আয়াতুল্লাহ খামেনি কি সত্যিই রাসূল (সা.)-এর বংশধর?

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনিকে কেবল একজন রাজনীতিক হিসেবে বিবেচনা করা যথার্থ হবে না। তিনি একাধারে একজন প্রভাবশালী আলেম, ধর্মীয় চিন্তানায়ক এবং শাসনব্যবস্থার কুশলী চালক। ইসলামী মূল্যবোধ রক্ষায় তার দৃঢ় অবস্থান, শাসনক্ষমতায় দৃঢ়তা এবং ইসলামবিরোধী শক্তির বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট মতাদর্শ তাকে মুসলিম বিশ্বের অন্যতম শ্রদ্ধাভাজন নেতায় পরিণত করেছে। বিশেষ করে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে তার একক ও আপোষহীন অবস্থান বিশ্ব মুসলিমের কাছে তাকে এক অনন্য মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করেছে।
আয়াতুল্লাহ খামেনি ১৯৩৯ সালের ১৭ জুলাই ইরানের পবিত্র শহর মাশহাদে জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন বিশিষ্ট আলেম আয়াতুল্লাহ সৈয়েদ জাওয়াদ খামেনি। পারিবারিকভাবে তিনি শিয়াপন্থী আজেরি সাইয়্যিদ পরিবারের উত্তরসূরি। নিজেকে তিনি “হোসাইনী সাইয়্যেদ” হিসেবে পরিচয় দিয়ে থাকেন, যার অর্থ—তিনি মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র ইমাম হোসাইন (রাঃ)-এর বংশধর। যদিও এই দাবির জিনগত প্রমাণ এখনো মেলেনি, তবুও ইসলামী ঐতিহ্য ও বংশতালিকার ভিত্তিতে তার এই পরিচয় তাকে মুসলিম সমাজে বাড়তি ধর্মীয় গ্রহণযোগ্যতা দিয়েছে।
রেডিও ফারডা ডটকম, উইকিপিডিয়া এবং বিভিন্ন গবেষণা তথ্যে উঠে এসেছে, খামেনি পরিবারের শেকড় বর্তমান ইরান, আজারবাইজান, নাজাফ এবং তাফরেশ অঞ্চলে বিস্তৃত। তাদের দাবি—তারা ইসলামের চতুর্থ ইমাম আলী ইবনে হুসেন জয়নুল আবেদিনের বংশধর।
আয়াতুল্লাহ খামেনির রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৯ সালের ঐতিহাসিক ইসলামি বিপ্লবের মধ্য দিয়ে। বিপ্লবের অন্যতম মুখ ও ইমাম রুহুল্লাহ খোমেনির ঘনিষ্ঠ সহচর হিসেবে তিনি সক্রিয় ছিলেন। বিপ্লবের পর তিনি ইরানের প্রথম আলেম রাষ্ট্রপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। আর ১৯৮৯ সালে খোমেনির মৃত্যুর পর তিনি ইরানের সর্বোচ্চ নেতা হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেন। আজও তিনি সেই পদে অধিষ্ঠিত, এবং দেশ-বিদেশে ইসলামী নেতৃত্বের প্রতীকে পরিণত হয়েছেন।
আল্লাহভীতি, প্রজ্ঞা ও নেতৃত্বের দৃঢ়তায় আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি আজও ইরানের নীতি নির্ধারণ এবং বিশ্ব মুসলিম রাজনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র।
মন্তব্য করুন