ফলমেলার লুটপাট নিয়ে টকশোতে আব্দুন নূর তুষার

সম্প্রতি একটি টক শোতে ফলমেলার শেষ দিনে সংঘটিত লুটপাটের ভিডিও নিয়ে তীব্র আলোচনা হয়। এতে অংশ নেন জনপ্রিয় উপস্থাপক ও গণমাধ্যম ব্যক্তিত্ব আব্দুন নূর তুষার এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) কোষাধ্যক্ষ ও যুগ্ম সদস্যসচিব সাইফ মোস্তাফিজ।
আব্দুন নূর তুষার বলেন, “গণমানুষের নৈতিকতা তৈরি হয় সমাজে বিরাজমান পরিস্থিতির ওপর ভিত্তি করে।” তিনি স্মরণ করিয়ে দেন, ‘বাটার’ দোকানে ঢুকে জুতা লুটপাটের ঘটনার মতো বাংলাদেশেও গণলুটপাটের সংস্কৃতি গড়ে উঠছে, কারণ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেয় না—শুধু বাঁশি বাজায়।
তিনি বলেন, “এক টাকা লুট করলেও লুট, এক কোটি টাকা লুট করলেও লুট। বিষয়টা হলো চুরি অপরাধ, তার পরিমাণ নয়।” উদাহরণ টেনে বলেন, “৩১ পেয়ে যেমন কেউ ফেল করে, শূন্য পেয়ে ফেল করলেও সেই একই অবস্থান। দুজনই ফেল।”
তুষার আরও বলেন, “ফলমেলাতে যারা লুট করেছেন তাদের অনেকে ৫০০ টাকার ফল নিতে লোভ সামলাতে পারেননি, অথচ তারা ৬০০-১০০০ টাকা ভাড়া দিয়ে সেখানে গিয়েছেন। পাঞ্জাবি পরে, টুপি পরে, বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনই এই লুটপাটে অংশ নিয়েছেন। এটি জাতির নৈতিক অবক্ষয়ের প্রতিফলন। এই লজ্জা আমাদের ভবিষ্যতের তরুণ নেতৃত্বকে কলুষিত করছে।”
তিনি কড়া ভাষায় বলেন, “যদি ওই সময় ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হতো, তাহলে হয়তো এই ধরনের লুটপাট ভবিষ্যতে বন্ধ হতো।” পাশাপাশি নৈতিকতার বিকাশে "বিহেভিয়ারাল চেঞ্জ কমিউনিকেশন" দরকার বলেও মত দেন তিনি।
এনসিপি নেতা সাইফ মোস্তাফিজ বলেন, “এই পরিস্থিতির জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীসহ আমাদের সবারই সম্মিলিত ব্যর্থতা আছে।” তিনি যোগ করেন, “আগে শিশু-কিশোরদের জন্য আলাদা প্রোগ্রাম থাকত, ডিবেট শো থাকত। কিন্তু বর্তমানে দলকেন্দ্রিক সংস্কৃতির কারণে সেসব হারিয়ে গেছে। তরুণরা মেধা ও মনস্তত্ত্বের বিকাশের সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “সাম্প্রতিক প্রজন্মের তরুণদের জন্য নতুন করে শিল্প, সাহিত্য ও সংস্কৃতিমূলক কনটেন্ট তৈরি করতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোতেও পরিবর্তন আনা জরুরি, যাতে তারা একটি নৈতিক ও মানবিক সমাজ গঠনে ভূমিকা রাখে।”
মন্তব্য করুন