নয় মাস পর খুলছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ, সীমিত পর্যটনে ১২টি নির্দেশনা
 
		
		
		
		
		দীর্ঘ নয় মাস পর আবারও পর্যটকদের জন্য খুলে দেওয়া হচ্ছে সেন্ট মার্টিন দ্বীপ। আগামীকাল, ১ নভেম্বর থেকে প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক দ্বীপটিতে ভ্রমণ করতে পারবেন। তবে দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য ও জীববৈচিত্র্য রক্ষায় মানতে হবে সরকারের ১২টি নির্দেশনা।
প্রবালসমৃদ্ধ এই দ্বীপে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি থেকে পর্যটক যাতায়াত বন্ধ ছিল। এবার নভেম্বর থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত তিন মাস ভ্রমণের অনুমতি থাকছে। পরিবেশ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, এ সময় দ্বীপের পরিবেশে ইতিবাচক পরিবর্তন ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, পর্যটকবাহী ইজিবাইক ও মোটরসাইকেলের চলাচল বন্ধ থাকায় সৈকতে শামুক-ঝিনুক ও লাল কাঁকড়ার সংখ্যা বেড়েছে। মা কাছিমের ডিম পাড়ার উপযোগী পরিবেশও তৈরি হয়েছে।
ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস)-এর চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মুজিবুল হক বলেন, পর্যটক সীমিত করার উদ্যোগে দ্বীপের পরিবেশের বড় উন্নতি হয়েছে। “এখন সৈকতজুড়ে নতুন প্রাণ ফিরে এসেছে,” বলেন তিনি।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. শাহিদুল আলম জানান, এবার নির্দেশনাগুলো কঠোরভাবে বাস্তবায়ন করা হবে। নিরাপত্তার কারণে এবার কক্সবাজার শহর থেকেই পর্যটকবাহী জাহাজ সেন্ট মার্টিনে যাবে।
বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ডের উপপরিচালক মহিবুল ইসলাম জানান, ভ্রমণের টিকিট অনলাইনে নির্ধারিত পোর্টাল থেকে কিনতে হবে। প্রতিটি টিকিটে ট্রাভেল পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট নকল হিসেবে গণ্য হবে।
পরিবেশ অধিদপ্তর জানিয়েছে, এবারও কক্সবাজারের নুনিয়ারছড়া বিআইডব্লিউটিএ ঘাট থেকে জাহাজ ছাড়বে। তবে ইনানী থেকে যাত্রা নিষিদ্ধ থাকবে।
সরকারের ১২ নির্দেশনার মধ্যে রয়েছে—
- অনুমোদন ছাড়া কোনো নৌযান চলবে না।
- নভেম্বর মাসে শুধু দিনের বেলায় ভ্রমণ করা যাবে, রাত যাপন নয়।
- ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে রাত্রিযাপনের অনুমতি থাকবে, ফেব্রুয়ারিতে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা।
- সৈকতে মোটরচালিত যান চলাচল নিষিদ্ধ।
- আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি বা বারবিকিউ পার্টি করা যাবে না।
- কেয়াবন, শামুক-ঝিনুক, কাছিম বা প্রবাল ক্ষতি করা নিষিদ্ধ।
- পলিথিন ও একবার ব্যবহার্য প্লাস্টিক বহনে নিরুৎসাহিত করা হয়েছে।
- পর্যটকদের নিজস্ব পানির ফ্লাস্ক সঙ্গে রাখার পরামর্শও দেওয়া হয়েছে।
দীর্ঘ বিরতির পর সেন্ট মার্টিনে ফের পর্যটক আগমনে উৎসাহ ফিরে এসেছে স্থানীয়দের মধ্যে। তবে সবার প্রত্যাশা—নতুন নিয়ম মেনে যেন দ্বীপের প্রাণবৈচিত্র্য অক্ষুণ্ন থাকে।
মন্তব্য করুন



