logo
  • মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫, ১৯ কার্তিক ১৪৩২

বাংলাদেশ ব্যাংকের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্র জালিয়াতি, আত্মসাৎ ২৫ লাখ টাকা

অনলাইন ডেস্ক
  ২৯ অক্টোবর ২০২৫, ১৯:৫৫

বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয়ের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সঞ্চয়পত্রের টাকা আত্মসাৎ করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানিয়েছে, জালিয়াতরা অন্যের সঞ্চয়পত্র মেয়াদপূর্তির আগেই ভাঙিয়ে নিজেদের ব্যাংক হিসাবে অন্তত ২৫ লাখ টাকা স্থানান্তর করেছে, এবং আরও প্রায় ৫০ লাখ টাকা তোলার চেষ্টা করার সময় ঘটনাটি ধরা পড়ে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী, গ্রাহকের সঞ্চয়পত্রের আসল ও মুনাফা শুধুমাত্র সেই ব্যাংক হিসাবে দেওয়া হয়, যা কেনার সময় নিবন্ধিত থাকে। কিন্তু এবার দেখা গেছে, কিছু পাসওয়ার্ড অপব্যবহার করে গ্রাহকের অনুমতি ছাড়া সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সহকারী মুখপাত্র মোহাম্মদ শাহরিয়ার সিদ্দিকী বলেন, “সঞ্চয়পত্রের সিস্টেম পরিচালনাকারীদের কারও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই জালিয়াতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। যাঁদের হিসাবে টাকা গেছে, তাঁদের সবাইকে শনাক্ত করে মামলা করা হবে।”

গত বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল কার্যালয় থেকে ২৫ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র কেনেন এক গ্রাহক। তাঁর ব্যাংক হিসাব ছিল অগ্রণী ব্যাংকের জাতীয় প্রেসক্লাব শাখায়। কিন্তু মাত্র চার দিনের মাথায়—সোমবার—এই সঞ্চয়পত্র ভাঙানো হয় এবং টাকা চলে যায় এনআরবিসি ব্যাংকের দিনাজপুর উপশাখার এক ব্যক্তির হিসাবে। কিছু সময়ের মধ্যেই টাকা তুলে নেওয়া হয় রাজধানীর শ্যামলী শাখা থেকে।

একই দিনে আরও দুইটি জালিয়াতি প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়—ডাচ্-বাংলা ব্যাংকের মাধ্যমে ৩০ লাখ ও এনআরবি ব্যাংকের মাধ্যমে ২০ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর চেষ্টা করা হলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তা আটকায়।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, ভুক্তভোগী গ্রাহকেরা কেউই সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর আবেদন করেননি, তাঁদের ফোনে কোনো ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) যায়নি। প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, মতিঝিল অফিসের পাসওয়ার্ড ব্যবহার করেই জালিয়াতি সংঘটিত হয়েছে।

ফলে যেসব কর্মকর্তার কাছে সঞ্চয়পত্র বিক্রির পাসওয়ার্ড ছিল, তাঁদের দায়িত্ব থেকে সরিয়ে নতুন করে তিনজনকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন ব্যাংক পুলিশে মামলা প্রস্তুত করছে।

সঞ্চয়পত্র লেনদেনে দীর্ঘদিন ধরে গ্রাহকদের ব্যাংক পরিবর্তন সংক্রান্ত দুর্বলতা কাজে লাগানো হচ্ছে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। অনেকে ব্যাংক পরিবর্তনের আবেদন করায় কিছু ক্ষেত্রে নিরাপত্তা ফাঁক তৈরি হয়, যা জালিয়াতরা ব্যবহার করেছে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে।

জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, আগস্ট পর্যন্ত ৩ লাখ ৪০ হাজার ৭১ কোটি টাকার সঞ্চয়পত্র গ্রাহকদের নামে রয়েছে, যা দেশের ১২ হাজারেরও বেশি শাখা থেকে কেনা-বেচা করা হয়।

এনআরবিসি ব্যাংকের নতুন ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদুল আলম খান বলেন, “ঘটনার পরপরই আমরা ডিএমডির নেতৃত্বে তদন্ত কমিটি গঠন করেছি। কমিটি কাজ শুরু করেছে, খুব শিগগির বিস্তারিত জানা যাবে।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
আরও পড়ুন
ঋণের পঞ্চম কিস্তির শর্ত যাচাই করতে আইএমএফ রিভিউ মিশন ঢাকায়
ব্যাংকের টাকা লোপাট করে কাউকে পালিয়ে যেতে দেওয়া হবে না
মোবাইল ব্যাংকিং লেনদেন সীমা বাড়ানো, নতুন নিয়ম জানালো বাংলাদেশ ব্যাংক
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ পেছাল
12