হিলি স্টেশনে ভুয়া ঘোষণার মাধ্যমে ৫৮০৫ কেজি ভায়াগ্রার চালান ধরা পড়েছে
ভারত থেকে আমদানি করা ৫ হাজার ৮০৫ কেজি সিলডেনাফিল সাইট্রেট (ভায়াগ্রা) আটক করে রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করেছে রংপুর কাস্টমস এক্সাইজ ও ভ্যাট কমিশনারেটের আওতাধীন হিলি স্থলবন্দরের কর্মকর্তারা। এটি দেশের ইতিহাসে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ভায়াগ্রা চালান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান উজালা পেইন্ট ট্রেডিং কোং ভারত থেকে “চায়না ক্লে পাউডার (রাবার গ্রেড)” ঘোষণায় এই চালানটি আমদানি করেছিল। তবে কাস্টমস কর্মকর্তাদের সন্দেহে চালানটি আটক করে কায়িক পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষায় দেখা যায়, ঘোষণার বাইরে বিপুল পরিমাণ ওষুধের কাঁচামাল রয়েছে, যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি — ৫,৮০৫ কেজি সিলডেনাফিল সাইট্রেট, যা ভায়াগ্রা নামেই পরিচিত।
এনবিআরের এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, আমদানি করা চায়না ক্লের ভেতরে বিশেষ কায়দায় লুকানো ছিল বিভিন্ন ওষুধের কাঁচামাল—মোট ৩৭ প্রকার। এর মধ্যে শুধু ভায়াগ্রার উপাদানই নয়, সেটিরিজিন, ক্লোরফেনিরামিন, ওমেপ্রাজল, ফেক্সোফেনাডিনসহ নানা উপাদানও ছিল। মোট ৩০,২৮৫ কেজি পণ্যের মধ্যে ১৪,৩১০ কেজি ছিল চায়না ক্লে, আর বাকি ১৫,৯৭৫ কেজি ওষুধের কাঁচামাল।
রংপুর কাস্টমস কমিশনারেটের তদন্তে প্রমাণিত হয়, উজালা পেইন্ট অনুমতি ছাড়া আমদানি নিয়ন্ত্রিত ও জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর ওষুধের কাঁচামাল এনেছে। ফলে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় এবং ১৪ অক্টোবর দেওয়া রায়ে চালানটি রাষ্ট্রের অনুকূলে বাজেয়াপ্ত করা হয়। পাশাপাশি, প্রতিষ্ঠানকে ২ কোটি ৯৪ লাখ টাকার ব্যক্তিগত জরিমানা ও ১ লাখ টাকা বিমোচন জরিমানা করা হয়।
প্রতিষ্ঠানটি দাবি করেছিল, ভারতের সরবরাহকারী ভুলবশত ওষুধের কাঁচামাল চায়না ক্লের চালানে যুক্ত করেছে। তবে কাস্টমস কর্মকর্তারা সেই দাবি গ্রহণ করেননি, কারণ ঘোষণা বহির্ভূত ওষুধের পরিমাণ ছিল বিশাল এবং এর প্যাকেজিংও সাংকেতিকভাবে আলাদা ছিল।
বিশেষজ্ঞদের মতে, আটক করা ৫,৮০৫ কেজি সিলডেনাফিল সাইট্রেট দিয়ে প্রায় ২৩ কোটি ২২ লাখটি ২৫ মিগ্রা ট্যাবলেট, ১১ কোটি ৬১ লাখটি ৫০ মিগ্রা ট্যাবলেট, অথবা ৫ কোটি ৮০ লাখটি ১০০ মিগ্রা ট্যাবলেট তৈরি করা সম্ভব।
এই ঘটনায় ২০১৯ সালের বেনাপোল কাস্টমসের ভায়াগ্রা জব্দের রেকর্ডও ছাড়িয়ে গেছে, যেখানে ২,৫০০ কেজি চালান আটক করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন



