শুরু হতে যাচ্ছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
চকরিয়ায় বাস-মাইক্রোবাস সংঘর্ষে একই পরিবারের পাঁচজনের মৃত্যু
নয় মাস পর খুলছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, সীমিত পর্যটনে ১২টি নির্দেশনা
৯ মাস পর আবার খুলছে সেন্ট মার্টিন, পর্যটকদের মানতে হবে ১২ নির্দেশনা
কক্সবাজার বিমানবন্দরে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল সাময়িকভাবে স্থগিত
12