logo
  • সোমবার, ০৩ নভেম্বর ২০২৫, ১৮ কার্তিক ১৪৩২

চিড়িয়াখানাকে শুধু রাজস্ব বা বিনোদনের কেন্দ্র ভাবা ঠিক নয়: প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা

অনলাইন ডেস্ক
  ০২ নভেম্বর ২০২৫, ২০:৩৫

জাতীয় চিড়িয়াখানাকে কেবল রাজস্ব আয় বা বিনোদনের মানদণ্ডে দেখা উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার। তিনি বলেন, চিড়িয়াখানা দেশের বিশেষ পরিচয়ের প্রতীক হিসেবে গড়ে তোলা যেতে পারে, তবে সেখানে প্রাণীদের প্রতি মানবিক আচরণ নিশ্চিত করতে হবে।

রোববার (২ নভেম্বর) রাজধানীর ফার্মগেটের বাংলাদেশ তুলা উন্নয়ন বোর্ডের হলরুমে অনুষ্ঠিত ‘বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানার বর্তমান অবস্থা ও উন্নয়ন পরিকল্পনা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। কর্মশালার আয়োজন করে বাংলাদেশ জাতীয় চিড়িয়াখানা কর্তৃপক্ষ।

ফরিদা আখতার বলেন, “চিড়িয়াখানার সংকট দীর্ঘদিনের। কোনো একক ব্যক্তি বা শুধু পরিচালক চাইলেই এটি সমাধান করা সম্ভব নয়। এজন্য অধিদপ্তর, কর্মকর্তা, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে।”

তিনি জানান, চিড়িয়াখানার উন্নয়নে দ্রুত একটি সমন্বিত কমিটি গঠন করা হবে, যেখানে বিভিন্ন ক্ষেত্রের অভিজ্ঞ ব্যক্তিরা থাকবেন। “প্রয়োজনে প্রতি মাসে বৈঠক করে চিড়িয়াখানার উন্নয়নের দিকনির্দেশনা ঠিক করা হবে,” বলেন উপদেষ্টা।

প্রাণী সংরক্ষণ বিষয়ে তিনি বলেন, “সব প্রাণীকেই চিড়িয়াখানার ভেতরে আটকে রাখা উচিত নয়। যেসব প্রাণীর প্রাকৃতিক আবাসে টিকে থাকার সুযোগ আছে, সেগুলোকে পর্যায়ক্রমে সেখানে স্থানান্তরের চিন্তা করতে হবে।”

তিনি আরও বলেন, “যেসব প্রাণীর স্বাভাবিক মৃত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে, সেগুলো চিড়িয়াখানায় রাখা হবে কি না বা অন্যত্র স্থানান্তর করা উচিত কি না—এ নিয়েও আলোচনা প্রয়োজন।”

গবেষণা কার্যক্রমে প্রাণীদের সুরক্ষার ওপর জোর দিয়ে ফরিদা আখতার বলেন, “প্রাণীকে গবেষণার জন্য বাইরে পাঠানো হবে না। গবেষণা করতে হলে গবেষকদের চিড়িয়াখানায় থেকেই তা করতে হবে।”

কর্মশালায় সভাপতিত্ব করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবু সুফিয়ান। বিশেষ অতিথি ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব আবু তাহের মুহাম্মদ জাবের। তিনি বলেন, “আমাদের বড় সংকট হলো প্রাণীগুলোকে যথাযথভাবে রাখার ব্যবস্থা করা যাচ্ছে না, যার প্রধান কারণ জনবল ঘাটতি। আজকের কর্মশালা থেকে পাওয়া প্রস্তাবগুলো বাস্তবায়নের চেষ্টা করা হবে।”

স্বাগত বক্তব্য দেন অধিদপ্তরের পরিচালক (প্রশাসন) ডা. মো. বয়জার রহমান। মূলপ্রবন্ধ উপস্থাপন করেন চিড়িয়াখানার পরিচালক ড. মোহাম্মদ রফিকুল ইসলাম তালুকদার। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক কিউরেটর ডা. এ বি এম শহীদ উল্লাহ, শেরে বাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম ও ব্রিগেডিয়ার তৌহিদুর রহমান প্রমুখ।

ফরিদা আখতার বলেন, “চিড়িয়াখানা শুধু প্রাণী দেখার জায়গা নয়, এটি পরিবেশ, সংরক্ষণ ও শিক্ষা—তিন ক্ষেত্রেই দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার কেন্দ্র হতে পারে।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12