গাজা যুদ্ধ বন্ধে মধ্যস্থতাকারীদের প্রস্তাব পেয়েছে হামাস, চলছে আলোচনা

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস জানিয়েছে, গাজা যুদ্ধ বন্ধ, ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার এবং মানবিক সহায়তা নিশ্চিতের লক্ষ্যে মিসর ও কাতারের মধ্যস্থতায় যে নতুন শান্তি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে, তা তারা পেয়েছে এবং সেটি এখন গভীরভাবে পর্যালোচনা করা হচ্ছে।
বুধবার (৩ জুলাই) হামাসের পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, “আমরা অত্যন্ত দায়িত্বশীল মনোভাবে প্রস্তাবগুলো পর্যালোচনা করছি এবং জাতীয় পর্যায়ে পরামর্শ চালিয়ে যাচ্ছি। এই প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হলো—ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধ করা, দখলদার বাহিনীর সম্পূর্ণ প্রত্যাহার নিশ্চিত করা এবং গাজা উপত্যকার মানুষদের জরুরি মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া।”
বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করা হয়, “উভয় পক্ষের মধ্যে বিদ্যমান মতপার্থক্য দূর করে একটি গ্রহণযোগ্য কাঠামোগত সমঝোতায় পৌঁছাতে মধ্যস্থতাকারীরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। ভবিষ্যতের অর্থবহ আলোচনা ও স্থায়ী শান্তির জন্য একটি শক্ত ভিত্তি তৈরির লক্ষ্যেই এই প্রচেষ্টা।”
এদিকে মঙ্গলবার (২ জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেন, ইসরায়েল ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতির জন্য প্রয়োজনীয় শর্তসমূহ মেনে নিতে রাজি হয়েছে। তিনি বলেন, “এখন হামাসের উচিত এই প্রস্তাব গ্রহণ করা।”
তবে আন্তর্জাতিক মহল থেকে বারবার যুদ্ধবিরতির আহ্বান সত্ত্বেও ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া এই আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত ৫৭ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠই নারী ও শিশু।
উল্লেখ্য, গত বছরের নভেম্বর মাসে গাজায় যুদ্ধাপরাধ এবং মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়াওভ গালান্টের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে। একইসঙ্গে, গাজায় গণহত্যার অভিযোগে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতেও (আইসিজে) একটি মামলা চলছে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যস্থতাকারী দেশগুলোর এই উদ্যোগ নতুন করে শান্তির সম্ভাবনা জাগালেও বাস্তবায়নের পথে রয়েছে নানা রাজনৈতিক জটিলতা। এখন দেখার বিষয়, হামাস ও ইসরায়েল বাস্তবিক কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে কিনা।
মন্তব্য করুন