সাভারে ড্যাফোডিল ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে আহত দেড় শতাধিক, বাসে আগুন
সাভারের আশুলিয়ায় বেসরকারি ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি ও সিটি ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের মধ্যে ভয়াবহ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। রোববার রাতে শুরু হওয়া এই সংঘর্ষে অন্তত দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। এ সময় সিটি ইউনিভার্সিটির তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেওয়া হয় এবং প্রশাসনিক ভবনসহ বেশ কয়েকটি যানবাহনে ভাঙচুর চালানো হয়।
সংঘর্ষের সূত্রপাত হয় রোববার রাত ৯টার দিকে আশুলিয়ার খাগান এলাকায়। স্থানীয়দের বরাতে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থীদের ভাড়া বাসা ‘ব্যাচেলর প্যারাডাইস হোস্টেল’-এর পাশে বসে ছিলেন সিটি ইউনিভার্সিটির কয়েকজন শিক্ষার্থী। তাঁদের মধ্যে একজন অসতর্কভাবে থুতু ফেললে তা মোটরসাইকেলযোগে যাচ্ছিলেন এমন এক ড্যাফোডিল শিক্ষার্থীর গায়ে লাগে। বিষয়টি নিয়ে কথাকাটাকাটির পর রাতেই দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।
পরে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী দেশি অস্ত্র ও ইটপাটকেল নিয়ে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীদের বাসায় হামলা চালায়। ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন এবং পাল্টা আক্রমণ চালান। উভয় পক্ষের মধ্যে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
এই সময় ড্যাফোডিলের প্রক্টরিয়াল টিম ঘটনাস্থলে পৌঁছে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রশাসনের সঙ্গে যোগাযোগ করে পরিস্থিতি শান্ত করার চেষ্টা করে। কিন্তু এর মধ্যেই উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এবং ড্যাফোডিলের শিক্ষার্থীরা সিটি ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে ঢুকে যান। তারা সেখানে তিনটি বাস, একটি প্রাইভেট কারে আগুন দেন এবং প্রশাসনিক ভবনে ভাঙচুর করেন।
ড্যাফোডিল ইউনিভার্সিটির এক্সটার্নাল অ্যাফেয়ার্সের পরিচালক সৈয়দ মিজানুর রহমান বলেন, “সন্ধ্যার ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি ছিল, ‘সরি’ বলার পর বিষয়টি মিটেও গিয়েছিল। কিন্তু পরে রাতের হামলা দুঃখজনক ও অগ্রহণযোগ্য।”
ড্যাফোডিলের প্রক্টর শেখ মুহাম্মদ আলী জানান, এখনো তাঁদের নয়জন শিক্ষার্থী সিটি ইউনিভার্সিটিতে আটকা রয়েছেন এবং দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন।
অন্যদিকে সিটি ইউনিভার্সিটির প্রক্টর অধ্যাপক আবু জায়েদ বলেন, “ঘটনার সূত্র কীভাবে হয়েছে তা নিশ্চিত নই। ছাত্রদের মারামারি থেকে ক্যাম্পাসে আগুন দেওয়া—এটি পরিকল্পিত ঘটনা বলে মনে হচ্ছে। আমাদের অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থীও আহত।”
দু’টি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন মধ্যরাতে আলোচনায় বসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সোমবার সকালেও ঘটনাস্থলে উত্তেজনা বিরাজ করছিল, তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সেখানে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে।
মন্তব্য করুন

