আবু সাঈদ হত্যা : পলাতক ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রথম শহীদ হিসেবে পরিচিত রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ হত্যাকাণ্ডে দায়ের করা মামলায় পলাতক সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক হাসিবুর রহমানসহ ২৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।
সোমবার (৩০ জুন) দুপুরে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এর বিচারকরা আনুষ্ঠানিক অভিযোগ আমলে নিয়ে এই আদেশ দেন।
এর আগে সোমবার সকালে মামলার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ট্রাইব্যুনালে দাখিল করা হয়। অভিযোগপত্রে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর, পুলিশের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ছাত্রলীগ নেতাসহ মোট ৩০ জনকে আসামি করা হয়েছে। তদন্তে তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আবু সাঈদ হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মিলেছে বলে জানানো হয়েছে।
গত ২৪ জুন মামলার তদন্ত প্রতিবেদন ও হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত অস্ত্র প্রসিকিউশনে জমা দেয় তদন্ত সংস্থা।
এ মামলার চার আসামি ইতোমধ্যে কারাগারে রয়েছেন। তারা হলেন—বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রক্টর শরিফুল ইসলাম, পুলিশের সাবেক সহকারী উপপরিদর্শক আমির হোসেন, কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায় এবং ছাত্রলীগ নেতা ইমরান চৌধুরী।
২০২৪ সালের ১৬ জুলাই দুপুরে রংপুরে সরকারি চাকরিতে কোটা সংস্কারের দাবিতে চলমান আন্দোলনের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে পার্ক মোড়ে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্যমতে, নিরস্ত্র অবস্থায় স্লোগান দেওয়া সাঈদকে কাছ থেকে লক্ষ্য করে গুলি করা হয়।
গুরুতর আহত অবস্থায় সহপাঠীরা তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন। ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারাদেশে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয় এবং কোটা সংস্কার আন্দোলনে নতুন গতি সঞ্চার হয়।
আবু সাঈদ ছিলেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক এবং জনপ্রিয় ছাত্রনেতা। তার হত্যাকাণ্ড দেশের তরুণ সমাজের মাঝে গভীর ক্ষোভ ও প্রতিবাদের জন্ম দেয়।
এই মামলার বিচার শুরু হলে তা হবে গণআন্দোলনের সময় পুলিশের গুলিতে শিক্ষার্থী হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে গঠিত দেশের অন্যতম আলোচিত বিচারিক প্রক্রিয়া। ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা গেছে, মামলার পরবর্তী শুনানির তারিখ শিগগিরই নির্ধারণ করা হবে।
মন্তব্য করুন