ভারত-বাংলাদেশ বাণিজ্যে অশুল্ক বাধায় ২০% খরচ বেড়েছে

ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে পাল্টাপাল্টি অশুল্ক বাধার কারণে দুই দেশের বাণিজ্যের খরচ প্রায় ২০ শতাংশ বেড়ে গেছে। স্থলবন্দর দিয়ে পণ্য পরিবহণে সমস্যা সৃষ্টি হওয়ায় ব্যবসায়ীরা এখন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আমদানি এবং রপ্তানি করতে বাধ্য হচ্ছেন, যা সময় এবং খরচের দিক থেকে বেশ অস্বস্তিকর।
এ পরিস্থিতির মধ্যে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ভারতের কাছে আলোচনার অনুরোধ জানালেও এখনো কোনো জবাব পাওয়া যায়নি। বর্তমানে ভারত বাংলাদেশের জন্য পণ্য ও কাঁচামালের দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস, এবং দুই দেশের বাণিজ্য বছরে ১৫ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি।
অবশ্য, চলতি বছরের এপ্রিল মাসে ভারত বাংলাদেশি রপ্তানি পণ্যের জন্য ট্রান্সশিপমেন্ট সুবিধা স্থগিত করলে বাণিজ্যে সংকট শুরু হয়। এর পরই ভারত থেকে সুতা আমদানি স্থগিত করে দেয় বাংলাদেশ, এবং মে মাসে বেশ কিছু পণ্যের ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করে নয়াদিল্লি।
পাকিস্তানের তুলনায় ভারতের সঙ্গে ব্যবসার খরচ বেড়েছে উল্লেখযোগ্যভাবে, বিশেষ করে পোশাক শিল্পের ক্ষেত্রে। এ বিষয়ে এনার্জিপ্যাক ফ্যাশনস লিমিটেডের চেয়ারম্যান হুমায়ুন রশিদ বলেন, তার প্রতিষ্ঠান ভারতীয় বাজারে বছরে প্রায় ৭০ লাখ ডলারের পোশাক রপ্তানি করে, কিন্তু এখন চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পাঠানোর কারণে পরিবহন খরচ প্রায় ২০% বেড়েছে।
এদিকে, বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান জানান, অশুল্ক বাধার কারণে বাংলাদেশ-ভারত বাণিজ্যের খরচ বেড়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় পক্ষ কেন বৈঠকে আগ্রহী নয়, সেই বিষয়েও কিছু বলছে না।’
পোশাক রপ্তানিকারকরা বলছেন, স্থলবন্দর বন্ধ থাকার কারণে তাদের ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এক রপ্তানিকারক জানান, তার ভারতীয় অংশীদার ২০ লাখ ডলারের পোশাক আমদানি বন্ধ করে দিয়েছে এবং এখন তারা থাইল্যান্ড ও মালয়েশিয়া থেকে পণ্য সংগ্রহ করছে।
এছাড়া, ভারতের বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির যুগ্ম মহাসচিব মো. আবদুল ওয়াহেদ বলেন, গত এপ্রিল থেকে সীমান্তে চালু হওয়া পাল্টাপাল্টি পদক্ষেপগুলোর কারণে কিছু স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আমদানি ৫০ শতাংশ কমে গেছে।
এ পরিস্থিতি সত্ত্বেও চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি বেড়েছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের জানুয়ারি-আগস্ট সময়ে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ভারতে রপ্তানি আগের বছরের তুলনায় ১৩৯ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৩৮.২ মিলিয়ন ডলারে।
মন্তব্য করুন