সীমান্তে তালেবান ও পাকিস্তানি বাহিনীর তীব্র গোলাগুলি

আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের সীমান্তে তালেবান ও পাকিস্তানি বাহিনীর মধ্যে ভারী গোলাগুলি হয়েছে। কাবুলে সাম্প্রতিক এক বিমান হামলার পর দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা তীব্র হয়েছে। আফগান প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইনায়াতুল্লাহ খোয়ারিজমি শনিবার রাতে বলেন, পাকিস্তানের “বারবার সীমান্ত লঙ্ঘন” ও বিমান হামলার জবাবে আফগান বাহিনী “সফল প্রতিশোধমূলক অভিযান” চালিয়েছে। তিনি জানান, অভিযানটি মধ্যরাতে শেষ হয়েছে।
পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নাকভি এই হামলাকে “অযৌক্তিক” বলে আখ্যা দিয়ে জানান, পাকিস্তান “প্রতিটি ইটের জবাবে পাথর” দিচ্ছে। তাঁর ভাষায়, “আফগান বাহিনীর বেসামরিক জনগণের ওপর হামলা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। পাকিস্তানের সাহসী বাহিনী দ্রুত ও কার্যকর জবাব দিয়েছে।”
রেডিও পাকিস্তান জানিয়েছে, আফগান বাহিনী অন্তত ছয়টি স্থানে হামলা চালায়। এতে পাকিস্তান সেনাবাহিনী তীব্র অষন্তোষ প্রকাশ করে। তারা গতকাল রাতে গোলাগুলির একটি ভিডিও প্রকাশ করে। তবে গোলাগুলি বন্ধের ব্যপারে এখন পর্যন্ত কোন তথ্য প্রকাশ করেনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী।
কাবুলের বিস্ফোরণই প্রতিবেশি দুই দেশের আপাত বৈরিতার কারণ। তালেবান সরকার প্রথম থেকেই এই ঘটনার জন্য পাকিস্তানেকে দায়ী করে আসছে। ইসলামাবাদ দায় স্বীকার না করলেও অভিযোগ করেছে যে, আফগান প্রশাসন পাকিস্তানি তালেবান যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে, যারা ভারতের সহায়তায় পাকিস্তানের বিভিন্ন স্থানে হামলা চালায়। বরাবরের মতই ভারত এই অভিযোগ অস্বীকার করেছে। তালেবান সরকার জানিয়েছে, অন্য কোন দেশের বিদ্রোহি গ্রুপকে তারা তাদের ভূখণ্ড ব্যবহার করতে দেবে না।
দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা বৃদ্ধিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে প্রতিবেশী ও আঞ্চলিক দেশগুলো।
ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলেন, “দুই দেশকে সংযম দেখাতে হবে। স্থিতিশীলতা রক্ষা আঞ্চলিক শান্তির জন্য অপরিহার্য।”
কাতার “গভীর উদ্বেগ” জানিয়ে বলেছে, এই উত্তেজনা এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার জন্য হুমকি হতে পারে। কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় উভয় পক্ষকে সংলাপ, কূটনীতি ও সংযমের পথে চলার আহ্বান জানিয়েছে।
সৌদি আরবও একই আহ্বান জানিয়েছে। তাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, “রাজ্য সংযম, উত্তেজনা এড়ানো এবং আলোচনার মাধ্যমে শান্তি প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানাচ্ছে।”
সৌদি আরব আরও জানিয়েছে, তারা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সব শান্তি উদ্যোগকে সমর্থন জানায় এবং পাকিস্তান ও আফগান জনগণের স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।
মন্তব্য করুন