৬ মাসে নারী নির্যাতনের শিকার ১৫৫৫ জন, ধর্ষণের পর হত্যা ১৭ জনকে

চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত সময়ে দেশে নারী ও কন্যাশিশুদের বিরুদ্ধে সহিংসতার ভয়াবহ চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ। এই ছয় মাসে মোট ১,৫৫৫ জন নারী ও কন্যাশিশু নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ৭৩৬ জন কন্যাশিশু।
সোমবার (১ জুলাই) মহিলা পরিষদের নারী ও কন্যা নির্যাতন বিষয়ক জানুয়ারি-জুন মেয়াদের প্রতিবেদনটি গণমাধ্যমে পাঠানো হয়। প্রতিবেদনটি মহিলা পরিষদের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এইড উপ-পরিষদে সংরক্ষিত ১৫টি জাতীয় দৈনিকের প্রকাশিত সংবাদের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়কালে ৩৪৫ জন কন্যাশিশুসহ মোট ৪৮১ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। এর মধ্যে ৬২ জন শিশুসহ ১০৬ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়েছে ১০ জন শিশুসহ মোট ১৭ জন নারীকে।
এছাড়া, ৩৫ জন শিশুসহ যৌন নিপীড়নের শিকার হয়েছেন ৫১ জন নারী, এবং উত্ত্যক্তের শিকার হয়েছেন ২৫ জন শিশুসহ মোট ৩৪ জন। অন্যদিকে, হত্যা করা হয়েছে ৬১ জন শিশুসহ মোট ৩২০ জন নারীকে—যা নিছক পরিসংখ্যান নয়, বরং গভীর উদ্বেগ ও আতঙ্কের বিষয় বলে অভিহিত করছে মানবাধিকারকর্মীরা।
মহিলা পরিষদের প্রতিবেদনে আরও জানানো হয়, শুধু জুন মাসেই ৮৭ জন কন্যাশিশু এবং ১১৬ জন নারীসহ মোট ২০৩ জন নির্যাতনের শিকার হয়েছেন। এরমধ্যে ৪৩ জন শিশুসহ ৬৫ জন নারী ধর্ষণের শিকার হন। ৫ জন শিশুসহ ৮ জন নারী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন এবং ২ জন শিশুসহ ৩ জন নারীকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। একই সময়ে ৭ জন শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পরিসংখ্যান সমাজে নারী ও শিশুর নিরাপত্তাহীন অবস্থান, বিচারহীনতার সংস্কৃতি এবং আইনের কার্যকর প্রয়োগে ঘাটতির প্রতিফলন। মানবাধিকারকর্মীরা অবিলম্বে এসব ঘটনায় দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা এবং নারী ও শিশুর নিরাপত্তায় কার্যকর রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছেন।
মন্তব্য করুন