জাতীয় চার নেতা ও বঙ্গবন্ধুসহ মুজিবনগর সরকারের সবাই মুক্তিযোদ্ধা

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতা— সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমেদ, মো. মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামান— মুক্তিযোদ্ধা হিসেবে স্বীকৃত বলে জানিয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফারুক ই আজম।
বুধবার (৪ জুন) এক বেসরকারি টেলিভিশনকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মুজিবনগর সরকারের সবাই মুক্তিযোদ্ধা, কেননা তারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্ব দিয়েছেন, যুদ্ধ পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছেন।
> “যারা সশস্ত্রভাবে যুদ্ধ করেছেন, যারা যুদ্ধ পরিচালনা করেছেন— তারা সবাই মুক্তিযোদ্ধা। গণমাধ্যমে ভুল ব্যাখ্যা এসেছে। তবে ওই সরকারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচিত হবেন,” — বলেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র, কূটনৈতিক প্রতিনিধিরা, এবং বিদেশে অবস্থান করে বিশ্বজনমত গঠনে অবদান রাখা পেশাজীবীরাও সহযোগী মুক্তিযোদ্ধা, তবে এর মানে এই নয় যে তাদের মর্যাদা হ্রাস পেয়েছে। সহযোগী ও সরাসরি মুক্তিযোদ্ধা— উভয় শ্রেণির মর্যাদা ও সরকারি সুবিধা সমান থাকবে বলেও জানান তিনি।
---
বীর মুক্তিযোদ্ধার নতুন সংজ্ঞা
মঙ্গলবার (৩ জুন) গভীর রাতে জাতীয় মুক্তিযোদ্ধা কাউন্সিল (জামুকা) আইনের সংশোধিত অধ্যাদেশ গেজেটে প্রকাশ করে সরকার। এতে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ — এ দুটি নতুন শ্রেণিতে মুক্তিযুদ্ধের অংশগ্রহণকারীদের শ্রেণিবিন্যাস করা হয়।
গেজেটে ‘বীর মুক্তিযোদ্ধা’ বলতে বোঝানো হয়েছে:
যারা ২৬ মার্চ থেকে ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সাল পর্যন্ত
দেশের ভিতরে প্রস্তুতি নিয়েছেন,
ভারতের প্রশিক্ষণকেন্দ্রে নাম অন্তর্ভুক্ত করে প্রশিক্ষণ নিয়েছেন,
সরাসরি পাকিস্তানি বাহিনী ও তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে সশস্ত্রভাবে যুদ্ধ করেছেন
কিংবা ই.পি.আর, পুলিশ, মুক্তি বাহিনী, মুজিবনগর সরকারের অন্তর্ভুক্ত স্বীকৃত বাহিনী, নৌ কমান্ডো, কিলো ফোর্স, আনসার সদস্য,
নির্যাতিত নারী (বীরাঙ্গনা),
এবং মুক্তিযুদ্ধকালীন ফিল্ড হাসপাতালের চিকিৎসাকর্মীরা।
‘মুক্তিযুদ্ধের সহযোগী’ হিসেবে বিবেচিত হবেন:
মুজিবনগর সরকারের অধীন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কূটনীতিক,
বিদেশে অবস্থান করে বিশ্বজনমত গঠনে সক্রিয় বাংলাদেশিরা,
স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পী-সাংবাদিকরা,
এবং স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের সদস্যরা।
---
“এটি বিতর্ক নয়, স্পষ্টীকরণ” — উপদেষ্টা ফারুক
ফারুক ই আজম বলেন, এই সংজ্ঞা নতুন নয়, বরং ১৯৭২ সালের মূল সংজ্ঞাকে বাস্তবায়ন করা হয়েছে। ২০১৮ ও ২০২২ সালে এই সংজ্ঞা সংশোধন করা হয়। তিনি জানান, কেউ যেন বিভ্রান্ত না হন, সে কারণে পুনরায় গেজেটে স্পষ্ট করা হয়েছে।
> “জাতিগতভাবে মুক্তিযুদ্ধ না হলে আমরা স্বাধীন হতাম না। আমাদের ইতিহাসে মুক্তিযুদ্ধের চেয়ে গৌরব আর কিছু নেই,” — মন্তব্য করেন ফারুক ই আজম।
মন্তব্য করুন