গণভোটের প্রস্তুতি নিতে সচিবদের নির্দেশ দিল ইসি
 
		
		
		
		
		আসন্ন গণভোটের প্রস্তুতি নিতে দেশের সব মন্ত্রণালয়, বিভাগ ও অধিদপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনে অনুষ্ঠিত সচিব পর্যায়ের বৈঠকে এই নির্দেশনা দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিন।
ইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সরকারের নির্দেশে জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট আয়োজনের প্রস্তুতি একসঙ্গে নেওয়া হবে। একই দিনে নির্বাচন ও গণভোট অনুষ্ঠিত হলে ভোটকেন্দ্র ও কর্মকর্তা সংখ্যা বাড়বে বলে জানানো হয়। আর পৃথক দিনে আয়োজন করলে দুই নির্বাচনের ব্যয়ের সংস্থান আগে থেকেই নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে।
মাঠপর্যায়ে সংস্কার ও প্রস্তুতি
বৈঠকে মাঠ প্রশাসনকে সারা দেশের হেলিপ্যাড সংস্কারের নির্দেশ দেওয়া হয়। অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ক্লাস্টারভিত্তিক মেডিকেল টিম গঠন করার নির্দেশও দেওয়া হয়েছে। এসব টিমে চিকিৎসক, নার্স ও প্রয়োজনীয় ওষুধ থাকবে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্থাপিত সিসি ক্যামেরা সচল রাখতে বলা হয়েছে, যাতে ভোটের ফুটেজ সংরক্ষণ ও অনিয়ম শনাক্ত করা যায়। একই সঙ্গে ভোটকেন্দ্রে যাতায়াতের রাস্তা মেরামতের দিকেও গুরুত্ব দিয়েছে কমিশন।
নির্বাচন ব্যবস্থাপনা ও নিরাপত্তা
বৈঠকে আচরণবিধি প্রতিপালনে ম্যাজিস্ট্রেট নিয়োগ, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্যানেল তৈরি, বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতকরণ এবং কারাবন্দিদের পোস্টাল ব্যালটে ভোট দেওয়ার সুযোগ রাখার বিষয়েও আলোচনা হয়।
সিইসি সচিবদের উদ্দেশে বলেন, “আপনারা সরকারি সফরে গেলে স্থানীয় প্রশাসনের নির্বাচনি প্রস্তুতি সম্পর্কেও খোঁজ নেবেন।”
নির্বাচন কমিশনার ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ জানান, “খসড়া ভোটকেন্দ্রের তালিকা তৈরি হয়েছে। গণভোট ও জাতীয় নির্বাচন একসঙ্গে হলে ভোটকেন্দ্র বাড়বে। তাই আগে থেকেই সংস্কার ও লজিস্টিক প্রস্তুতি নিতে হবে।”
বৈঠকে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র, জনপ্রশাসন, অর্থ, পররাষ্ট্র, আইন ও বিচার বিভাগসহ ৩১টি মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সচিবরা অংশ নেন।
অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নির্বাচনের ব্যয়ের অর্থ ছাড়ের বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নির্বাহী ও বিচারিক ম্যাজিস্ট্রেটদের সময়মতো নিয়োগের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।
ইসি সচিব আখতার আহমেদ জানান, ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন করার প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে।
তিনি বলেন, “শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর পরীক্ষা সময়সূচি নির্বাচনের সঙ্গে সমন্বয় করা হবে। ভোটকেন্দ্রগুলোর প্রবেশগম্যতা আগেই নিশ্চিত করতে স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।”
এছাড়া ভোটার সচেতনতা বাড়াতে সংসদ টেলিভিশন ও বিটিভি নিউজের ফ্ল্যাশ বার্তা ব্যবহার করা হবে। বিদেশি পর্যবেক্ষকদের ভিসা প্রক্রিয়া দ্রুত করতে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
ইসি আরও জানায়, পোস্টাল ব্যালট ব্যবস্থাকে আধুনিকায়নের জন্য একটি ট্রায়াল অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে, যা আগামী ১৬ নভেম্বর উদ্বোধন করা হবে।
ভুয়া তথ্য ও বিভ্রান্তি ঠেকাতে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে একটি মনিটরিং সেল গঠনের পরিকল্পনাও করেছে কমিশন।
সারসংক্ষেপে, ইসির এই বৈঠকে প্রশাসনিক, প্রযুক্তিগত ও স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নানা দিক পর্যালোচনা করে জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করার পূর্ণ প্রস্তুতির ওপর জোর দেওয়া হয়।
মন্তব্য করুন







