সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ২০২৫ (আরপিও) জারি করেছে নির্বাচন কমিশন
নতুন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশন (ইসি) সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ২০২৫ (আরপিও) জারি করেছে। এই সংশোধিত আদেশে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনা হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে নির্বাচনের সময় নির্বাচন কমিশনকে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা দেওয়া, 'পলাতক' ঘোষিত প্রার্থীর সংসদ সদস্য হওয়ার অযোগ্যতা, এবং মিথ্যা তথ্য বা 'ফেক নিউজ' প্রকাশের ওপর দণ্ডনের বিধান।
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের পরিবর্তনগুলোর মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো একক প্রার্থীর বিরুদ্ধে 'না ভোট' অপশন চালু করা হয়েছে। কোনও আসনে যদি একমাত্র প্রার্থী থাকেন, তবে 'না ভোট' অপশনের মাধ্যমে ভোটগ্রহণ হবে। যদি 'না ভোট' অপশনের চেয়ে প্রার্থী বেশি ভোট পান, তবে তাকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে, তবে যদি 'না ভোট' বেশি হয়, নতুন নির্বাচনের জন্য তফসিল ঘোষণা করা হবে। দ্বিতীয়বারও একই পরিস্থিতিতে 'না ভোট' বেশি হলে, প্রার্থীকে নির্বাচিত ঘোষণা করা হবে।
এছাড়া, ইভিএম সংক্রান্ত পুরনো বিধানগুলো বাতিল করা হয়েছে, এবং পোস্টাল ব্যালট ব্যবহারের সুযোগ আরও বাড়ানো হয়েছে। প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্যও পোস্টাল ব্যালটের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে, যাতে তারা ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে ভোট দিতে পারেন।
আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন রয়েছে, যেমন প্রার্থীর মিথ্যা তথ্য বা বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালানো হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি, রাজনৈতিক দল, প্রচারণা সংস্থা বা গণমাধ্যম সংস্থাকে দায়ী করা হবে এবং শাস্তির আওতায় আনা হবে। মনোনয়নপত্রের সঙ্গে আয়কর রিটার্ন এবং সম্পদের পূর্ণ বিবরণী জমা দেওয়ারও নতুন নিয়ম তৈরি করা হয়েছে। প্রার্থীর জামানতের অর্থ ২০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকাও করা হয়েছে।
এছাড়া, ভোটকেন্দ্রে অপ্রয়োজনীয় প্রবেশের ক্ষেত্রে কঠোর বিধান রাখা হয়েছে। এক্ষেত্রে প্রিসাইডিং অফিসার বা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রয়োজন হলে ব্যক্তিকে সরিয়ে দিতে পারবেন বা গ্রেফতার করতে পারবেন।
ইসিকে নির্বাচন বন্ধ করার ক্ষমতা দেওয়ার মাধ্যমে, নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে আইনি বা দুর্নীতি সৃষ্টিকারী বাধা থাকলে কমিশন স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে নির্বাচন বন্ধ করতে পারবে। রাজনৈতিক দলের তহবিল স্বচ্ছতার জন্যও নতুন বিধান এসেছে, যার আওতায় রাজনৈতিক দলকে তাদের অনুদান স্বচ্ছভাবে প্রকাশ করতে হবে।
এছাড়া, ভোট গণনায় সমতা থাকলে শুধুমাত্র সমান ভোটপ্রাপ্ত প্রার্থীদের মধ্যে পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
এই নতুন সংশোধিত আদেশটি নির্বাচনী পরিবেশে স্বচ্ছতা ও বিশ্বাসযোগ্যতা আনার জন্য কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন





