২০২৬ বিশ্বকাপে কি দেখা যাবে ‘পার্পল’ ও ‘ব্লু’ কার্ড

ফুটবলে সঠিক সিদ্ধান্ত নিশ্চিত করতে ২০১৬ সালে চালু হয়েছিল ভিডিও অ্যাসিস্ট্যান্ট রেফারি বা ভিএআর। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপের মাধ্যমে ফুটবল আনুষ্ঠানিকভাবে প্রবেশ করে ভিএআর যুগে। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই প্রযুক্তি নিয়ে বিতর্কও বেড়েছে। অনেক কোচ ও খেলোয়াড় অভিযোগ করেছেন, ভিএআর ফুটবলের স্বাভাবিক সৌন্দর্য নষ্ট করছে এবং ম্যাচের সময়ও নষ্ট হচ্ছে।
এই অবস্থায় ভিএআরের বিকল্প হিসেবে আসছে নতুন প্রযুক্তি ‘ফুটবল ভিডিও সাপোর্ট’ (এফভিএস)। এখানে ব্যবহৃত হবে দুটি বিশেষ কার্ড—‘পার্পল’ ও ‘ব্লু’। চলমান অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপে মরোক্কো ও ফ্রান্সের সেমিফাইনালে প্রথমবার এই কার্ড ব্যবহৃত হয়েছে। সেই ম্যাচে মরোক্কোর কোচ মোহাম্মদ ওয়াহবি রেফারির সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করতে নীল কার্ড তুলেছিলেন, যদিও রিভিউ শেষে সিদ্ধান্ত অপরিবর্তিত থাকে।
বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ফিফা পরীক্ষামূলকভাবে এফভিএস চালু করেছে, যাতে টেনিস ও ক্রিকেটের মতো কোচরাও রিভিউ নেওয়ার সুযোগ পান। প্রতিটি ম্যাচের শুরুতে কোচদের দেওয়া হবে দুটি কার্ড—একটি ‘পার্পল’ ও একটি ‘ব্লু’। একজন কোচ সর্বোচ্চ দুইবার রিভিউ চাইতে পারবেন। যদি সিদ্ধান্ত পরিবর্তিত হয়, তবে সেই কার্ড পুনরায় ব্যবহারযোগ্য থাকবে; না হলে তা বাতিল হয়ে যাবে।
কার্ড ব্যবহারের প্রক্রিয়াটিও বিশেষ ধাঁচের। রিভিউ চাইতে হলে কোচকে আঙুল ঘুরিয়ে বৃত্তাকারে ইশারা দিতে হবে, যা দেখে চতুর্থ রেফারি বুঝবেন তিনি রিভিউ চান। এরপর কোচ তার কার্ডটি হস্তান্তর করবেন, এবং সঙ্গে সঙ্গেই ঘটনাটির আনুষ্ঠানিক পর্যালোচনা শুরু হবে।
ভিএআর-এর তুলনায় এফভিএস পদ্ধতি কম ব্যয়বহুল, সহজ এবং স্থিতিশীল। ইতিমধ্যে ইতালির সিরি সি, স্পেনের প্রিমেরা ফেদেরাসিওন, এবং ব্রাজিল ও ইতালির নারী লিগে এর ট্রায়াল চলছে।
ফিফা রেফারি কমিটির চেয়ারম্যান পিয়েরলুইগি কলিনা জানিয়েছেন, প্রাথমিক ফলাফল আশাব্যঞ্জক। কাতার ও মরোক্কোতে আসন্ন অনূর্ধ্ব-১৭ বিশ্বকাপেও এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হবে। ট্রায়ালে যদি এফভিএস ভিএআরের চেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য প্রমাণিত হয়, তাহলে ২০২৬ সালের বিশ্বকাপে ফুটবলে দেখা যেতে পারে নতুন ‘পার্পল’ ও ‘ব্লু’ কার্ডের যুগ।
মন্তব্য করুন