logo
  • সোমবার, ৩০ জুন ২০২৫, ১৬ আষাঢ় ১৪৩২

শিরোনাম

  •     ১৯৪৭ থেকে আজ পর্যন্ত কারও কষ্টের জন্য বিনা শর্তে ক্ষমাপ্রার্থী” — টকশোতে জামায়াত আমির ডা. শফিকুর রহমান
  •     আমীর খসরু নির্বাচনের দিকেই এগিয়ে যাচ্ছি
  •     ছলছুতোয় রাজধানীর সড়ক অবরোধ করলেই অ্যাকশন
  •     ‘যুদ্ধের ইতি আমরাই টানব’ - ট্রাম্পকে কড়া হুশিয়ারি ইরানের
  •     ইসরায়েলকে হামলা বন্ধ করতে বলবেন না ট্রাম্প

হাঙ্গেরিতে সমকামিদের বিশাল জমায়েত, যে বার্তা দেওয়া হলো প্রধানমন্ত্রীকে

অনলাইন ডেস্ক
  ২৯ জুন ২০২৫, ১১:১৫
সংগ্রহীত

হাঙ্গেরির রাজধানী বুদাপেস্টের রাস্তাজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিলো উৎসবের রঙ। প্রচণ্ড গরমের মধ্যেও দ্যা এলিজাবেথ ব্রিজ, দানিয়ুব নদীর দুই পাড় ও শহরের অলিগলিতে জমজমাট হয়ে উঠেছিলো প্রাইড র‍্যালি। বুদা থেকে পেস্ট—এই বিশ মিনিটের পথ পার করতে প্রায় তিন ঘণ্টা সময় লেগেছে এক থেকে দুই লাখ অংশগ্রহণকারীর, যাদের বেশিরভাগই তরুণ।

প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও এ আয়োজন অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরং তার এই নিষেধাজ্ঞাই অনেককে র‍্যালিতে অংশ নিতে উৎসাহিত করেছে বলে জানিয়েছেন অংশগ্রহণকারীরা। উল্লেখযোগ্য যে, গত বছর এই আয়োজনে অংশ নিয়েছিলেন মাত্র ৩৫ হাজার মানুষ।

র‍্যালিতে অনেকের হাতে ছিলো ব্যঙ্গাত্মক ব্যানার ও পোস্টার, যেখানে প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ করে লেখা ছিলো—"একটি স্বৈরাচারকে কিভাবে চিনতে হয়, তা সম্পর্কে আমি আমার ইতিহাস ক্লাসে অনেক জেনেছি। তোমাকে আর প্রমাণ দিতে হবে না-ভিক।" কেউ কেউ অরবানের ছবিকে উচ্চ আইশ্যাডো ও লিপস্টিকে সাজিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

এ বছরের প্রাইড মূলত পরিণত হয়েছে মানবাধিকার ও সংহতির এক শান্তিপূর্ণ উদযাপনে। বুদাপেস্ট টেকনিক্যাল ইউনিভার্সিটির সামনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে শহরের মেয়র জার্গেলি কারাকসনি বলেন, "আমাদের বার্তা পরিষ্কার—আমাদের ওপর তাদের কোনো ক্ষমতা নেই। আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বড় আয়োজনে একতাবদ্ধ হতে চেয়েছিলাম।"

প্রাইডে অংশ নেওয়া লি অ্যান্ডারসন বলেন, “আমরা এখানে কেবল নিজেদের জন্য আসিনি—এটা মৌলিক অধিকারের প্রশ্ন, যা সবার জন্য প্রযোজ্য।”

প্রধানমন্ত্রী অরবানের সংখ্যাগরিষ্ঠ দলের পাশ করা এক আইনের ভিত্তিতে শিশুদের দেখার উপযোগী স্থানে সমকামিতার ‘প্রচার’ নিষিদ্ধ করা হয়, যার কারণ দেখিয়ে পুলিশ র‍্যালিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়। তবে মেয়র কাউন্সিলের মাধ্যমে ভিন্ন আইনের ব্যাখ্যা ব্যবহার করে অনুষ্ঠান আয়োজন করেন।

প্রধানমন্ত্রী নিজে তখন শহরের আরেক প্রান্তে নতুন পুলিশ ও কাস্টমস অফিসারদের স্নাতক সমাপনীতে অংশ নিচ্ছিলেন। সেখানে তিনি বলেন, "কোনো অর্ডার নিজে নিজে আসে না। এটি তৈরি করতে হয়। কারণ এটি ছাড়া সভ্য জীবন হারিয়ে যায়।"

এর আগে প্রধানমন্ত্রী ও তার দলীয় নেতারা পরিবারের ছবি পোস্ট করে রক্ষণশীল মূল্যবোধের বার্তা ছড়ানোর চেষ্টা করেন। এক নেত্রী লিখেছিলেন, "একটি ছবি পোস্ট করে তাদের দেখিয়ে দিন আমরা কী নিয়ে গর্বিত।"

র‍্যালিতে পুলিশের উপস্থিতি ছিলো সংযত, তবে নজরদারির ঘাটতি ছিলো না। বিভিন্ন পয়েন্টে অস্থায়ী ক্যামেরা বসানো হয়। মার্চে পাস হওয়া নতুন আইন অনুযায়ী পুলিশ এখন ফেসিয়াল রিকগনিশন সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারছে এবং এ ধরনের আয়োজনে অংশ নিলে ১৪ থেকে ৪৩০ ডলার পর্যন্ত জরিমানা করা যেতে পারে।

সরকারঘনিষ্ঠ বিশ্লেষক জলটান কিসজেলি বলেন, “বিষয়টি আদালত পর্যন্ত গড়াতে পারে। যদি আদালত মেয়র ও আয়োজকদের পক্ষে রায় দেয়, তবে প্রধানমন্ত্রী আইন পরিবর্তনের কথাও বিবেচনা করতে পারেন।”

এই শান্তিপূর্ণ প্রাইড র‍্যালি যেন হাঙ্গেরির রক্ষণশীল শাসনের বিরুদ্ধে এক উদ্যমী প্রজন্মের স্পষ্ট ও সাহসী বার্তা হয়ে উঠেছে।

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়
12