কক্সবাজার বিমানবন্দরের ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি স্থগিত করল অন্তর্বর্তী সরকার
ঘোষণার মাত্র ১১ দিনের মাথায় কক্সবাজার বিমানবন্দরকে ‘আন্তর্জাতিক’ স্বীকৃতি দেওয়ার প্রজ্ঞাপন স্থগিত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। শুক্রবার (২৪ অক্টোবর) এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন বেসামরিক বিমান চলাচল উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন। তিনি বলেন, “এ বিষয়ে একটি দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত হয়েছে।”
তবে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে লিখিত আদেশ বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) হাতে পৌঁছায়নি। বেবিচকের মেম্বার (এয়ার ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট) ও কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক ফ্লাইট উড্ডয়ন কমিটির সভাপতি এয়ার কমোডোর নূর-ই আলম বলেন, “বিষয়টি আমরা মৌখিকভাবে শুনেছি, তবে এখনও কোনো লিখিত চিঠি পাইনি।”
চলতি মাসের মাঝামাঝি কক্সবাজার বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ঘোষণা করে সরকার প্রজ্ঞাপন জারি করেছিল। ১২ অক্টোবর রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে সামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের সি–১ শাখার যুগ্মসচিব আহমেদ জামিল স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ‘দি সিভিল এভিয়েশন রুলস, ১৯৮৪’-এর রুল ১৬(১) অনুযায়ী কক্সবাজার বিমানবন্দরকে “কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর” হিসেবে ঘোষণা করা হলো, যা অবিলম্বে কার্যকর হবে।
ঘোষণার পর বেবিচক ও বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ জানিয়েছিল, শিগগিরই কক্সবাজার রুটে আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালু করা হবে এবং এ সংক্রান্ত প্রস্তুতিও প্রায় শেষ পর্যায়ে। কক্সবাজার বিমানবন্দরের পরিচালক গোলাম মুর্তজা হোসেন বলেন, “আন্তর্জাতিক ফ্লাইট পরিচালনার জন্য কাস্টমস ও ইমিগ্রেশন সুবিধা ইতোমধ্যে প্রস্তুত রয়েছে। কিছু কাজ বাকি থাকলেও অনুমোদন পাওয়ায় আশা করা হচ্ছিল এ মাসের মধ্যেই ফ্লাইট চালু হবে।”
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, বিমানবন্দরের রানওয়ে ৬,৭৯০ ফুট থেকে ৯,০০০ ফুটে সম্প্রসারিত করা হয়েছে এবং প্রস্থ বাড়ানো হয়েছে ১৫০ ফুট থেকে ২০০ ফুটে। রানওয়ের লোড ক্ষমতা বৃদ্ধি, ওয়াইড-বডি বিমান চলাচলের উপযোগিতা ও লাইটিং সিস্টেম আপগ্রেড-এর কাজও সম্পন্ন হচ্ছে।
এ ছাড়া নতুন আন্তর্জাতিক টার্মিনালের জন্য ১০,৯১২ বর্গফুট ভবন ও ৪৯,৭৫৩ বর্গফুট সংযোগ ট্যাক্সিওয়ে নির্মাণের কাজ চলছে।
বর্তমানে বাংলাদেশে তিনটি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর চালু আছে—ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর।
কক্সবাজার বিমানবন্দরের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি স্থগিতের সিদ্ধান্তে দেশের পর্যটন খাতের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই হতাশা প্রকাশ করেছেন। তারা আশা করছেন, অবকাঠামোগত উন্নয়ন সম্পন্ন হলে আবারও দ্রুত পূর্ণাঙ্গ আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চালুর অনুমোদন দেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন


