দেশে অবৈধ মোবাইল আমদানি ৬০ শতাংশ, বছরে রাজস্ব ক্ষতি ২ হাজার কোটি টাকা
দেশের মোবাইল ফোন বাজারের প্রায় ৬০ শতাংশ অবৈধভাবে আমদানি হওয়ায় সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে বলে জানিয়েছে মোবাইল ফোন ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওনার্স অব বাংলাদেশ (এমআইওবি)। বুধবার রাজধানীর রাওয়া ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি এই তথ্য জানায়।
এমআইওবি’র মতে, অবৈধ মোবাইল বেচাকেনায় যেমন দেশীয় নির্মাতারা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন, তেমনি রাষ্ট্রও হারাচ্ছে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় আগামী ১৬ ডিসেম্বর চালু হতে যাওয়া ন্যাশনাল ইক্যুইপমেন্ট রেজিস্টার (এনইআইআর) কার্যকরভাবে বাস্তবায়নের আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি।
সংবাদ সম্মেলনে এমআইওবি সভাপতি জাকারিয়া শহীদ বলেন, “বর্তমানে বাজারে থাকা মোবাইল ফোনের প্রায় ৬০ শতাংশই অবৈধভাবে আমদানি করা হয়। এতে সরকারের বছরে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকার রাজস্ব ক্ষতি হচ্ছে।” তিনি আরও জানান, দেশে উৎপাদন সরঞ্জামের দাম ৬০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে গেলেও হ্যান্ডসেটের দাম বাড়ানো হয়নি। এনইআইআর চালু হলে মোবাইলের দাম বাড়বে না, বরং সরকারের আয় আরও বৃদ্ধি পাবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
তিনি অভিযোগ করেন, সরকারের এই উদ্যোগের বিরুদ্ধে একটি মহল বিভ্রান্তিকর প্রচারণা চালাচ্ছে এবং সাধারণ গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করছে। এ ধরনের প্রচারণার পেছনে ‘লাগেজ পার্টি’ জড়িত বলে দাবি করেন তিনি।
এমআইওবি’র সহ-সভাপতি রেদওয়ানুল হক বলেন, “একটি ব্র্যান্ড বাদে বিশ্বের প্রায় সব শীর্ষ ব্র্যান্ড এখন দেশে মোবাইল ফোন উৎপাদন করছে। দেশের ৯০ শতাংশ চাহিদা স্থানীয় কারখানায় পূরণ করা সম্ভব। আমাদের সক্ষমতা শতভাগ হলেও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ৬০ শতাংশ।” তিনি এনইআইআর যেন কোনোভাবেই বন্ধ না হয়, সে আহ্বান জানান।
স্মার্ট টেকনোলজিস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও অনার ব্র্যান্ডের দেশীয় উৎপাদক জহিরুল ইসলাম বলেন, “আইন মেনে দেশে মোবাইলফোন ব্যবসা করা এখন অনেক সহজ হয়েছে। অনেক উদ্যোক্তা বিনিয়োগে আগ্রহী হচ্ছেন। মোবাইল উৎপাদনের ফলে বিপুল কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে।”
তিনি জানান, বর্তমানে আইফোনের পুরো বাজারই অবৈধ আমদানির ওপর নির্ভরশীল, যা দেশের বৈধ বাজারের জন্য একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্চালনা করেন এমআইওবি’র প্রধান নির্বাহী মনিরুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন মোবাইলফোন ডিস্ট্রিবিউশন অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক রাহুল কপুরিয়া, মোবাইল কনজিউমার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মামুন, এক্সেল টেলিকমের নির্বাহী পরিচালক সাইফুদ্দিন এবং ভিভো বাংলাদেশের প্রতিনিধি ইমাম উদ্দীন।
মন্তব্য করুন


