হত্যার গুজব উড়িয়ে জনসমাবেশে ইরানি কুদস ফোর্স প্রধান ক্বানি, যুদ্ধবিরতির মধ্যেও উত্তেজনা তুঙ্গে

সম্প্রতি তেহরানের একটি জনসমাবেশে প্রকাশ্যে উপস্থিত হয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে এসেছেন ইসলামিক রেভল্যুশনারি গার্ড কোরসের (আইআরজিসি) প্রভাবশালী কুদস ফোর্স প্রধান ইসমাইল ক্বানি। তার উপস্থিতির ছবি ও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে ইরানের রাষ্ট্রীয় এবং মিত্র গোষ্ঠীভুক্ত মিডিয়ায়, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হুতি-সমর্থিত আল মাসিরাহ টিভি ও আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম আলজাজিরা।
ইসমাইল ক্বানির এই প্রকাশ্য উপস্থিতি তার মৃত্যুর গুজবের সম্পূর্ণ প্রতিবাদ হিসেবে দাঁড়িয়েছে। এর আগে কিছু সূত্র দাবি করেছিল, সাম্প্রতিক ইসরায়েলি হামলায় ক্বানি নিহত হয়েছেন। তবে সমাবেশে তার সরাসরি অংশগ্রহণ এসব গুজব সম্পূর্ণরূপে নাকচ করে দিয়েছে।
২০২০ সালে মার্কিন ড্রোন হামলায় কাসেম সোলাইমানি নিহত হওয়ার পর ইসমাইল ক্বানি কুদস ফোর্সের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ক্বানির জীবিত ও সক্রিয় উপস্থিতি ইঙ্গিত দিচ্ছে, আঞ্চলিক উত্তেজনার মাঝেও ইরানের সামরিক কাঠামো এখনো দৃঢ় ও সংগঠিত রয়েছে।
এদিকে, ইরান ও ইসরায়েলের মধ্যকার সাম্প্রতিক সংঘর্ষের পর এক অনিশ্চিত যুদ্ধবিরতি কার্যকর হলেও উত্তেজনা এখনও অব্যাহত রয়েছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শান্ত থাকার আহ্বান জানালেও উভয় পক্ষ থেকে পাল্টাপাল্টি প্রতিক্রিয়া দেখা যাচ্ছে। ট্রাম্প একপর্যায়ে ইসরায়েলের “অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়ার” সমালোচনাও করেন।
সোমবার, ইরান কাতারে অবস্থিত একটি মার্কিন সামরিক ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায়। তেহরান একে ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্রের যৌথ পারমাণবিক স্থাপনায় হামলার প্রতিক্রিয়া হিসেবে ব্যাখ্যা করেছে। ইরানের শীর্ষ নিরাপত্তা পরিষদ হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছে, ইসরায়েল যদি হামলা অব্যাহত রাখে, তবে তার উপযুক্ত এবং কঠোর জবাব দেওয়া হবে।
ইরানের তথ্য অনুযায়ী, ১৩ জুন থেকে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত দেশটিতে ৬০০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন, যার মধ্যে ১৩ শিশু রয়েছে। আহত হয়েছেন অন্তত ৩ হাজার। পাল্টা প্রতিরোধে ইসরায়েলেও প্রাণহানি হয়েছে; ইরানের দাবি অনুযায়ী, এখন পর্যন্ত অন্তত ২৮ জন ইসরায়েলি নিহত হয়েছেন।
পরিস্থিতি স্থিতিশীল মনে হলেও যুদ্ধবিরতির ভেতর জমে থাকা ক্ষোভ ও সামরিক শক্তির প্রদর্শন আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য একটি বড় উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বলে মত বিশ্লেষকদের।
মন্তব্য করুন