ইরাকে মানদালির সংরক্ষণ কেন্দ্রে ৪০০ গাজেল নিখোঁজ

ইরাকের দিয়ালা প্রদেশের মানদালি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র থেকে প্রায় ৪০০ গাজেল রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয়ে যাওয়ায় দেশজুড়ে তীব্র বিতর্ক ও উদ্বেগ তৈরি হয়েছে। এ ঘটনায় ইতোমধ্যে তদন্ত শুরু করেছে সরকার।
রবিবার (২৯ জুন) শাফাক নিউজকে দেওয়া এক বিবৃতিতে মানদালি জেলার প্রশাসক আলি ধামাদ আল-জুহাইরি জানান, এত বিপুলসংখ্যক গাজেলের একসঙ্গে নিখোঁজ হওয়ার পেছনে অনাহারের চেয়ে চুরি বা পাচারের সম্ভাবনাই বেশি। তিনি বলেন, “আমরা বিষয়টি নিয়ে সরকারের উচ্চপর্যায়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। তদন্ত চলছে। যারা দায়ী, তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে।”
তবে এই ঘটনার দায় অস্বীকার করেছে দিয়ালা প্রদেশের কৃষি বিভাগ। তাদের দাবি, ২০১৯ সালেই মানদালি সংরক্ষিত অঞ্চলটি বন ও মরুকরণ অধিদপ্তরের হাতে হস্তান্তর করা হয়েছিল।
স্থানীয় প্রশাসনের আশঙ্কা, এটি একটি সংগঠিত চোরাচালান চক্রের কাজ হতে পারে। সম্প্রতি ইরাকে সংরক্ষিত এলাকা থেকেও বন্যপ্রাণী পাচার উদ্বেগজনক হারে বাড়ছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, গাজেল নিখোঁজ হওয়ার এ ঘটনা বিচ্ছিন্ন নয়। ২০০৩ সালে যুক্তরাষ্ট্র-নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের পর আল-আনবার মরুভূমি, আল-মুথান্না স্টেপ এবং দিয়ালার বনাঞ্চলে এই প্রজাতির গাজেলদের ওপর শিকার ও হত্যার হার বেড়েই চলেছে। এর ফলে এই হরিণ-জাতীয় প্রজাতি এখন বিলুপ্তির মুখে দাঁড়িয়ে।
এর আগে আল-মুথান্না প্রদেশের সাওয়া সংরক্ষণ কেন্দ্রে অনাহারে আক্রান্ত গাজেলদের একটি অংশ বিক্রি করে বাকিদের খাবারের ব্যবস্থা করতে বাধ্য হয়েছিল কর্তৃপক্ষ।
পরিবেশবাদীরা বলছেন, মানদালির মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ সংরক্ষণ কেন্দ্রে এত বড় প্রাণীসংকট কেবল অবহেলার ফল। দুর্বল ব্যবস্থাপনা, দায়িত্ব এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা এবং প্রাণী পাচারের বিরুদ্ধে যথাযথ নজরদারি না থাকায় সংকট আরও গভীর হচ্ছে।
তাদের মতে, দ্রুত তদন্ত ও কার্যকর পদক্ষেপ না নিলে শুধু মানদালিই নয়, বরং ইরাকের সামগ্রিক বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ব্যবস্থাই চরম হুমকির মুখে পড়বে।
উল্লেখ্য, গাজেল হলো হরিণের একটি বিশেষ প্রজাতি, যা গাজেলাদের অন্তর্ভুক্ত। মধ্যপ্রাচ্য ও আফ্রিকার মরুভূমি অঞ্চলে এটি দেখা যায়, এবং এটি দ্রুতগামী, তীক্ষ্ণ দৃষ্টিসম্পন্ন ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
মন্তব্য করুন