logo
  • শনিবার, ২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১০ কার্তিক ১৪৩২

৯ মাসে ছয়শ'র বেশি ধর্ষণ

অনলাইন ডেস্ক
  ০৩ অক্টোবর ২০২৫, ০৯:২৫
সংগ্রহীত

রাজধানীর ভাটারা থানা এলাকায় দিনদুপুরে এক শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গুরুতর আহত অবস্থায় শিশুটিকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান-স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়েছে।

শিশুটির বাবা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, “এলাকার এক খারাপ লোক ভয় দেহাইয়া আমার মাইয়াডারে সর্বনাশ করছে। আমি গরিব মানুষ, হোটেলে কাম করি। বউ বাসাবাড়িতে কাম করে। বড় মাইয়াডা ঘরে একা আছিলো। এই সুযোগে ওই লোক এই অপরাধ করছে। আমি হ্যার বিচার চাই।”

এমন মর্মান্তিক ঘটনা একটি নয়, দেশে নারী ও শিশু নির্যাতন উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে চলেছে। মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস সাপোর্ট সোসাইটির (এইচআরএসএস) পরিসংখ্যান অনুযায়ী, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৯ মাসে ৬৬৩ জন নারী ও শিশু ধর্ষণের শিকার হয়েছেন, এর মধ্যে শিশু রয়েছে ৩৯৭ জন। গড়ে প্রতিদিন দুজনের বেশি ধর্ষণের শিকার হচ্ছেন।

পুলিশ সদর দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, গত আট মাসে নারী ও শিশু নির্যাতনের ঘটনায় দেশের বিভিন্ন থানায় ১৫ হাজারের বেশি মামলা হয়েছে। গড়ে প্রতিদিন মামলা হয়েছে ৬০টিরও বেশি।

সম্প্রতি বিভিন্ন জেলায় একের পর এক ধর্ষণ ও হত্যার ঘটনা ঘটছে

ময়মনসিংহের হালুয়াঘাটে নবম শ্রেণির এক ছাত্রীকে ডেকে নিয়ে ধর্ষণ।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা।

চাঁদপুরে মানসিক ভারসাম্যহীন নারী ধর্ষণ।

গাজীপুরে নাট্যকর্মীকে দলবদ্ধ ধর্ষণ।


অপরাধ বিশ্লেষক ড. তৌহিদুল হক বলেন, “ধর্ষণের ঘটনায় দ্রুত বিচার না হওয়ায় অপরাধ বেড়ে যাচ্ছে। দীর্ঘসূত্রিতা ও তদন্ত প্রভাবিত করার সুযোগ থাকায় অপরাধীরা উৎসাহিত হচ্ছে।”

আইনজীবীরা বলছেন, অনেক ক্ষেত্রে তদন্ত কর্মকর্তারা প্রমাণ যথাযথভাবে উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হন। আবার বছরের পর বছর বিচার ঝুলে থাকায় ভুক্তভোগী পরিবার সামাজিক চাপের মুখে ভেঙে পড়ে।

মানবাধিকার সংগঠনগুলোর পরিসংখ্যান বলছে—

এইচআরএসএস: আট মাসে ১,৫২২ নারী ও শিশু নির্যাতনের শিকার, ২০ জন ধর্ষণের পর খুন, ৯ জন আত্মহত্যা।

মহিলা পরিষদ: শুধু আগস্ট মাসেই ২২৩ নারী-শিশু নির্যাতনের শিকার, এর মধ্যে ১১৫ জন ধর্ষণ ও হত্যার শিকার।

আসক: আট মাসে ৫২৭ ধর্ষণের ঘটনা, এর মধ্যে ২৬৬ শিশু, ২৬ জনকে হত্যা, ৬ জন আত্মহত্যা।

এমএসএফ: সেপ্টেম্বরে ৫৩টি ধর্ষণ, এর মধ্যে ১৩টি দলবদ্ধ ধর্ষণ।


এমন পরিস্থিতিতে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) প্রধান মো. মোস্তফা কামাল বলেন, “বিভিন্ন কারণে সমাজে ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে।”

অপরদিকে আইজিপি বাহারুল আলম জানিয়েছেন, “ধর্ষণসহ সব ধরনের অপরাধ নিয়ন্ত্রণে আমরা তৎপর রয়েছি।”

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12