সিঙ্গার বাংলাদেশ গত ৯ মাসে ১১৪ কোটি টাকার নিট ক্ষতির মুখে পড়েছে।
২০২৫ সালের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জানুয়ারি–সেপ্টেম্বর) প্রকৌশল খাতের বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান সিঙ্গার বাংলাদেশ লিমিটেড বড় ধরনের লোকসানের মুখে পড়েছে। বিক্রি বেড়েছে ঠিকই, কিন্তু কোম্পানিটি প্রায় ১১৩ কোটি ৮৮ লাখ টাকা নিট লোকসান দেখিয়েছে। বিষয়টি কোম্পানির তৃতীয় প্রান্তিকের (জুলাই–সেপ্টেম্বর) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনে প্রকাশ পেয়েছে, যা এক মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (PSI) হিসেবে প্রকাশ করা হয়েছে।
আর্থিক পারফরম্যান্স
প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৫ হিসাব বছরের প্রথম নয় মাসে সিঙ্গার বাংলাদেশের বিক্রি দাঁড়িয়েছে ১,৭৮১ কোটি টাকা, যেখানে আগের বছরের একই সময়ে বিক্রি ছিল ১,৫৪৬ কোটি টাকা। যদিও বিক্রি বেড়েছে, কর-পরবর্তী নিট লোকসান দাঁড়িয়েছে ১১৩.৮৮ কোটি টাকা—যেখানে আগের বছরে কোম্পানিটি ৫.০৫ কোটি টাকা নিট মুনাফা করেছিল।
শেয়ার ও সম্পদের অবস্থা
চলতি বছরে প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান (EPS) হয়েছে ১১ টাকা ৪২ পয়সা, যা আগের বছরের ৫১ পয়সা আয় থেকে অনেক নিচে।
২০২৫ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (NAVPS) দাঁড়িয়েছে ১৩ টাকা ৩৯ পয়সা।
লোকসানের কারণ
কোম্পানির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, উৎপাদন ব্যয় বেড়ে গেলেও প্রতিযোগিতার কারণে পণ্যের দাম বাড়ানো সম্ভব হয়নি। এছাড়া বিভিন্ন ছাড়, অফার ও প্রচারণা কার্যক্রমে ব্যয় বৃদ্ধি, পরিচালন খরচ এবং সুদ ব্যয়ের চাপ—সব মিলিয়ে লোকসানের পরিমাণ বেড়েছে।
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
সিঙ্গার জানিয়েছে, নতুন কারখানা চালু হলে উৎপাদন সক্ষমতা তিন গুণ বাড়বে। এতে ব্যয় কমে আসবে এবং ভবিষ্যতে কোম্পানিটি লাভজনক অবস্থায় ফিরবে বলে আশা করা হচ্ছে।
আগের বছরের পারফরম্যান্স
২০২৪ হিসাব বছরে সিঙ্গার বাংলাদেশ ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। সে বছর কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৪ টাকা ৯১ পয়সা, যেখানে আগের বছর আয় ছিল ৫ টাকা ২৪ পয়সা।
২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির NAVPS ছিল ২৫ টাকা ৮১ পয়সা।
মূলধন কাঠামো
-
অনুমোদিত মূলধন: ২৫০ কোটি টাকা
-
পরিশোধিত মূলধন: ৯৯ কোটি ৭০ লাখ ৩০ হাজার টাকা
-
রিজার্ভ: ১৫৫ কোটি ৮৬ লাখ টাকা
-
মোট শেয়ার সংখ্যা: ৯ কোটি ৯৭ লাখ ২ হাজার ৮৩৮
-
উদ্যোক্তা পরিচালক: ৫৭%
-
প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী: ২৯.৯১%
-
সাধারণ বিনিয়োগকারী: ১৩.০৯%
এইভাবে বিক্রি বাড়লেও ব্যয় ও সুদের চাপে সিঙ্গার বাংলাদেশের আর্থিক অবস্থায় বড় প্রভাব পড়েছে। তবে নতুন উৎপাদন পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে কোম্পানিটি আগামী বছরগুলোতে ঘুরে দাঁড়াতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
মন্তব্য করুন


