আওয়ামী লীগ নেতার ছেলের বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলা

চট্টগ্রামের অবস্থিত নৌবাহিনীর একটি কনভেনশন সেন্টারে বিয়ের অনুষ্ঠানে হামলার ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেতা ফখরুল আনোয়ারকে আটক করেছে পুলিশ। হামলার সময় অতিথিদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে, এবং কয়েকজন নারী অতিথি হেনস্থার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।
শনিবার রাতে নগরীর টাইগারপাস এলাকার নেভি কনভেনশন সেন্টারে এই বিয়ের অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হয়। বরের পিতা ফখরুল আনোয়ার চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ক সম্পাদক। তিনি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির সাবেক সংসদ সদস্য রফিকুল আনোয়ারের ভাই এবং সাবেক এমপি খাদিজাতুল আনোয়ার সনির চাচা।
সাক্ষী ও বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা গেছে, রাত এগারোটার দিকে একদল ব্যক্তি কনভেনশন সেন্টারের সামনে জড়ো হয়ে স্লোগান দিতে শুরু করেন। এরপর তারা ভেতরে ঢুকে তাণ্ডব চালান, যা অনুষ্ঠানে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করে। এ সময় বিয়ের অতিথিরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, হামলার সময় বরের পিতা ফখরুল আনোয়ারকেও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা হয়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ ও নৌবাহিনীর সদস্যরা দ্রুত সেখানে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। কিছু হামলাকারী আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে লাঠিপেটার শিকার হন।
চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের ডিসি (নর্থ) ফয়সাল আহম্মেদ জানিয়েছেন, ফখরুল আনোয়ারের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি মামলা রয়েছে এবং তাকে সেই মামলার ভিত্তিতেই আটক করা হয়েছে। তবে মামলার বিস্তারিত সম্পর্কে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানানো হয়নি।
এ ঘটনায় সামাজিক মাধ্যমে ভিন্ন ভিন্ন প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। এক পক্ষ বলছে, বিয়ের অনুষ্ঠানে পরিকল্পিতভাবে হামলা হয়েছে, অন্যদিকে, আরেক পক্ষ দাবি করছে, হামলাকারীদের প্রতিহত করতে যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা যৌক্তিক ছিল।
‘মব’ আক্রমণের প্রবণতা
বাংলাদেশে দলবদ্ধ হামলার ঘটনা নতুন নয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সাম্প্রতিক সময়ে এ ধরনের ঘটনা উদ্বেগজনকভাবে বেড়ে গেছে। বিভিন্ন জায়গায় সংঘবদ্ধভাবে আক্রমণের কারণে ‘মব জাস্টিস’ বা ‘গণপ্রহারের’ ঘটনা আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে।
সরকার ইতোমধ্যে এ ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়ার কথা জানিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের এক মুখপাত্র বলেন, “আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। আইন নিজের হাতে তুলে নেওয়ার সুযোগ নেই।”
হামলার ঘটনায় তদন্ত চলছে এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। তবে হামলাকারীদের পরিচয় ও হামলার প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে এখনো বিস্তারিত জানা যায়নি।
মন্তব্য করুন