জুলাই অভ্যুত্থানে ৩ লাখ গুলি ছোড়ে পুলিশ, ঢাকায় ৯৫ হাজার রাউন্ড

জুলাই মাসে গণঅভ্যুত্থান দমনে পুলিশের গুলিবর্ষণের ভয়াবহ তথ্য প্রকাশ পেয়েছে। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১–এ মানবতাবিরোধী অপরাধ মামলার শুনানিতে তদন্ত কর্মকর্তা ও ৫৪তম সাক্ষী মো. আলমগীর জানান, সারা দেশে পুলিশ ৩ লাখ ৫ হাজার ৩১১ রাউন্ড গুলি ছোড়ে। এর মধ্যে শুধু ঢাকায় ছোড়া হয় ৯৫ হাজার ৩১৩ রাউন্ড।
তিনি বলেন, পুলিশের সদর দপ্তরের ২১৫ পৃষ্ঠার প্রতিবেদনে এলএমজি, এসএমজি, চাইনিজ রাইফেল, শটগান, রিভলবার ও পিস্তলসহ নানা মারণাস্ত্র ব্যবহারের তথ্য পাওয়া গেছে। শুধু গুলি নয়, আন্দোলনকারীদের দমন করতে র্যাব সদর দপ্তরের হেলিকপ্টারও ব্যবহার করা হয়।
তদন্তে উঠে এসেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর হত্যা, নির্যাতন ও নিপীড়নের প্রমাণ। এছাড়া জাতীয় চক্ষুবিজ্ঞান হাসপাতাল, নিটোর ও বার্ন ইনস্টিটিউট থেকে আহতদের চিকিৎসা নথি এবং আঞ্জুমানে মফিদুল ইসলাম থেকে ৮১ জন অজ্ঞাত লাশের ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন সংগ্রহ করা হয়েছে।
আলমগীর আরও জানান, শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও সাবেক আইজি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন ২০২৪ সালের ১ জুলাই থেকে ৫ আগস্ট পর্যন্ত প্রাণঘাতী অস্ত্র ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছিলেন। এতে দেড় সহস্রাধিক মানুষ নিহত হন, হাজারো মানুষ আহত, অনেকে অঙ্গহানি, অপহরণ ও মিথ্যা মামলার শিকার হন। নিহতদের অনেকের লাশ পরিবারের কাছে না দিয়ে তড়িঘড়ি করে বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়।
এ সময় আন্দোলনকারী ছাত্রীদের ওপর যৌন নিপীড়নের ঘটনাও ঘটেছে বলে প্রসিকিউশন পক্ষ আদালতকে জানায়। তারা দাবি করেছে, ভিডিও ফুটেজ, অডিও ক্লিপ, জব্দ নথি, প্রত্যক্ষদর্শীর সাক্ষ্য ও শহীদ পরিবারের বিবৃতি মিলিয়ে মানবতাবিরোধী অপরাধের পূর্ণ চিত্র পাওয়া গেছে।
মন্তব্য করুন